দাঁতের ব্যথায় করনীয় এবং ঘরোয়া টোটকা

দাঁতের ব্যথায়
দাঁতে ব্যথা কমন সমস্যা হলেও তবে এটি খুব অসহনীয়। দাঁতের ব্যথা যে কোনো বয়সেই হতে পারে। অনেক সময় দাঁতের ব্যথার কারণে মুখেও ফোলাভাব দেখা দেয়। এমনকি মাথা ব্যথাও হতে পারে।

বিশেষজ্ঞদের মতে, দাঁতে ব্যথা হলে সঙ্গে সঙ্গে পেইন কিলার বা অ্যান্টিবায়োটিক ওষুধ সেবন না করে ঘরোয়া উপায় অবলম্বন করা উচিত। তবে গুরুত্বর ব্যথা হলে অবশ্যই ডাক্তারের কাছে যেতে হবে। এখানে দাঁতের ব্যথায় করনীয় এবং কিছু সহজ ঘরোয়া টোটকা রইল যা আপনাদের দাঁতে ব্যথা থেকে মুক্তি দিতে সহায়তা করতে পারে।

দাঁতের ব্যথা কি

দাঁতের ব্যথা কি (What is Toothache)

দাঁতের ব্যথা বলতে দাঁত এবং চোয়ালের আশেপাশে ব্যথা বোঝায় এবং এটি দাঁতের ক্ষয় বা দাঁতের ক্ষয়ের অন্যতম সাধারণ লক্ষণ। গুরুতর দাঁতের ব্যথা নিজে থেকে ভালো হয় না চিকিৎসার প্রয়োজন।
দাঁতের ব্যথার কারণ

দাঁতের ব্যথার কারণ (Causes of Toothache)

বিভিন্ন কারণে দাঁতে ব্যথা হয়। যেমন-

  • দাঁতের যত্ন না নিলে দাঁতে পোকা হওয়ার ভয় থাকে। এতে দাঁতে ক্যাভিটিহয়। এর ফলে দাঁতে ব্যথা হয়।
  • সঠিকভাবে দাঁত পরিষ্কার না করার কারণে মাড়ি দুর্বল হয়ে যেতে পারে। এতে দাঁতে ব্যথা হয়।
  • বেশি মিষ্টি খেলেও দাঁতের ব্যথা হয়।
  • ব্যাকটেরিয়ার সংক্রমণে দাঁতে ব্যথা হয়।
  • ক্যালসিয়ামের অভাবে দাঁত দুর্বল হয়ে পড়ে, যার কারণে দাঁতে ব্যথা হয়।

Read more: ঘরোয়া পদ্ধতিতে পেটে ব্যথা কমানোর উপায়
Read more: ঘরোয়া পদ্ধতিতে চুল পড়া বন্ধ করার উপায়

দাঁতের ব্যথায় করনীয় ও ঘরোয়া টোটকা (What to do with toothache)

লবণ জল কুলকুচিঃ

১। লবণ জল কুলকুচিঃ

দাঁতের ব্যথায় করনীয় হল লবণ জল। যাদের মাড়ির সমস্যার জন্য দাঁতে ব্যথা হয়, তারা দিনে দু’বেলা হালকা গরম জলে লবণ দিয়ে কুলকুচি করা উচিত। এতে মাড়ি সুস্থ থাকে।

Read more: কিসমিসের উপকারিতা: শরীর সুস্থ রাখতে নিয়মিত কিসমিস

সারকথাঃ
দাঁতের মাড়ির সমস্যা অন্য়তম কার্যকারি ঔষধ লবণ জল । মাড়ির রক্ত পড়ার পাশাপাশি মাড়ির ফোলা ভাব কমায়।

Read more:স্বাস্থ্যের জন্য মেথির উপকারিতা আপনার জানা উচিত
Read more: জেনে রাখুন আশ্চর্যজনক ১০ টি গাজরের উপকারিতা

রসুন

২।  রসুন (Garlic)

রসুনেঅ্যালিসিন নামক একটি যৌগ রয়েছে, যার অ্যান্টিব্যাকটেরিয়াল এবং অ্যান্টিমাইক্রোবিয়াল বৈশিষ্ট্য রয়েছে যা প্রাকৃতিক এজেন্টের কাজ করে পাশাপাশি এটি দাঁতের ব্যথা দূর করে। দাঁতে ব্যথা হলে রসুন চিবিয়ে খান।

Read more: রইল ডায়াবেটিস রোগীদের জন্য স্বাস্থ্য টিপস
Read more:১০ টি ভিটামিন ই সমৃদ্ধ পুষ্টিকর খাবার তালিকা

লবঙ্গ

৩। লবঙ্গ (Cloves)

লবঙ্গ রান্নাঘরের একটি প্রয়োজনীয় মশলা। তবে এটি দাঁতে ব্যথার জন্য কার্যকর উপাদান। লবঙ্গে রয়েছে অ্যান্টি ইনফ্লেমেটরি উপাদান। যা দাঁত ও মাড়ির সংক্রমণের বিরুদ্ধে লড়াই করতে সাহায্য করতে পারে।

Read more:চর্মরোগ | একজিমা কি, লক্ষণ এবং ঘরোয়া চিকিৎসা

মাড়ি সমস্যা থেকে মুক্তি পেতে ২-৩ টে লবঙ্গ মুখে নিয়ে চেবান অথবা লবঙ্গ তেলে একটি ছোট তুলোর বলে ভিজিয়ে ব্যথা জায়গায় লাগিয়ে রাখলে আরাম পাবেন।

Read more:  অ্যাভোকাডো : স্বাস্থ্যের জন্য অ্যাভোকাডোর উপকারিতা
Read more: স্বাস্থ্যের জন্য মসুর ডাল খাওয়ার উপকারিতা

পেঁয়াজ

৪। পেঁয়াজ (Onion)

পেঁয়াজ অ্যান্টিব্যাকটেরিয়াল এবং অ্যান্টিসেপটিক প্রকৃতির এবং দাঁতের ব্যথা নিয়ন্ত্রণে দারুণ সহায়ক। দাঁতের ব্যথায় করনীয় ঘরোয়া প্রতিকারগুলির মধ্যে পেঁয়াজএকটি উপাদান যা সংক্রমণ ঘটানো জীবাণুকে মেরে ব্যথা থেকে মুক্তি দিতে পারে।

Read more: মেডিটেশন কি এবং কীভাবে করবেন
Read more: ভিটামিন ই ক্যাপসুল: ত্বকের জন্য ভিটামিন ই ক্যাপসুল

পেঁয়াজের টুকরো নিয়ে ব্যথা জায়গায় রেখে দিন অথবা পেঁয়াজের মধ্যে কামড় দিয়ে ১০ মিনিটের জন্য দাঁতের মধ্যে চেপে রাখুন। তারপর জল দিয়ে মুখ ধুয়ে ফেলুন। এইভাবে 2-3 সপ্তাহের জন্য দিনে অন্তত একবার করলে ব্যথা থেকে মুক্তি পেতে পারেন।

Read more:চুল পাকার কারণ এবং চুল পাকা থেকে মুক্তির উপায়
Read more: সবুজ আপেলের উপকারিতা জেনে নিন

পেয়ারা

৫। পেয়ারা পাতা (Guava

আমরা সকলেই জানি পেয়ারা পাতা আমাদের দাঁতের জন্য উপকারী। প্রাচীনকাল থেকে দাঁতের চিকিৎসায় এই গাছের পাতা ব্যবহার করা হয়। পেয়ারার পাতায় অ্যান্টি-ব্যাকটেরিয়াল গুণ রয়েছে, যা দাঁতের ব্যথায় তাৎক্ষণিক উপশম দিতে সহায়তা করে।

Read more: স্বাস্থ্যের জন্য পুদিনা পাতার উপকারিতা

দাঁতে ব্যথা হলে পেয়ারা গাছের পাতা জলে সিদ্ধ করে নিন এবং জলে লবণ মিশিয়ে কুলকুচি করুন, আরাম পাবেন।

Read more: অ্যাভোকাডো : স্বাস্থ্যের জন্য অ্যাভোকাডোর উপকারিতা
Read more:৭ টি ঘরোয়া পদ্ধতিতে মেছতা দূর করার উপায়

নিম

৬। নিম (Neem)

নিমপাতার ঔষধিগুন সবচেয়ে বেশি। শরীরের ইনফেকশন দূর করতে সহায়তা করে নিমপাতা। বিশেষ করে দাঁত এবং মাড়ি জন্য নিমপাতা অসাধারণ। যে কারণে আগে নিমের দাঁতন ব্যবহার করা হত।

Read more: ৮ টি কালমেঘ পাতার উপকারিতা ও গুণাগুণ

নিম ক্যাভিটির চিকিৎসার জন্য একটি জনপ্রিয় প্রতিকার। কারণ নিমে অ্যান্টি ব্যাকটেরিয়াল গুন থাকার কারণে দাঁতে জমে থাকা ব্যাকটেরিয়া দূর কর দাঁত ক্যাভিটি মুক্ত রাখে। এছাড়াও এটি দাঁত এবং মাড়ি সুস্থও রাখে।

Read more: চুলের যত্নে ৫ টি জবা ফুলের উপকারিতা
Read more: কালোজিরার উপকারিতাঃ কালোজিরার আশ্চর্যজনক উপকারিতা

যাদের ক্যাভিটির সমস্যা রয়েছে, তারা দাঁতে নিয়মিত নিমপাতা ঘসে কিছুক্ষণ পর হালকা উষ্ণ লবণ জলে কুলকুচি করুণ। কিছুদিনের মধ্যেই ক্যাভিটি দূর হবে। এছাড়াও আপনি ব্রাশ করার জন্য নিমের ডাল ব্যবহার করতে পারেন।

Read more:এই খাবারগুলি শরীরে ভিটামিন বি ১২ অভাব পূরণ করবে
Read more: ১০ টি ঘরোয়া পদ্ধতিতে মুখের কালো দাগ দূর করার উপায়

অ্যালোভেরা

৭। অ্যালোভেরা (Aloe vera)

অ্যালোভেরাস্বাস্থ্যের পাশাপাশি মাড়ির সুরক্ষায়ও কার্যকারি। অ্যালোভেরা জেলে অ্যান্টি ইনফ্লামেটোরি ও অ্যান্টি ব্য়াকটেরিয়াল বৈশিষ্ট্য রয়েছে, যা মাড়ির সমস্যা নিরাময়ে সাহায্য় করে। তাই যাদের দাঁতের অথবা মাড়ির সমস্যা রয়েছে তারা প্রতিদিন খাওয়ার আগে ও পরে অ্যালোভেরা জেল দিয়ে দাঁত ব্রাশ করতে পারেন। এতে মাড়ি ও দাঁত ক্ষয় রোধ হবে।

Read more:স্বাস্থ্যের জন্য আনারসের উপকারিতা
Read more: ৮ টি ঘরোয়া উপাদানে ব্রণের দাগ দূর করার উপায়

সারকথাঃ
অ্যালোভেরা গাছ ভেষজ ঔষধ বলে পরিচিত।

Read more: ত্বকের সৌন্দর্য বজায় রাখতে টমেটোর উপকারিতা
Read more: ভুজঙ্গাসন কীভাবে করবেন এবং এর উপকারিতা

Read more:  জেনে নিন ঘরোয়া পদ্ধতিতে রূপচর্চা অসাধারণ টিপস

Frequently asked questions

Q. দাঁতের ব্যথা গুরুতর হলে কীভাবে বুঝব? 

A. ১ থেকে ২ দিনের বেশি ব্যথা হলে, তীব্র ব্যথা অনুভব হলে অবশ্যই ডাক্তারের পরামর্শ নিতে হবে।

Q. দাঁতের ব্যথা কেন হয়? 

A. দাঁতে ব্যথা বিভিন্ন কারণের জন্য হয়ে থাকে। যেমন- দাঁত সঠিকভাবে পরিষ্কার না করলে, মাড়ি দুর্বল হলে, দাঁতে ইনফেকশন হলে, দাঁতে পোকা হলে, বেশি মিষ্টি খেলে, ব্যাকটেরিয়া সংক্রমণের ফলে দাঁতে ব্যথা হয়।

Q. দাঁতের ব্যথা উপেক্ষা করলে কী হয়? 

A. দাঁতের ব্যথা উপেক্ষা করলে মাড়ির রোগ হতে পারে। ফুলে যাওয়া এবং মাড়ি থেকে রক্তপাত ইত্যাদি।

Q. প্রাকৃতিক উপায়ে কি দাঁতে ব্যথা কমানো যায়? 

A. দাঁতে ব্যথা যদি সাধারণ হয় তাহলে প্রাকৃতিক উপায়ে কমানো সম্ভব। তবে যদি গুরুত্বর হয় অবশ্যই ডাক্তারের পরামর্শ নেওয়া প্রয়োজন।

 

 

 

Leave A Reply

Please enter your comment!
Please enter your name here