পেঁয়াজ বিশ্বের অতি পরিচিত রন্ধনপ্রণালী। পেঁয়াজ ছাড়া বাঙালি রান্না, ভাবাই যায় না। পেঁয়াজ অনেক সুস্বাদু রান্নায় ব্যবহার করা হয়। এমনকি স্যালাড তৈরিতে পেঁয়াজ ব্যবহার করা হয়। পেঁয়াজ খাওয়ার উপকারিতা তো রয়েছেই পাশাপাশি স্বাস্থ্যের পক্ষে পেঁয়াজের উপকারিতা অনেক। চুল পড়া কমাতে এর জুরি মেলা ভার। এছাড়াও পেয়াজে অ্যান্টি অক্সিডেন্ট উৎপাদনে সহয়তা করে, ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রণ রাখে।

www.freepik.com
পেঁয়াজে রয়েছে ভিটামিন বি ও সি। পেঁয়াজের বহুবিধ উপকারিতা অনেকের অজানা। তাই তাদের জন্য এই নিবন্ধে রইল ত্বক, চুল এবং স্বাস্থ্যের জন্য পেঁয়াজের উপকারিতা –
পেঁয়াজ কি?
www.freepik.com
পেঁয়াজ একটি ঝাঁজযুক্ত অসাধারণ সবজি, প্রকৃতির একটি উপহার। এটি ভিটামিনে ভরপুর সবজি। পেঁয়াজ বিভিন্ন উপায়ে বিভিন্ন পদ্ধতিতে ব্যবহার করা যেতে পারে। যেমন কোনো খাবারের সৌন্দর্যতার জন্য খাবারের উপরে ছড়ানো যেতে পারে বা রান্নার মশলা তৈরিতে অথবা রান্নাতে।
আরও পড়ুন । জেনে নিন সঠিক পদ্ধতিতে আদা খাওয়ার নিয়ম
পেঁয়াজের কি কি পুষ্টিগুণ রয়েছে
www.freepik.com
১০০ গ্রাম পেঁয়াজে পুষ্টি উপাদান রয়েছে-
- ক্যালোরি (40)
- জল (89%)
- প্রোটিন (1.1 গ্রাম)
- চিনি (4.2 গ্রাম)
- কার্বস (9.3 গ্রাম)
- ফাইবার (1.7 গ্রাম)
- ফ্যাট (0.1 গ্রাম)
- ভিটামিন বি ৬ (16%)
- ভিটামিন সি (15%)
- পটাসিয়াম (10%)
আরও পড়ুন । আদার গুনাগুনঃ শরীর সুস্থ রাখতে আদার গুনাগুন
পেঁয়াজের পুষ্টিগুণের উপকারিতা
www.freepik.com
- ক্যালোরি – দেহের শক্তির উৎস ক্যালরি। আমাদের দেহে শক্তির জোগান দেয়।
- প্রোটিন – প্রোটিন আমাদের দেহের গুরুত্বপূর্ণ উপাদান। প্রোটিন ছাড়া আমাদের শরীরের ত্বক, চুল, নখ বিকাশ করে।
- কার্বস – কার্বোহাইড্রেটগুলি আমাদের দেহে গ্লুকোজ হিসাবে দ্রুত রক্ত প্রবাহে প্রবেশ করে।
- ফাইবার – ফাইবার রক্তে শর্করার মাত্রা এবং কিছু রোগ প্রতিরোধ করতে পারে। ফাইবার আমাদের হজম স্বাস্থ্য এবং নিয়মিত অন্ত্রের জন্য গুরুত্বপূর্ণ।
- ভিটামিন বি ৬ –বি 6 দেহের শক্তি বিপাকের জন্য গুরুত্বপূর্ণ ভুমিকা পালন করে। অ্যানিমিয়া রোগের জন্য উপকারী এবং চোখের জন্য উপকারী।
- ভিটামিন সি – ভিটামিন সি অনেক অ্যান্টিঅক্সিডেন্টগুলির মধ্যে একটি। অ্যান্টিঅক্সিড্যান্টগুলি হ’ল পুষ্টিকর উপাদান যা ফ্রি র্যাডিক্যাল ফলে ক্ষতির রক্ষা করে। ত্বকের ভালো রাখে।
- পটাসিয়াম – রক্তচাপ সঠিকভাবে বজায় থাকে এবং এটি পেশী শক্তিশালী করে।
আরও পড়ুন । লবণের উপকারিতা ও অপকারিতা জেনে রাখুন
পেঁয়াজের খাওয়ার উপকারিতা
স্বাস্থ্যের জন্য পেঁয়াজের উপকারিতা (Health benefits of onions)
www.freepik.com
ক্যান্সারের ঝুঁকি কমায়ঃ-
সমীক্ষা দেখা যায়, লাল পেঁয়াজ স্তন এবং কোলন ক্যান্সারের কোষগুলি ধ্বংস করতে সবচেয়ে কার্যকর। যেস্মস্ত লোকেরা পেঁয়াজ সর্বাধিক মাত্রায় গ্রহণ করেছে তাদের ক্যান্সারের হার সর্বনিম্ন ছিল। কোষগুলির বৃদ্ধি বন্ধ করার ক্ষমতা রয়েছে পেঁয়াজে যা স্তন এবং কোলন ক্যান্সারের কারণ হয়
রেডিকেল শরীরের মধ্যে প্রবেশ করে ক্যান্সারের কোষ বৃদ্ধি করে। পেঁয়াজ ক্যান্সারের কোষগুলি দ্রুত বৃদ্ধি রোধ করে। পেঁয়াজে রয়েছে সালফার যৌগ যা রেডিকেলের সঙ্গে লড়াই করে ক্যান্সারের ঝুঁকি কমায়। স্টাডিজে দেখা যায়, যারা প্রতিদিন কাঁচা পেঁয়াজ খায় তারা ক্যান্সারের হাত থেকে দূরে থাকে।
ডায়াবেটিস প্রতিরোধ করেঃ-
ডায়াবেটিস একটি দীর্ঘস্থায়ী রোগ। ডায়াবেটিস পরিচালনা একটি বড় সমস্যা হল রক্তে শর্করার লেভেল বজায় রাখা। পেঁয়াজে রয়েছে ২৭ শতাংশ বায়োটিন। প্রাথমিক গবেষণা থেকে জানা যায় পেঁয়াজে উপস্থিত বায়োটিন এবং ক্রোমিয়ামের সংশ্লেষণ রক্তের শর্করার নিয়ন্ত্রণে সহায়তা করতে পারে এবং ডায়াবেটিস প্রতিরোধের করে।
www.freepik.com
অ্যানিমিয়া পরিচালনায় সাহায্য করেঃ-
অ্যানিমিয়া পরিচালনায় সহায়তা করতে পেঁয়াজের ভূমিকা অপরিসীম। অ্যানিমিয়া আয়রনের অভাব সৃষ্টি করে এবং এটি মারাত্মক রোগ ধারণ করতে পারে। নিয়মিত পেঁয়াজ খেলে আয়রনের মাত্রা বৃদ্ধি পায়।
হার্টের জন্য উপকারিঃ-
পেঁয়াজে রয়েছে কোরেসটিন, যা হার্টের ক্ষেত্রে ভালো কাজ করে। এটিতে অ্যান্টিঅক্সিড্যান্টের পাশাপাশি অ্যান্টি-ইনফ্ল্যামেটরি বৈশিষ্ট্য রয়েছে হার্ট ভালো রাখে। পেঁয়াজ রক্তে প্লেটলেটগুলি একে অপরের সাথে লেগে যাওয়া থেকে রক্ষা করতে পারে, যাতে রক্তের জমাট না বাঁধা এবং হার্ট অ্যাটাকের ঝুঁকি হ্রাস পায়।
পেঁয়াজ রক্ত চলাচল স্বাভাবিক রেখে, হার্টের অসুখ হওয়ার সম্ভবনা কমায়। এছাড়াও পেঁয়াজ কোলেস্টেরলের মাত্রাও নিয়ন্ত্রণ রাখে যা হার্টের জন্য উপকারি। এক গবেষণায় দেখা গেছে যে, পেঁয়াজে ফ্ল্যাভোনয়েড থাকে, যা স্থূল লোকের মধ্যে এলডিএল বাড়াতে দেয় না।
হজম স্বাস্থ্য উন্নত করেঃ-
কোষ্ঠকাঠিন্যের সমস্যা না থাকলে হজম ব্যবস্থা সঠিকভাবে কাজ করবে। পেঁয়াজে ঔষধি বৈশিষ্ট্যগুলি হজম সিস্টেমের উন্নতি করার ক্ষমতাও রয়েছে। পাকা পেঁয়াজের মধ্যে ফাইবার বেশি থাকে, যা কোষ্ঠকাঠিন্য এবং গ্যাসের মতো সমস্যা থেকে মুক্তি দিতে পারে।
পেঁয়াজের মধ্যে কিছু প্রাকৃতিক উপাদান রয়েছে যা ডায়রিয়ার ক্ষেত্রে উপকারী। এছাড়াও এটি পেটে ব্যথা এবং পেটের কৃমি সমস্যা থেকে মুক্তি দিতে পারে।
রক্তে শর্করার মাত্রাঃ-
গবেষণায় দেখা গেছে, পেঁয়াজের রস রক্তে সুগারের মাত্রা কমাতে পারে। পেঁয়াজের সালফার যৌগগুলি এবং কোরেসটিন রক্তে শর্করার উপর উপকারী প্রভাব ফেলতে পারে।
জ্বর এবং কাশি থেকে মুক্তি :-
জ্বর বা সর্দি কাশি হলে পেঁয়াজ ঘরোয়া প্রতিকার হিসাবে ভালো কাজ করে। শুনলে অবাক হবেন পেঁয়াজ খেলে জ্বর, সর্দি কাশি সমস্যা থেকে মুক্তি পাবেন। প্রাচীনকালে জ্বর এবং সর্দি সমস্যা হলে পেঁয়াজ ব্যবহার কড়া হত। এছাড়াও লোকের নাক থেকে রক্তক্ষরণের সমস্যা রয়েছে, তাদের জন্য পেঁয়াজের রস ঔষধ হিসাবে কাজ করে।
সর্দি কাশির ক্ষেত্রে পেঁয়াজের রসের সঙ্গে মধু মিশিয়ে খেলে উপকার পাবেন। পেঁয়াজ খাওয়ার সুবিধার মধ্যে রয়েছে জ্বর এবং কাশি থেকে মুক্তি উপায়।
ভালো নিদ্রাঃ-
পেঁয়াজে রয়েছে প্রিবায়োটিক যা ভাল ঘুম এবং স্ট্রেস থেকে মুক্তি পেতে সাহায্য করে। অন্ত্রে উপকারী ব্যাকটিরিয়াগুলি যখন প্রিবায়োটিক ফাইবার হজম করে, তখন অন্ত্রের স্বাস্থ্য ভালো কাজ করে। এছাড়াও বিপাকীয় উপজাতগুলি মস্তিষ্কের ক্রিয়াকে প্রভাবিত করে এবং গভীর ঘুমে সাহায্য করে।
আরও পড়ুন । সিদ্ধ রসুনের উপকারিতা জেনে নিন
ত্বকের যত্নে পেঁয়াজের উপকারিতা (Benefits of onion for skin care)
www.freepik.com
ত্বক গ্লোয়িং করেঃ-
পেঁয়াজে রয়েছে ভিটামিন এ, বি, সি। যা ত্বকের যত্নে গুরুত্বপূর্ণ। ফ্রি র্যাডিকালগুলির দ্বারা সৃষ্ট অকাল বয়স থেকে ত্বক সুরক্ষিত রাখে। এটি শক্তিশালী এন্টিসেপটিক, এটি ত্বককে ব্যাকটিরিয়া থেকে রক্ষা করতে পারে।পেঁয়াজের ফেস মাস্ক ত্বক গ্লোয়িং করে তোলে। বাড়িতে বসেই এটা সম্ভব।
ব্যবহার করার টিপসঃ দুই টেবিল চামচ গ্রাম আটা, দেড় চা চামচ পেঁয়াজের রস, হাফ চামচ দুধ এবং এক চিমটি জায়ফল নিয়ে একসঙ্গে মিশিয়ে নিন। প্যাকটি যদি খুব পাতলা হয়ে যায় এর মধ্যে আরও দুধ মিশিয়ে নিতে পারেন। এবার প্যাকটি মুখে প্রয়োগ করে নিন। ২০ মিনিট পর প্যাকটি যখন শুকিয়ে আসবে তখন মাসাজ করে ধুয়ে ফেলুন।
ব্রণ চিকিৎসাঃ-
পেঁয়াজ অ্যান্টি মাইক্রোবায়াল, অ্যান্টি ব্যাকটেরিয়া এবং অ্যান্টি ইনফ্লেমেটরি বৈশিষ্ট্য আপনার ত্বকে অসাধারণ কাজ করতে পারে। ত্বকের ব্যাকটেরিয়া ধ্বংস করে ত্বকের ব্রণ কমাতে সাহায্য করে। তাই ব্রণ চিকিৎসার জন্য আপনি পেঁয়াজ ব্যবহার করতে পারেন।
ব্যবহার করার টিপসঃ সমপরিমাণ পেঁয়াজের রস ও অলিভ অয়েল মিশিয়ে নিন। এবার মিশ্রণটি মুখে লাগিয়ে রাখুন। ১৫ – ২০ মিনিট পর জল দিয়ে ধুয়ে নিন। এটি ব্রণ চিকিৎসার পাশাপাশি ব্রণ হওয়ার প্রবণতা কমায়।
অ্যান্টি-এজিং হিসাবে কাজ করেঃ-
পেঁয়াজে উপস্থিত ভিটামিন এ, সি এবং ই সূর্যের ক্ষতিকারক ইউভি রশ্মি থেকে ত্বককে রক্ষা করে। এটি ফ্রি রেডিক্যালস প্রভাবও হ্রাস করে। এটি ত্বকে অ্যান্টি-এজিং হিসাবে কাজ করে।
ব্যবহার করার টিপসঃ একটু পেঁয়াজের রস নিয়ে মুখে ম্যাসাজ করুন। এতে মুখে রক্ত রক্ত সঞ্চালন আরও ভাল হবে এবং ত্বক আগের চেয়ে চকচকে, সুন্দর এবং ইয়ং করে তুলবে।
ডার্ক স্পট এবং পিগমেন্টেশন থেকে মুক্তি দেয়ঃ-
ডার্ক স্পট এবং পিগমেন্টেশন থেকে মুক্তি পেতে পেঁয়াজের রস ভালো কাজ করে। পেঁয়াজে রয়েছে ফাইটোনিউট্রিয়েন্ট এবং অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট বৈশিষ্ট্য যা ত্বকের ময়লা দূর করে এবং ত্বকে পুষ্টি যোগায়।
ব্যবহার করার টিপসঃ সমপরিমাণ পেঁয়াজের রস (এক টেবিল চামচ বা দুই টেবিল চামচ) এবং টাটকা দই (এক টেবিল চামচ বা দুই টেবিল চামচ) নিয়ে একটি পেঁয়াজের ফেস মাস্ক তৈরি করুন। আপনি চাইলে এই মিশ্রণে এসেনশিয়াল অয়েল যোগ করতে পারেন। মিশ্রণটি ১০-১৫ মিনিট মুখে লাগিয়ে রাখুন। প্রতিদিন ব্যবহার করলে উপকার পাবেন।
কীটপতঙ্গের হুল ফোটানো বা কামড়ানোর জ্বালাভাব থেকে রেহাই পেতেঃ-
বোলতা বা মৌমাছি কামড়ালে বা হুল ফোটালে জ্বালা করে। আর এই জ্বালাভাব কমাতে আপনি পেঁয়াজ ব্যবহার করতে পারেন। এক ফালি পেঁয়াজ কেটে বা তার রস আক্রান্ত অংশে লাগালে জ্বালাভাব কমে যায়।
আঁচিল মুক্ত করাঃ-
পেঁয়াজের রসে রাসায়নিক অম্লতা রয়েছে যা আঁচিল নিরাময় করতে সক্ষম। আঁচিলে আক্রান্ত স্থানে নিয়মিত পেঁয়াজের রস লাগিয়ে রাখুন। রসটি পুরোপুরি ভাবে শোষণ করে নিলে ধুয়ে ফেলবেন। এক মাস নিয়মিত পদ্ধতিটি অনুসরণ করলে ফল বুঝতে পারবেন।
আরও পড়ুন । জেনে নিন, কিছু গরুত্বপূর্ন রসুন এর উপকারিতা
চুলের যত্নে পেঁয়াজের উপকারিতা (Benefits of onion for hair care)
www.freepik.com
উকুন দূর করতেঃ
পেঁয়াজের মধ্যে সালফার থাকে যা মাথার উকুন দূর করতে পারে। চার পাঁচটি পেঁয়াজ নিয়ে পেস্ট করে রস বের করে নিন এবার সেই রসটি মাথা স্ক্যাল্পে ও চুল এই রস মাসাজ করুন এবং ঘণ্টা খানেক পর শ্যাম্পু করে নিন।
চুল ঘন করতেঃ
সালফার এবং কেরাটিনের মতো পুষ্টি উপাদান পেঁয়াজে পাওয়া যায় যা চুলের জন্য প্রয়োজনীয়। সালফারের কারণে মাথার ত্বকে কোলাজেন তৈরি হয় যা কোষের বৃদ্ধির দিকে পরিচালিত করে এবং গোড়া থেকে চুলকে শক্তিশালী করে। পেঁয়াজের রস চুলে সপ্তাহে ২-৩ বার স্ক্যাল্পে লাগালে চুল লম্বা, ঘন ও শক্ত হতে পারে।
আরও পড়ুন । জেনে রাখুন কাঁচা রসুন খাওয়ার অপকারিতা
চুল পড়া কম করতেঃ
চুল পড়া রোধ করতে পেঁয়াজের রস স্ক্যাল্পে লাগান। পেঁয়াজ চুল পড়া কমায়। সপ্তাহে ২-৩ বার ট্রাই করে দেখুন।
সাদা চুল থেকে মুক্তিঃ
চুলে প্রাকৃতিক রঙ বজায় রাখতে চাইলে অবশ্যই পেঁয়াজের রস ব্যবহার করা উচিত। শুধু তাই নয় চুল সাইনও করে। খাঁটি সরিষার তেলের মধ্যে পেঁয়াজের রস মিশিয়ে লাগালে চুল প্রাকৃতিক রং ধরে রাখে। এছাড়াও পেঁয়াজের মধ্যে একটি এনজাইম থাকে যা চুল পাকা বন্ধ করে । এছাড়াও শিকড় থেকে চুল কালো করে তোলে।
খুশকি দূর করতেঃ
শুধু শীতকাল নয় অনেকেই আছেন যারা সারা বছর খুশকির সমস্যায় ভোগেন। তারা খুশকি থেকে মুক্তি পেতে পেঁয়াজ ব্যবহার করে দেখতে পারেন। কারণ এটি খুশকি সৃষ্টিকারী ব্যাকটিরিয়াকে মেরে ফেলে।
খুশকি থেকে মুক্তি পেতে তিন চা চামচ মেথি বীজ এক রাত ভিজিয়ে রেখে ঘন পেস্ট করে নিন এবার এতে পেঁয়াজের রস মিশিয়ে চুলে লাগান। ৩০ মিনিট পর শ্যাম্পু করে নেবেন।
আরও পড়ুন । জেনে রাখুন কাঁচা রসুন খাওয়ার অপকারিতা
Key Point: পেঁয়াজের রস অনেক ঔষুধি গুণাগুণ থাকায় এটি ভেষজ উদ্ভিদ হিসাবে পরিচিত।
সচরাচর জিজ্ঞাস্য প্রশ্ন উত্তর (Frequently Asked Questions Answer:)
Q. পেঁয়াজ ব্যবহার করলে কি চুল পড়া কমে?
A. হ্যাঁ, পেঁয়াজের রস মাখলে চুল পড়া কমে।
Q. চুলের বৃদ্ধিতে কি পেঁয়াজের রস কাজ করে?
A. যখন মাথার স্ক্যাল্পে আমরা পেঁয়াজের রস ব্যবহার করি, তখন পেঁয়াজ অতিরিক্ত সালফার সরবরাহ করতে পারে, ফলে চুল পড়া বন্ধ করে এবং চুলের বৃদ্ধিতে সাহায্য করে। পেঁয়াজ থেকে প্রাপ্ত সালফার কোলাজেন উৎপাদন করতে খুব ভালো কাজ করে। পরিবর্তে কোলাজেন স্বাস্থ্যকর ত্বকের কোষ এবং চুলের বৃদ্ধিতে সহায়তা করে।
Q. পেঁয়াজের রসে কি সত্যিই খুশকি দূর করে?
A. পেঁয়াজের মধ্যে থাকা উপাদান খুশকি সৃষ্টিকারী ব্যাকটিরিয়াকে মেরে ফেলে। পেঁয়াজের রস নিয়মিত ব্যবহার করলে খুশকি দূর হয়।
Q. কীটপতঙ্গ হুল ফোটালে পেঁয়াজ কীভাবে ব্যবহার করব?
A. কীটপতঙ্গ হুল ফোটালে পেঁয়াজের আক্রান্ত অংশে লাগালে জ্বালাভাব কমে যায়।
Q. পেঁয়াজ খেলে কি ক্যান্সার রোধ করা যায়?
A. পেঁয়াজে সালফার রয়েছে। কাঁচা পেঁয়াজ খেলে ক্যান্সারের রোধ হয়।
Q. প্রতিদিন কাঁচা পেঁয়াজ খেলে কি উপকার পাওয়া যায়?
A. জৈব সালফার যৌগগুলি আপনার দেহে কোলেস্টেরলের মাত্রা হ্রাস করতে সহায়তা করে এবং রক্তের জমাট বাঁধতেও সাহায্য করে, হৃদরোগ এবং স্ট্রোকের ঝুঁকি হ্রাস করে। পেঁয়াজ থেকে সালফার যৌগগুলি পেতে রান্না করার পরিবর্তে আমরা কাঁচা পেঁয়াজ খেলে উপকার পাব।
Q. পেঁয়াজ কি রাতে খাওয়া যাবে?
A. কাঁচা পেঁয়াজ রাতে না খাওয়াই ভালো। এক গবেষণায় দেখা গেছে, রাতে পেঁয়াজ খেলে অনেকের অম্বলের সমস্যা হয়েছে।
Q. পেঁয়াজ খেলে কি স্বাস্থ্য সুবিধা পাওয়া যায়?
A. পেঁয়াজে অ্যান্টিঅক্সিডেন্টস এবং যৌগিক থাকে যা প্রদাহের বিরুদ্ধে লড়াই করে, ট্রাইগ্লিসারাইড হ্রাস করে এবং কোলেস্টেরলের মাত্রা হ্রাস করে। এগুলি সবই হৃদরোগের ঝুঁকি কমিয়ে দিতে পারে। তাদের শক্তিশালী অ্যান্টি-ইনফ্ল্যামেটরি বৈশিষ্ট্যগুলি উচ্চ রক্তচাপ কমাতে এবং রক্ত জমাট বাঁধার বিরুদ্ধে রক্ষা করতে সহায়তা করে।
Q. পেঁয়াজের সাইড এফেক্ট কি কি?
A. পেঁয়াজ খাওয়ার পর কারো কারো পেটে ব্যথার মতো সাইড এফেক্ট হতে পারে। স্কিনে পেঁয়াজের রস লাগানো নিরাপদ। কিন্তু কোনও কোনও সময় ত্বকে জ্বালা অনুভব হতে পারে।
Q. পেঁয়াজ কি পেটের মেদ কমাতে পারে?
A. পেঁয়াজগুলি দ্রবণীয় ফাইবারের উৎস, যা একটি শক্তিশালী প্রিবিওটিক খাবার হিসাবে তৈরি করে। এটি অন্ত্রকে স্বাস্থ্যকর রাখে, যা ওজন হ্রাস এবং পেটের চর্বি হ্রাস জন্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। পেটের চর্বি দ্রুত হ্রাস করার জন্য পেঁয়াজ খাওয়ার বিভিন্ন উপায় রয়েছে। আপনি সেদ্ধ খেতে পারেন, কাঁচা খেতে পারেন আবার স্যুপ করেও খেতে পারেন।
Q. আমরা কি খালি পেটে পেঁয়াজ খেতে পারি?
A. ওজন কমানোর জন্য পেঁয়াজ ব্যবহার করার অন্যতম কার্যকর ও সহজ উপায় হ’ল খালি পেটে মধু দিয়ে পেঁয়াজের রস খাওয়া। গ্রিন টি, হলুদ এবং শাকসবজি এমন কিছু সুপারফুড যা ওজন হ্রাসে সহায়তা করে, কিন্তু আমরা অনেকেই জানিনা পেঁয়াজ দিয়ে সেটা সম্ভব।