তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি (আইসিটি) বলতে টেলি যোগাযোগ, সম্প্রচার মিডিয়া, বুদ্ধিমান বিল্ডিং ম্যানেজমেন্ট সিস্টেম, অডিওভিজুয়াল প্রসেসিং এবং ট্রান্সমিশন সিস্টেম এবং নেটওয়ার্ক-ভিত্তিক নিয়ন্ত্রণ এবং নিরীক্ষণের কার্য পরিচালনা করতে ব্যবহৃত সমস্ত প্রযুক্তি বোঝায়।
Table of Contents
তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি কি?(What is Information and Communication Technology?)
বর্তমান যুগ তথ্য প্রযুক্তির দেশ। তথ্য প্রযুক্তি অর্থ হল সাধারণত তথ্য রাখা বা ব্যবহার করাকে বোঝায়। ইনফরমেশন টেকনোলজি বা আই টি নামে অভিহিত করা হয়। তথ্য প্রযুক্তি মূলত একটি সমন্বয় প্রযুক্তি। সার্বিকভাবে বলতে গেলে কম্পিউটার এবং টেলিযোগাযোগ ব্যবস্থার মাধ্যমে যাবতীয় তথ্য সংগ্রহ, সংরক্ষণ, একত্রীকরণ, প্রক্রিয়াকরণ এবং বিনিময় বা পরিবেশনের ব্যবস্থাকে তথ্য প্রযুক্তি হিসাবে আখ্যা দেওয়া হয়।
তথ্য প্রযুক্তির সঙ্গে যোগাযোগ ব্যবস্থার রয়েছে নিবিড় সম্পর্ক। তাই তথ্য প্রযুক্তিকে বর্তমানে তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি বা আইসিটি(ICT) বলা হয়।
আরো পড়ুন। কম্পিউটার এর সুবিধা ও অসুবিধা ৬ টি গুরুত্বপূর্ণ বিষয়
তথ্য প্রযুক্তির উপাদান (Components of ICT)
তথ্য প্রযুক্তির উপাদান গুলি হলঃ
- ক্লাউড কম্পিউটিং
- সফটওয়্যার
- হার্ডওয়্যার
- ডিজিটাল লেনদেন
- ডিজিটাল ডেটা
- ইন্টারনেট অ্যাক্সেস
আরো পড়ুন। ন্যানো টেকনোলজি কাকে বলে ও ব্যবহার
তথ্য প্রযুক্তির অবদানঃ
আধুনিক সভ্যতার বিকাশে তথ্য প্রযুক্তি অবদান অপরিসীম। কম্পিউটারের নির্ভুল কর্মসম্পাদন ও দ্রুত গতি, স্বয়ংক্রিয় কর্মসম্পাদন, নেট ওয়ার্ক প্রযুক্তিকে কাজে লাগিয়ে তথ্য আদান প্রদান, যোগাযোগ ইত্যাদি বৈশিষ্টের জন্য তথ্য প্রযুক্তির প্রয়োগ আজ সুবিস্তৃত। তথ্য প্রযুক্তির অবদানগুলি হল –
1. সময়সাশ্রয়ী হয়
2. অপচয় রোধ করে
3. তাৎক্ষণিক যোগাযোগ সম্ভব
4. তথ্যের প্রাপ্যতা যোগাযোগ সম্ভব হয়। যেমন- ফোন, ইমেল, ইন্টারনেট, এস এম এস ইত্যাদি
5. সর্বক্ষেত্রে দক্ষতা বৃদ্ধি পায়
6. ব্যবসা– ব্যণিজ্যের লাভজনক প্রক্রিয়া সৃষ্টি করে
7. ই–কমার্সের মাধ্যমে বিশ্বব্যাপী পণ্যের বাজার সৃষ্টি করা হয়।
8. শিল্প প্রতিষ্ঠানের তথ্য প্রযুক্তির ব্যবহার মনুষ্যশক্তি অপচয় কমায়।
9. ঘরে বসেই ইন্টারনেটের মাধ্যমে প্রয়োজনীয় জিনিস অর্ডার দিতে পারি।
10. মানব সম্পদের উন্নয়ন ঘটায়।
11. শিক্ষার্থীরা বর্তমানে ঘরে বসে ইন্টারনেটের মধ্যমে বিশ্বের যে কোন প্রতিষ্ঠান শিক্ষা গ্রহণ করতে পারে।
12. সিটিজেন চার্টারের মতো নাগরিক সুবিধাগুলি ঘরে বসেই পাওয়া যায়।
যোগাযোগঃ
তথ্য ও যোগাযোগের প্রযুক্তির মাধ্যমে ম্যাসেজ, ইমেইল, ভয়েস ও ভিডিও কল করা খুব দ্রুত ও কার্যকর।
আরো পড়ুন। নতুন প্রযুক্তির স্মার্টফোন ব্যবহারের সুবিধা ও অসুবিধা ৫ টি পয়েন্ট
তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তির সুবিধাঃ
• খরচের কার্যকারিতাঃ-
টেলিকমিউনিকেশন কোম্পানিগুলি এবং স্মার্ট ফোনের অসংখ্য অফার অতীতের তুলনায় সস্তা। কয়েক বছর আগে ফোনের মাধ্যমে বিনামূল্যে বার্তা পাঠানোর কোন উপায় ছিল না।।
কিন্তু বর্তমানে বিনামূল্যে যোগাযোগের জন্য মানুষ সোশ্যাল নেটওয়ার্ক সাইটগুলি ব্যবহার করে। যেমন – ফেসবুক, স্কাইপ, টুইটার ইত্যাদি। তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি মাধ্যমে আমরা এখন ঘরে বসে অনলাইন শপিং করতে পারি। যার ফলে যাতায়াতের খরচ সেভ হয়।
আরো পড়ুন। মহিলাদের জন্য গ্যাজেটঃ কর্মরত মহিলাদের গ্যাজেট
• শিক্ষার উন্নতিঃ-
তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি দানে নতুন পদ্ধতিতে শিক্ষার যোগ্যতা উন্নত করার সুযোগ এসেছে। এখন বাড়ি বসে শিক্ষার্থীরা অনলাইন কোর্সের মাধ্যমে ডিগ্রী অর্জন করতে পারে। ফলে পেশাদাররা তাদের কাজ করার পাশাপাশি ডিগ্রী সম্পন্ন করতে সক্ষম।
• কর্মসংস্থান সুযোগঃ-
তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তির সুবিধা হল আইটি সেক্টরগুলিতে নতুন নতুন ভিন্ন ধরণের কাজ বৃদ্ধি হয়েছে। যেমন- কম্পিউটার প্রোগ্রামার, ওয়েব ডিজাইনার ইত্যাদি। তথ্য প্রযুক্তির অগ্রগতির ফলে কর্মসংস্থান বৃদ্ধির সুযোগ হয়েছে। ফলে বেকারত্ব অনেক শতাংশ হ্রাস পেয়েছে।
• ব্যবসাঃ-
প্রত্যেক মুহূর্তে যোগাযোগ মাধ্যমের জন্য অনলাইন ওয়েবসাইটগুলি খোলা হয়ে থাকে। এর মানে হল আপনি যে কোন জায়গায়, যে কোন সময়ে অনলাইনের মাধ্যমে ব্যবসা করতে পারেন এবং গ্রাহকরা যে কোন সময় তাদের ক্ষমতা অনুযায়ী বিভিন্ন দেশে থেকে প্রয়োজনীয় জিনিসপত্র কেনাকাটা করতে পারেন।
আরো পড়ুন। বিভিন্ন ধরনের ন্যানো কম্পিউটারের বৈশিষ্ট্য
তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তির অসুবিধাঃ
• সোশ্যাল মিডিয়াঃ-
তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তির মাধ্যমে বাচ্চারা ও অল্প বয়সী ছেলেমেয়েরা দিনের অধিকাংশ সময় গেম খেলে সময় কাটায়। এতে তাদের মানসিক ও শারীরিক স্বাস্থ্যে পক্ষে ক্ষতিকারক এফেক্ট পড়ে। আর তারা বাইরের প্রাকৃতিক জগত ও খেলাধুলোর প্রতি মনোযোগ হারিয়ে ফেলছে।
• বেকারত্বঃ-
যুগের অগ্রগতির সঙ্গে সঙ্গে তথ্য প্রযুক্তির অগ্রগতি ঘটছে। যার ফলে কাজের গুনগত মান পরিবর্তন হচ্ছে। কাজের দক্ষতা বৃদ্ধির সঙ্গে বজায় না রাখতে পারায়, কর্মীরা কর্মসংস্থান হারিয়ে ফেলছে। যার ফলে বেকারত্ব বৃদ্ধি পাচ্ছে।
• গোপনীয়তা ও নিরাপত্তার অভাবঃ-
আইটি পরিবর্তিত ও সুবিধাজনক হলেও, এটির একটি বড় অসুবিধা হল গোপনীয়তা ও নিরাপত্তার অভাব। মানুষ সবসময় চিন্তিত থাকে তাদের ব্যক্তিগত তথ্য নিয়ে। আইটি প্রতিদিন পরিবর্তন হওয়া উচিত। কর্মীদের কাজগুলি সুরক্ষিত করার জন্য আইটি আপ টু ডেট থাকা উচিত।
আরো পড়ুন। নতুন প্রজন্মের টেকনোলজি ও বিজ্ঞানের ব্যবহার
সচরাচর জিজ্ঞাস্য প্রশ্ন উত্তরঃ
Q. তথ্য প্রযুক্তিকে তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি কেন বলা হয়?
A. তথ্য প্রযুক্তির সঙ্গে যোগাযোগ ব্যবস্থার রয়েছে নিবিড় সম্পর্ক। তাই তথ্য প্রযুক্তিকে বর্তমানে তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি বলা হয়।
Q. তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তির সুবিধা কি?
A. শিক্ষার উন্নতি, কর্মসংস্থান সুযোগ এবং ব্যবসার উন্নতি হয়।
Q. তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তির অসুবিধা কি?
A. মানসিক ও শারীরিক স্বাস্থ্যে পক্ষে ক্ষতিকারক, তথ্য প্রযুক্তির অগ্রগতি ঘটায় কাজের দক্ষতা বৃদ্ধির সঙ্গে বজায় না রাখতে পেরে কর্মীরা কর্মসংস্থান হারাছে।
Q. ICT এর ফুল ফর্ম কি?
A. Information and Communication Technology.