আদা একটি ভেষজ ঔষধি কিন্তু এটি মশলা হিসাবে পরিচিত। আদার ইংরেজি কথার অর্থ হল জিনজার। জিনজার সাধারণ নাম জিংবার এফিসিনেলের। আদা মূলত চীনে চাষ করা হয়। পড়ে তা সারা বিশ্বে ছড়িয়ে পড়ে। এটি অনেক দেশে ঔষুধি উপাদান হিসাবে ব্যবহৃত হয়ে থাকে। আনেক গবেষণায় দেখা গেছে, এটি ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রণ রাখে, আবার কেউ বলে এটি মাথা ব্যথা, ঠাণ্ডা, সর্দি, কাশি, বমি ভাব কমাতে সক্ষম।
দুই হাজার বছরেরও বেশি সময় ধরে বিভিন্ন ধরনের স্বাস্থ্য সমস্যা প্রতিকারে আদা ব্যবহারের সুপারিশ করেছেন চাইনিস মেডিসিন। শরীরের বিপাকীয় হারকের উন্নতি করার সময় এটি দেহের শক্তি সঞ্চালন করে। আদার গুনাগুণ কম বেশি সবাই জেনে থাকি। কিন্তু এটি খাওয়ার পদ্ধতি অনেকেই জানি না। আসুন তাহলে জেনে নেওয়া যাক আদা খাওয়ার নিয়ম
আরও পড়ুন । মানসিক স্বাস্থ্যের যত্নঃ মানসিক রোগের প্রতিকার
আদা (Ginger)
আদা রান্নাঘরের একটি গুরুত্বপূর্ণ মশলা। হলুদের মতোই আদাতে ঔষধি গুণ রয়েছে। হাজার হাজার বছর ধরে আদা আয়ুর্বেদিক ঔষধ হিসাবে ব্যবহার করা হয়। গ্যাস, পেট ফোলা, বমি বমি ভাব উপশম করতে ব্যবহৃত অন্যতম প্রধান ঔষধি। আদার চা খুব জনপ্রিয়। কারণ এতে ঠান্ডা- কাশি প্রতিরোধ করার ক্ষমতা রয়েছে।
আরও পড়ুন । স্বাস্থ্যের জন্য আয়ুর্বেদিকঃ ত্বকের সমস্যায় ভেষজ টোটকা
স্বাস্থ্যের জন্য আদা কেন প্রয়োজন (Why ginger is necessary for health)
আদা মানব দেহে উপর বিভিন্ন ধরণের প্রভাব ফেলে। এটি হৃদরোগ, স্ট্রোক, ক্লান্তি, ডায়াবেটিস, কাশি, জ্বর, কিডনিতে পাথর, ভাইরাল সংক্রমণ রোগের চিকিৎসার জন্য কার্যকর বলে পরিচিত।
আরও পড়ুন ।
আদা খাওয়ার নিয়ম (Ginger eating rules)
কথায় আছে, কাঁচা আদার জুরি নেই। কিন্তু অনেকেই আদা কাঁচা খেতে পারেন না। কিন্তু তাহলে রোগ সারবে কি করে? নিশ্চিন্ত থাকুন, আদা খাওয়ার নিয়ম আছে, যাতে অনেকটা পরিমাণ আদা খাওয়াও হবে সঙ্গে হবে রোগ নির্মূল। পদ্ধতিগুলি নীচে রইল –
-
গরম চায়ে আদার রসঃ
বিশেষত শীতকালে আমরা আদার চা পান করতে পছন্দ করি। এটি শুধু গরম রাখতে নয় পেটের সমস্যা দূর রাখতে সাহায্য করে। সকালে এক কাপ আদার চা – বমি বমি ভাব, মাথা ব্যথা, দুর্বলতা কাটিয়ে তোলে।
চা করার সময় ফুটন্ত জলে এক টুকরো ছোট আদার রস সঙ্গে একটু লেবুর রস, একটি নিখুঁত শীতকালীন টনিক। নিয়মিত আদার চা কাশির সিরাপও বলা যেতে পারে।
আরও পড়ুন । লবণের উপকারিতা ও অপকারিতা জেনে রাখুন
২. স্যুপঃ
স্যুপ আমাদের স্বাস্থ্যের পক্ষে খুবই ভালো পাশাপাশি সুস্বাদু খাদ্যের চাহিদাও মেটায়। গাজর, মিষ্টি আলু সঙ্গে বেশি করে আদা দিয়ে স্যুপ বানিয়ে নিতে পারেন। আর একটু স্পাইসি করার জন্য ক্রিম যোগ করতে পারেন।
-
মাছের সঙ্গে আদাঃ
আদার গুণাগুণ প্রচুর। আদা ঠাণ্ডা লাগা কমানোর পাশাপাশি রক্তে সুগারের মাত্রা নিয়ন্ত্রণ করে, পেশীর ব্যথা কমায়, হৃদ রোগের সমস্যা থেকে মুক্তি দেয় এমনকি ক্যান্সারের ঝুঁকি হ্রাস করে।
আমাদের বাঙালীদের মাছ খুব প্রিয়। এটা ছাড়া খাবার সম্পূর্ণ হয় না। তাছাড়া আমরা সবাই একটু স্পাইসি খাবার খেতে পছন্দ করি। তাই আপনাদের জন্য এখানে আদা খাওয়ার নিয়ম এ আদা দিয়ে মাছ রান্না করতে পারেন।
আরও পড়ুন । জেনে নিন স্বল্পদিনের মধ্যে ওজন কমানোর মন্ত্র
-
আদার সিরাপঃ
আদার সিরাপ সর্দি – কাশির উপশম ঔষধ। বাড়িতে আপনি এই সিরাপ বানিয়ে নিতে পারেন।
উপকরণঃ-
- ১ / ৪ আদা
- ১ কাপ জল
- ১ কাপ চিনি
পদ্ধতিঃ-
উপকরণগুলি একসঙ্গে মিশিয়ে ৩০ মিনিট ফোটান। এবার মিশ্রণটিকে ছাঁকনির মাধ্যমে ছেঁকে নিন। আপনার আদার সিরাপ রেডি।
-
আদা, লেবু ও মধুঃ
সকালে উঠে অনেকেই ওজন কমানোর জন্য এবং দেহ ফিট রাখার জন্য লেবু ও মধুর জল পান করেন। তার মধ্যে যদি একটু আদা যোগ করে নেন, সেটি স্বাস্থ্যের জন্য দ্বিগুণ উপকারী হয়ে উঠবে। আদায় উপস্থিত অ্যান্টি অক্সিডেন্ট, পেট পরিষ্কার রাখে এবং হজম শক্তি বাড়িয়ে তোলে। জ্বর, সর্দি – কাশি, মাথা ব্যথায় আদা, লেবু ও মধুর জল অনেক উপকারি।
আরও পড়ুন । ত্বক, চুল ও স্বাস্থ্যের জন্য পেঁয়াজের উপকারিতা
-
মিষ্টি খাবারের সঙ্গে আদাঃ
মিষ্টি খাবারের সঙ্গে আদা যোগ করে খেতে পারেন। যেমন কুমড়োর তরকারি।
আরও পড়ুন । চুলের যত্নে ৫ টি জবা ফুলের উপকারিতা
আদা খাওয়ার নিয়ম নিবন্ধে নিয়মিত এই পদ্ধতিতে আদা খেলে আপনার লাইফ হয়ে উঠবে সুস্বাস্থ্য।
Key point
ডাক্তারদের মতে, প্রতিদিন সকালে আদা মেশানো জল খেলে গুলুকোজের লেভেল নিয়ন্ত্রণে থাকে। যা ডায়াবেটিস আক্রান্ত রোগীদের জন্য উপকারি।
সচরাচর জিজ্ঞাস্য প্রশ্ন উত্তরঃ
Q. আদা খেলে কি উপকার হয়?
A. আদা গ্যাস, পেট ফোলা, অম্বল, ঠান্ডা প্রতিরোধ করতে পারে। এছাড়া আদা ডায়াবেটিস রোগীদের জন্য উপকারি।
Q. আদা কি রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়িয়ে তোলে?
A. হ্যাঁ, আদা রোগ প্রতিরোধের ক্ষমতা বাড়িয়ে তুলতে পারে।
Q. আদা কীভাবে খেলে উপকার পাওয়া যায়?
A. আদা ভিন্ন উপায়ে খাওয়া যায়। তবে সবচেয়ে বেশি উপকার পাওয়া যায় আদার চা এবং রান্নায় আদা খেলে।