তুলসী একটি ঔষধি গাছ। তুলসী কথার অর্থ হল যার কোনও তুলনা হয় না। ইংরেজিতে একে “হলি বাসিল“ বলা হয়ে থাকে। সর্দি, কাশি, ঠাণ্ডা লাগার ঔষধ হিসাবে তুলসী পাতার গুনাগুণ প্রচুর। তুলসী পাতা শুধুমাত্র পুজো-পার্বণেই ব্যবহার যোগ্য তা কিন্তু নয় বরং ভেষজের চিকিৎসার গুরুত্বপূর্ণ উপাদান হিসেবে অ্যাখা দেওয়া হয়েছে।
তুলসীতে প্রচুর পরিমাণে অ্যান্টি-অক্সিডেন্ট রয়েছে, যা ক্যান্সার প্রতিরোধের সক্ষম। অ্যান্টিবায়োটিক হিসেবে তুলসী পাতার ভূমিকা দারুন। আয়ুর্বেদ শাস্ত্র মতে, তুলসি গাছের পাতা শরীরে রোগ প্রতিরোধের ক্ষমতা বাড়াতে সক্ষম। এখানে ১০ টি তুলসী পাতার গুণাগুণ বিষয়ে আলোচোনা করা হল-
সারকথাঃ
বিগত পঞ্চাশ বছর ধরে তুলসী পাতার গাছ রোগব্যাধি সারানোর কাজে লাগানো হয়ে আসছে। ত্বক হোক বা চুল সব কিছুতেই এর জুরি মেলা ভার। তুলসী পাতার রসের মধ্যে এমন উপাদান রয়েছে, যা কমবেশি নান ধরণের রোগ সারাতে সক্ষম।
তুলসী পাতার গুনাগুণ
-
সর্দি ও ঠাণ্ডা লাগা কমায়ঃ
সর্দি ও ঠাণ্ডা লাগার থেকে দূরে সরিয়ে রাখতে তুলসী পাতার গুণাগুণ অপরিসীম। প্রতিদিন ৩-৪ টে পাতার রস সর্দি, কাশী থেকে রেহাই দেবে। এতে উপস্থিত অ্যান্টি-ব্য়াকটেরিয়াল পদার্থটি রোগ প্রতিরোধের ক্ষমতা রাখে।
-
ডেঙ্গু ও ম্যালেরিয়া জ্বরঃ
তুলসী অ্যান্টিবায়োটিক হিসাবে কাজ করে। এটি শরীরকে ভাইরাসের হাত থেকে বাঁচায়। তুলসী পাতার রস জ্বরের জন্য উপকারী সেটা তো আমরা শুনেই থাকি কিন্তু আপনি জানেন কী ডেঙ্গু ও ম্যালেরিয়া জ্বরের জন্য খুব উপকার। তুলসী পাতা সেদ্ধ করা জল এই ভাইরাসের হাত থেকে দূরে রাখে।
-
অ্যালার্জি সারাতেঃ
অ্যালার্জি সারাতে তুলসী পাতার গুণাগুণ অনেক। পাতার রস এবং সমপরিমাণ দূর্বাঘাসের রস এবং কাঁচা হলুদের রস মিশিয়ে খেলে উপকার পাবেন।
-
হাঁপানি থেকে রেহাইঃ
পাতার রসের সঙ্গে সমপরিমাণ আদার রস এবং এক চামচ মধু মিশিয়ে সকাল- বিকাল খেলে এই রোগের হাত থেকে রেহাই পাওয়া যায়।
সম্পর্কিত নিবন্ধ চেক করুন :-
-
চুলে ক্যাস্টর অয়েলের ব্যবহারঃ নতুন চুল গজাতে ক্যাস্টর অয়েলের ব্যবহার
-
ত্বক ফর্সা করার টিপসঃ ৮ টি উপায়ে ঘরোয়া পদ্ধতিতে ত্বক ফর্সা করার টিপস
-
ব্রণ দূর করেঃ
তুলসী পাতায় রয়েছে আয়ুর্বেদিক গুন। ব্রণর সমস্যা কমাতে পাতার রস, ব্রণ আক্রান্ত অংশে ১০-১৫ লাগিয়ে ধুয়ে ফেলবেন।
-
ক্যান্সার প্রতিরোধঃ
ক্যান্সার প্রতিরোধের একটি অন্যতম উপদান হল তুলসী পাতা। গবেষণায় দেখা গেছে যে, যারা নিয়মিত তুলসী পাতা খেয়ে থাকেন তাদের ক্যন্সারে আক্রান্ত হয়ার সম্ভবনা কম থাকে। তুলসীর মধ্যে যে ফাইটোক্যামিকাল রয়েছে তা লিভার ও স্কিন ক্যান্সার রোধ করে।
-
ডায়াবেটিস কমাতে সাহায্য করেঃ
তুলসীতে রয়েছে অ্যান্টিডায়াবেটিক গুনাগুণ যা ডায়াবেটিস রোধে সক্ষম। ডায়াবেটিসের হাত থেকে নিজেকে বাঁচাতে নিয়মিত তুলসী পাতার রস খেতেই পারেন।
-
ত্বকের সমস্যা দূর করেঃ
ত্বকের জন্য তুলসী পাতার রস খুবই উপকারী। তুলসী পাতা বেটে পুরো মুখে লাগলে ত্বক কোমল ও মসৃণ হয়ে ওঠে। তাছাড়াও এই পাতার রসের সঙ্গে নারকেল তেল ফুটিয়ে, সেই তেল পোড়া অংশে লাগালে জ্বালা কমানোর সঙ্গে সঙ্গে পোড়া দাগও দূর করে।
-
হার্টের রোগের সমস্যা থেকে মুক্তিঃ
তুলসী পাতায় অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট তো আছেই তার সঙ্গে রয়েছে ভিটামিন সি যা হার্টের অসুখ থেকে মুক্তি পেতে সহায়তা করে। হার্টের কর্মক্ষমতা বাড়ানোর সঙ্গে সঙ্গে স্বাস্থ্য ভালো রাখে। হার্টের রোগের সমস্যায় যারা ভুগচ্ছেন, রোজ এই পাতার রস খেতে পারেন।
-
দাঁতের সমস্যা দূর করেঃ
অধিকাংশ মানুষ দাঁতের সমস্যায় ভোগেন। দাঁত ঠিকমতো পরিষ্কার না থাকার ফলে ব্যাকটেরিয়া জমা হয়। ফলে নানা সমস্যা দেখা যায়। মুখের ভেতর ব্যাকটেরিয়াকে নির্মূল করতে তুলসী পাতার গুণাগুণ প্রবল। এছাড়া তুলসী দাঁত হলুদ হয়ে যাবার থেকে বাঁচায়। মুখে দুর্গন্ধ হতে দেয় তো না সঙ্গে মাড়িকেও ভালো রাখে। সকল সমস্যার মুশকিল আসান করতে রোজ তুলসী দিয়ে চা খান।
তাহলে দেখা যাছে, ত্বকই হোক বা চুলই হোক। তুলসী পাতার গুণাগুণসর্বত্রই।
সারকথাঃ
স্বাস্থ্যের সঙ্গে ত্বকের যত্নে তুলসী পাতার ভূমিকা অতুলনীয়। তুলসী গাছে ভেষজ গুনাগুণ আছে।