বাচ্চাদের জন্য মাছঃ মাছ কেন বাচ্চাদের জন্য উপযুক্ত খাদ্য

কথায় আছে, মাছে – ভাতে বাঙালি। বাঙালির পাতে মাছ না থাকলে মেনুটা ঠিক জমে না। বড়োদের পাশাপাশি বাচ্চাদের জন্যও মাছ খুব গুরুত্বপূর্ণ। শিশুকালই হল শরীর গঠনের উপযুক্ত সময়। এই সময় থেকেই বাচ্চাদের পরবর্তী জীবন নির্ভর করে। তাই দরকার সঠিক পুষ্টি। বিভিন্ন ডাক্তারের নানা মতের কারনে অভিভাবকরা বুঝে উঠতেই পারে না বাচ্চাদের জন্য উপযুক্ত পুষ্টি কোনটা। অন্তত মাছ এমন একটি খাবার যেটা তাদের নিশ্চিন্ত রাখে। প্রতিদিন খাবারের পাতে বাচ্চাদের জন্য মাছ, তাদের স্বাস্থ্যের জন্য উপকারী।

মাছ হল প্রোটিনের অন্যতম উৎস। এছাড়াও ভিটামিন ও খনিজ সমৃদ্ধ যেমন- ভিটামিন ডি ও আয়োডিন। গবেষণায় দেখা গেছে, মাছ শিশুদের জন্য প্রয়োজনীয় পুষ্টি ও রোগ প্রতিরোধের সক্ষম।

সারকথাঃ

শরীরের প্রতিটি অংশে যেমন- ত্বক, চুল, নখ, হার্ট, ফুসফুসের পাশাপাশি পেশীগুলিতেও প্রোটিনের প্রয়োজন। প্রোটিন স্বাস্থ্যের জন্য গুরুত্বপূর্ণ। সকাল হোক বা রাত, বাচ্চাদের পাতে প্রোটিন যুক্ত খাবার রাখা জরুরী। এক্ষেত্রে বাচ্চাদের জন্য মাছ খুব স্বাস্থ্যকর পছন্দ হতে পারে।

বাচ্চাদের তৈলাক্ত মাছ খাওয়ানো খুব ভালো। কারন এতে রয়েছে ভিটামিন এ এবং ডি যা ত্বক ও চোখ সুস্থ রাখার পাশাপাশি হাড়ের প্রয়োজনীয় ক্যালসিয়াম যোগায়। একটা খুব গুরুত্বপূর্ণ পুষ্টি যেটা তৈলাক্তযুক্ত মাছে খুঁজে পাওয়া যায়। সেটা হল ওমেগা-3 ফ্যাট। এই বিশেষ ফ্যাটটি বাচ্চাদের জন্য গুরুত্বপূর্ণ। কারন এটি মস্তিষ্ক ও স্নায়ুর বিকাশে অপরিহার্য ভূমিকা পালন করে।

মাছ কেন বাচ্চাদের জন্য উপযুক্ত খাদ্য

মাছ কেন বাচ্চাদের জন্য উপযুক্ত খাদ্য?

বাচ্চাদের বেড়ে ওঠার জন্য মাছ আদর্শ খাদ্য। অল্পবয়সী বাচ্চাদের জন্য মাছ খাওয়ানো স্বাস্থ্যের পক্ষে উপকার। এটি হার্ট ও স্নায়ুকে শক্তিশালী করে তোলে।সব রকমের মাছেই সেলেনিয়াম, জিঙ্ক ও আয়োডিনে সমৃদ্ধ।

মাছে উপস্থিত সেলেনিয়াম, একটি শক্তিশালী অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট যা ক্যান্সার প্রতিরোধ করতে সহায়তা করে। আয়োডিন স্বাস্থ্যের বিপাকের জন্য অপরিহার্য অংশ। আর জিঙ্ক সর্দি ও কাশির সঙ্গে লড়াইের ক্ষমতা রাখে।

চোখ ও মস্তিস্কের বিকাশঃ

  • চোখ ও মস্তিস্কের বিকাশঃ

মাছে প্রচুর পরিমাণে ওমেগা 3 ফ্যাটি অ্যাসিড রয়েছে। গর্ভধারণ সময় থেকে ২০ বছর পর্যন্ত বাচ্চাদের মস্তিষ্কের কাঠামোর জন্য এই ফ্যাটগুলি প্রয়োজন। ভিটামিন ডি এবং দি.এইচ.এ মস্তিষ্কের টিস্যুগুলির বৃদ্ধি ও বিকাশের জন্য অপরিহার্য। এছাড়াও রেটিনা পুষ্ট করে চোখের দৃষ্টিশক্তি বজায় রাখে।

সম্পর্কিত নিবন্ধ চেক করুন :- 

  • মনোযোগী করে তোলেঃ

এই পুষ্টিকর খাদ্যটি বাচ্চাদের মনোযোগী করে তুলতে সাহায্য করে। পড়ার দক্ষতা বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে ভালো আচারনের প্রকাশ ঘটায়।

  • ক্যান্সার প্রতিরোধ করেঃ

এতে উপস্থিত ওমেগা 3 ফ্যাটি অ্যাসিড, ক্যান্সার প্রতিরোধের সক্ষম। নিয়মিত বাচ্চাদের মাছ খাওয়ালে প্রোস্টেট ও অভারএইন ক্যান্সার হওয়ার ঝুঁকি কম থাকে। মাছে রয়েছে সেলেনিয়াম মিনালের, যা এনজাইম সৃষ্টি করে ক্যান্সার রক্ষার জন্য।

হাড় মজবুত করেঃ

  • হাড় মজবুত করেঃ

ছোট মাছ বাচ্চাদের জন্য খুব উপকার। প্রতিদিন শিশুদের মাছ খাওয়ালে তাদের শরীরে ক্যালসিয়ামের অভাব হয় না। ক্যালসিয়াম হাড় মজবুত করে। তাই ছোটোবেলা থেকে তাদের মাছ খাওয়ানোর অভ্যাস করা উচিত।

  • ভালোভাবে ঘুমাতে সহায়তা করেঃ

সালমান মাছর মধ্যে রয়েছে একটি বিশেষ এমিনো অ্যাসিড, যা প্রাকৃতিক ক্ষতিকারক এজেন্ট হিসাবে কাজ করে। যার ফলে বাচ্চারা ভালোভাবে ঘুমাতে পারে।

বাচ্চাদের জন্য মাছ এর পরিমাণঃ

বাচ্চাদের জন্য মাছ এর পরিমাণঃ

  • ৬ বছরের কম বয়সী বাচ্চাদের প্রতি সপ্তাহে ২ থেকে ৩ টি মাছ (৭৫গ্রামের) খাওয়ানো যেতে পারে।
  • ৬ এবং প্রাপ্ত বয়স্ক বাচ্চাদের জন্য প্রতি সপ্তাহে ২-৩ টি মাছ (১৫০ গ্রাম ওজনের) খাওয়ানো যেতে পারে।
  • যেসব বাচ্চারা মাছ খেতে পছন্দ করে না,তাদের সপ্তাহে ১ বার মাছ খেতে দিন। হালকা মাছের( যেমন – তেলাপিয়া) সাথে খাওয়ার অভ্যাস শুরু করলে তারা এই খাদ্যটি বেশি করে গ্রহণ করবে।

সারকথাঃ

গবেষণায় দেখা গেছে, যে সব বাচ্চারা নিয়মিত মাছ খায় তাদের হাঁপানি হওয়ার সম্ভাবনা কম। বাচ্চাদের সুস্থ থাকার জন্য প্রোটিন খাদ্য হিসাবে মাছ অপরিহার্য উপাদান।

Leave A Reply

Please enter your comment!
Please enter your name here