সূত্রঃ- www . instagram.com/p/Bv1xnvWHTen/
| Biography | |
|---|---|
| নাম | অ্যাগনিস গঞ্জা বোজাঝিউ আলবেনীয় |
| ডাক নাম | মাদার টেরেসা |
| পেশা | ধর্মপ্রচারক, ক্যাথলিক সন্ন্যাসিনী |
| জন্মতারিখ | ২৬ আগস্ট, ১৯১০ |
| জন্মস্থান | আলবেনিয়ার স্কোপ্জে শহর |
| রাশিচক্র | কন্যারাশি |
| বিখ্যাত | মিশনারিস অফ চ্যারিটি |
| পরিবার ও আত্মীয়স্বজন | |
| পিতা | নিকোলো বয়াজুর |
| মা | দ্রানা বয়াজুর |
| মৃত্যুর তারিখ | ৫ ই সেপ্টেম্বর, ১৯৯৭ |
| মৃত্যুর স্থান | কলকাতা |
| অন্যান্য | |
| আয় | Not available |
| টুইটার | Not available |
| ফেসবুক | Not available |
| ইন্সটাগ্রাম | Not available |
সূত্রঃ- www . instagram.com/p/B1nYRdcDbMc/
বিশ্বে অনেক মানুষ রয়েছে যারা শুধু নিজের জন্য বেঁচে থাকেন, কিন্তু ইতিহাসে এরকম অনেক বিশেষ ব্যক্তি রয়েছেন যারা শুধু পরের সেবায় নিজেদের জীবন উৎসর্গ করেছেন। তাদের মধ্যে মাদার টেরেসা অন্যতম। মাদার টেরেসা এমন একজন মানুষ যার কথা মনে পড়লে আমাদের হৃদয় শ্রদ্ধার সাথে ভরে ওঠে। মাদার টেরেসা এমন একজন মহান ব্যক্তি, যার হৃদয় সকল দরিদ্র, অসুস্থ এবং অসহায় মানুষদের জন্য তার মন কাঁদতেন এবং যার জন্য তিনি তার পুরো জীবন অসহায় এবং দরিদ্র মানুষের সেবায় ত্যাগ করেছেন।
আজ আমরা এই মহান ব্যক্তি মাদার টেরেসা জীবনী সংক্ষেপে আপনাদের সামনে তুলে ধরব। এই নিবন্ধে তার শৈশব, কর্মজীবন এবং আরও কিছু তথ্য আমরা জানাব। তাহলে চলুন দেখে নেওয়া যাক মাদার টেরেসার জীবনের কাহিনী।
মাদার টেরেসার জীবনীঃ
মাদার টেরেসার শৈশব এবং প্রাথমিক জীবন (Mother Teresa’s Childhood & Early Life):
সূত্রঃ- www . instagram . com/p/Bm7VWc8glb2/
মাদার টেরেসা ১৯১০ সালে ২৬ আগস্ট আলবেনিয়ার স্কোপ্জে শহর (অটোম্যান সাম্রাজ্যের ইউস্কুবে) জন্মগ্রহণ করেন। মাদার টেরেসার আসল নাম ছিল অ্যাগনিস গঞ্জা বোজাঝিউ আলবেনীয়। তার পিতা ছিলেন নিকোলো বয়াজুর, একজন সাধারণ ব্যবসায়ী। তিনি যখন মাত্র আট বছর বয়সে ছিলন তখন তার পিতা মারা যান এবং তার সমস্ত দায়িত্ব তার মা দ্রানা বয়াজুর উপর এসে পড়ে। এবং তিনি তাকে রোমান ক্যাথলিক আদর্শে লালন পালন করেন।
তিনি পাঁচ ভাইবোনের মধ্যে কনিষ্ঠ ছিলেন। তাঁর জন্মের সময়, তাঁর বড় বোনটির বয়স ছিল সাত বছর এবং ভাইয়ের বয়স দুই বছর এবং অন্য দুটি ভাইবোন শৈশবে মারা যায়।
তিনি পড়াশুনোয় মেধাবী এবং কঠোর পরিশ্রমী ছিলেন। পড়াশুনার পাশাপাশি গানটিও তিনি পছন্দ করেছিলেন। তিনি এবং তার বোন নিকটবর্তী গির্জার নেতৃস্থানীয় গান করতেন। কথিত আছে তিনি মাত্র বারো বছর বয়েসে বুঝতে পেরেছিলেন তিনি তার পুরো জীবন মানব সেবায় ব্যয় করবেন এবং ১৮ বছর বয়সে তিনি সিস্টার্স অব লোরেটো সংস্থায় মিশনারী হিসাবে যোগদান করেন।
এরপর তিনি আয়ারল্যান্ডের রথফার্নহ্যামে লোরেটো অ্যাবেতে তিনি ইংরেজি ভাষা শিখতে যান। কারণ ভারতে সিস্টার্স অফ লোরেটোর শিক্ষার মাধ্যম ছিল এই ভাষা।
১৯২৯ সালে ৬ জানুয়ারি আয়ারল্যান্ড থেকে ভারতে ফিরে এসে কলকাতায় ‘লরেটো কনভেন্ট’ পড়ানো শুরু করেন। তিনি একজন সুশৃঙ্খল শিক্ষক ছিলেন এবং ছাত্ররা তাকে খুব ভালবাসত। ১৯৪৪ সালে তিনি প্রধান শিক্ষক হন। তার মন পড়ানোর উপর পুরোপুরি মগ্ন ছিল, কিন্তু তার পাশাপাশি চারপাশে থাকা দারিদ্র এবং অসহায় মানুষের প্রতি তার মন প্রচণ্ডভাবে নাড়া দিত। ১৯৪৩ সালে দুর্ভিক্ষের সময়, শহরে বিপুল সংখ্যক লোক মারা গিয়েছিল এবং মানুষ দারিদ্র্যে ভুগছিল। ১৯৪৬ সালে হিন্দু-মুসলিম দাঙ্গার ফলে কলকাতা শহর পরিস্থিতি আরও ভয়াবহ হয়েছিল।
অন্যান্য কিংবদন্তিদের সম্পর্কে জানতে নীচে ক্লিক করুনঃ
- নেতাজির জীবন কাহিনীঃসুভাষ চন্দ্র বসুর জন্ম কাহিনী
- ঈশ্বরচন্দ্র বিদ্যাসাগরের জীবনী কাহিনী জেনে নিন
- রাজা রামমোহন রায় শৈশব, পারিবার, কর্মজীবন
- জগদীশ চন্দ্র বসু শৈশব, শিক্ষা, কর্মজীবনের কাহিনী
- সত্যেন্দ্রনাথ বসু শৈশব, কর্মজীবন এবং ব্যক্তিগত জীবন
- শরৎচন্দ্র চট্টোপাধ্যায় শৈশব, পরিবার, কর্মজীবন
- বঙ্কিমচন্দ্র চট্টোপাধ্যায় শৈশব, কর্মজীবন, সাহিত্যে জীবন
- যামিনী রায় শৈশব, পরিবার, কর্মজীবন
- আচার্য প্রফুল্ল চন্দ্র রায় শৈশব, শিক্ষা, কর্মজীবন
- কাজী নজরুল ইসলাম শৈশব, শিক্ষা, কর্ম, বৈবাহিক জীবন
- প্রশান্ত চন্দ্র মহলানবিশ শৈশব, শিক্ষা ও কর্মজীবন
- অমর্ত্য সেন শৈশব, শিক্ষা, পরিবার ও কর্মজীবন
- অরবিন্দ ঘোষ শৈশব, শিক্ষা, পরিবার এবং কর্মজীবন
- সিস্টার নিবেদিতা প্রাথমিক জীবন এবং কর্মজীবন
- রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর এর শৈশব এবং কর্মজীবনের কাহিনী
- রামকৃষ্ণ পরমহংস দেবের জীবন কাহিনী
- রানি রাশমণি দাশীর শৈশব এবং কর্মজীবন
- ছাত্রছাত্রীদের জন্য স্বামী বিবেকানন্দের রচনা
মাদার টেরেসার কর্মজীবন (Mother Teresa’s Career Life):
সূত্রঃ- www . instagram.com/p/B3a-lG4Bhir/
মিশনারিস অফ চ্যারিটি:-
১৯৪৪ সাল পর থেকে তিনি সিধান্ত গ্রহণ করেন গরিব, দুঃস্থ এবং অসহায় মানুষেদের সাহায্য করবেন। এরপর তিনি মাদার টেরেসা পাটনার হলি ফ্যামিলি হাসপাতাল থেকে নার্সিংয়ের প্রশিক্ষণ শেষ করেন এবং ১৯৪৮ সালে কলকাতায় ফিরে আসেন। সেখান থেকে তিনি দরিদ্র বৃদ্ধদের তত্ত্বাবধায়কের সাথে থাকতেন। তিনি রোগীদের ক্ষতস্থান পরিষ্কার করেছেন এবং ঔষধ লাগিয়ে দিয়েছেন।
ধীরে ধীরে তিনি তাঁর কাজ দ্বারা মানুষের দৃষ্টি আকর্ষণ করেছিলেন। ১৯৪৮ সালে সাধারণ পোশাক ছেড়ে নীলপার সাদা শাড়ি বদলে ফেলেন সারাজীবনের জন্য বদলে ফেলেন। মাদার টেরেসা এই কাজটি প্রথম পর্যায়েটি খুব কঠিন ছিল। লোরেটো তাকে ছাড়তে হয়েছিল কোনও আয় না থাকার জন্য। পেট ভরাতে তাকে অন্যের সাহায্য নিতে হয়েছিল। তাঁর জীবনের এই গুরুত্বপূর্ণ পর্যায়ে তিনি খুব অস্থির হয়ে পড়েছিলেন, একাকী বোধ করেছিলেন এবং লোরেটো স্বাচ্ছন্দ্যে ফিরে আসার চিন্তাভাবনা করেছিলেন কিন্তু তিনি হাল ছাড়েন নি।
১৯৫০ সাল ৭ ই অক্টোবর এই সংগঠনের উদ্দেশ্য ছিল ক্ষুধার্ত, গৃহহীন, খোঁড়া, অন্ধ, চর্মরোগের জন্য যাদের সমাজে কোনও স্থান নেই তাদের সহায়তা করা। মিশনারিস অফ চ্যারিটি মাত্র ১৩ জনের সাথে শুরু হয়েছিল তবে মাদার টেরেসা মৃত্যুর সময় পর্যন্ত ৪ হাজারের বেশি সন্ন্যাসিনী কাজ করেন। অন্ধ, বৃদ্ধ, দরিদ্র, গৃহহীন, এইডস রোগীদের এবং প্রাকৃতিক দুর্যোগে ক্ষতিগ্রস্থদের সেবা করা।
মাদার তেরেসা ‘নির্মল হৃদয়’ এবং ‘নির্মলা শিশুভবন’ নামে আশ্রমগুলি চালু করেছিলেন। ‘নির্মল হৃদয়’ এর উদ্দেশ্য ছিল রোগীদের এবং অসহায় রোগে আক্রান্ত দরিদ্র মানুষের সেবা করা, যা সমাজ ফেলে দিয়েছে। নির্মলা শিশু ভবনটি অনাথ ও গৃহহীন শিশুদের সহায়তার জন্য প্রতিষ্ঠা হয়েছিল। সত্য নিষ্ঠা এবং কঠোর পরিশ্রম কখনও ব্যর্থ হয় না, উক্তিটি মাদার টেরেসা সাথে প্রমাণিত। তিনি যখন ভারতে এসেছিলেন তখন তিনি চোখের সামনে দেখেছিলেন রাস্তার পাশে পড়ে থাকা নিঃস্ব ও প্রতিবন্ধী শিশু ও অসহায় রোগীদের করুণাময় পরিস্থিতি।
সম্মান এবং পুরষ্কার (Honor and Awards):
সূত্রঃ- www . instagram.com/p/B3WDzkmlajB/
মাদার টেরেসা মানবতার জন্য তার সেবার জন্য অনেক আন্তর্জাতিক প্রশংসা ও পুরষ্কার পেয়েছেন। ১৯৬২ সালে ভারত সরকার তাঁকে প্রথমে পদ্মশ্রী এবং ১৯৮০ সালে পরে দেশের সর্বোচ্চ সম্মান ‘ভারতরত্ন’পেয়েছিলেন। ১৯৮৫ সালে আমেরিকা যুক্তরাষ্ট্র তাকে স্বাধীনতা পদক প্রদান করে। মানব কল্যাণে কাজ করার জন্য তাকে নোবেল শান্তি পুরস্কার দেওয়া হয়।
মহাপ্রয়াণঃ
সূত্রঃ- www . instagram.com/p/B3WW1q6HqGd/
বয়সের সাথে সাথে তার স্বাস্থ্যেরও অবনতি ঘটে। তিনি ৭৩ বছর বয়সে প্রথমবার হার্ট অ্যাটাক করেছিলেন। ১৯৮৯ সালে আরেকটি হার্ট অ্যাটাক হয় এবং তাকে কৃত্রিম পেসমেকার দেওয়া হয়েছিল। ১৯৯১ সালে মেক্সিকোতে নিউমোনিয়ার পরে তাঁর হার্টের সমস্যা আরও বেড়ে যায়। এর পরেও তার স্বাস্থ্যের অবনতি হতে থাকে। ১৯৯৭ সালে ১৩ ই মার্চ তিনি মিশনারি অফ চ্যারিটির প্রধান হিসাবে পদত্যাগ করেন এবং ১৯৯৭ সালে ৫ ই সেপ্টেম্বর তিনি মারা যান। তার মৃত্যুর সময় মিশনারি অফ চ্যারিটিতে ৪ হাজার সিস্টার এবং ৩০০ জন সহযোগী ছিল যা বিশ্বের ১২৩ টি দেশে সমাজসেবাতে কাজ করে।
মাদার টেরেসা নামটি বিশ্বজুড়ে পরিচিত এবং তার লক্ষ্য ছিল দেশের দরিদ্র, অবাঞ্ছিত, অসহায়, উদাসীন মানুষের জীবনকে সুন্দর করে তোলা।
সারকথাঃ
দরিদ্রের সেবার উদ্দেশ্যে মিশনারিস অফ চ্যারিটি প্রতিষ্ঠা করা হয়।
সচরাচর জিজ্ঞাস্য প্রশ্ন উত্তরঃ
প্রঃ মাদার টেরেসা জন্ম কবে?
উঃ মাদার টেরেসা ১৯১০ সালে ২৬ আগস্ট জন্মগ্রহণ করেন।
প্রঃ মাদার টেরেসা কোথায় জন্মগ্রহণ করেন?
উঃ আলবেনিয়ার স্কোপ্জে শহরে তিনি জন্ম নিয়েছেলেন।
প্রঃ মাদার টেরেসার পিতার নাম কি?
উঃ মাদার টেরেসার পিতার নাম নিকোলো বয়াজুর।
প্রঃ মাদার টেরেসা কত সালে পদ্মশ্রী পুরস্কার লাভ করেন?
উঃ ১৯৬২ সালে ভারত সরকারের কাছ থেকে পদ্মশ্রী পুরস্কার লাভ করেন।
প্রঃ মাদার টেরেসা মৃত্যু কবে হয়?
উঃ ১৯৯৭ সালে ৫ ই সেপ্টেম্বর মারা গিয়েছিলেন।






