সূত্রঃ- live.staticflickr.com
Biography | |
---|---|
নাম | জগদীশ চন্দ্র বসু |
পেশা | বিজ্ঞানী |
জন্মতারিখ | ৩০শে নভেম্বর, ১৮৫৮ |
জন্মস্থান | বেঙ্গল প্রেসিডেন্সি অঞ্চলের ময়মনসিংহ |
জাতীয় | ভারতীয় |
রাশিচক্র | ধনুরাশি |
পরিবার ও আত্মীয়স্বজন | |
পিতা | ভগবান চন্দ্র বসু |
মা | বামা সুন্দরী দেবী |
ভাই | Not Know |
বোন | Not Know |
স্ত্রী | অবলা বসু |
পুত্র | Not available |
কন্যা | Not available |
শিক্ষা ও স্কুল, কলেজ | |
শিক্ষাগত যোগ্যতা | বিএসসি |
বিদ্যালয় | কলকাতার হেয়ার স্কুল |
কলেজ | সেন্ট জেভিয়ার্স কলেজ, কেমব্রিজের ক্রাইস্ট কলেজ |
মৃত্যু তারিখ | ২৩ শে নভেম্বর, ১৯৩৭ |
অন্যান্য | |
আয় | Not available |
টুইটার | Not available |
ফেসবুক | Not available |
ইন্সটাগ্রাম | Not available |
ইতিহাসের কয়েকজন খ্যাতনামা বিজ্ঞানীদের মধ্যে আচার্য জগদীশ চন্দ্র বসু ছিলেন অন্যতম। তিনি একজন বাঙালি পদার্থবিদ, উদ্ভিদবিদ ও জীববিজ্ঞানী। যিনি প্রথম আবিষ্কার করেছিলেন গাছের প্রাণ আছে। গাছেরাও উত্তেজনায় সাড়া দেয়।
তিনি এমন একটি যন্ত্র আবিষ্কার করেন যা উদ্ভিদদেহের সামান্য সাড়াকে লক্ষগুণ বৃদ্ধি করে প্রদর্শন করে। তাঁর এই গবেষণাও আজ আধুনিক যুগে টেলিভিশন ও মহাকাশে বিশেষ ভূমিকা পালন করছে। চলুন আজ এই মহান বিজ্ঞানীর জীবনের কিছু কাহিনী জেনে নিই আজকের নিবন্ধে থেকে। এখানে আপনাদের জন্য জগদীশ চন্দ্র বসু শৈশব, শিক্ষা, কর্মজীবনের কাহিনী রইল-
Table of Contents
জগদীশ চন্দ্র বসুর জীবনীঃ
জগদীশ চন্দ্র বসুর শৈশব পারিবারিক জীবনঃ
সূত্রঃ- http://learndunia.com
১৮৫৮ সালের ৩০শে নভেম্বর ব্রিটিশ ভারতের বেঙ্গল প্রেসিডেন্সি অঞ্চলের ময়মনসিংহে জন্মগ্রহণ করেছিলেন। তার পরিবারের প্রকৃত বাসস্থান ছিল বিক্রমপুরের রাঢ়িখাল গ্রাম। তাঁর পিতা ব্রাহ্মসমাজের ধর্মাবলম্বী ভগবান চন্দ্র বসু। তিনি ছিলেন ফরিদপুরের ডেপুটি ম্যাজিস্ট্রেট। মায়ের নাম বামা সুন্দরী দেবী।
১৮৮৭ সালে ব্রাহ্ম সমাজের বিখ্যাত সংস্কারক দুর্গা মোহন দাসের কন্যা অবলাকে বিয়ে করেন জগদীশ চন্দ্র বসু। তিনি একজন নারীবাদী ছিলেন এবং তাঁর স্বামীর বৈজ্ঞানিক জীবনকে সম্পূর্ণ সমর্থন করেছিলেন।
জগদীশ চন্দ্র বসুর শিক্ষাজীবনঃ
সূত্রঃ- upload.wikimedia.org
তাঁর বাবা চেয়েছিলেন তিনি ইংরেজি ভাষা শেখার আগে তাঁর নিজস্ব সংস্কৃতির সাথে পরিচিত করা এবং এদেশীয় ছেলেমেয়েদের মাতৃভাষা শেখানোর। তাই তাকে একটি স্থানীয় স্কুলে পাঠানো হয় যেখানে তাঁর বিভিন্ন ধর্ম এবং সম্প্রদায়ের সহপাঠী ছিলেন।
জগদীশ চন্দ্র বসু কলকাতার হেয়ার স্কুল থেকে পড়াশুনো করে ১৮৬৯ সালে সেন্ট জেভিয়ার্স কলেজ ভর্তি হন। যেখানে তিনি ইউজিন ল্যাফন্টের সঙ্গে পরিচিত হন যিনি তাঁর মধ্যে প্রাকৃতিক বিজ্ঞানের প্রতি গভীর আগ্রহ তৈরি করেছিলেন।
সেন্ট জেভিয়ার্স কলেজ থেকে বিএ পাশ করে ইন্ডিয়ান সিভিল সার্ভিসে পড়াশোনার জন্য ইংল্যান্ডে যেতে চান তবে তাঁর পিতা তাঁর এই ইচ্ছায় রাজি ছিলেন না কারণ তিনি চাইতেন জগদীশ চন্দ্র বসু একজন বিদ্বান হোক।
বাবার ইচ্ছাতে অবশেষে, তিনি প্রাকৃতিক বিজ্ঞান অধ্যয়ন করার সিদ্ধান্ত নিয়েছিলেন এবং কেমব্রিজের ক্রাইস্ট কলেজে ভর্তি হন। এখান থেকে তিনি ট্রাইপস পাশ করেন এবং ১৮৮৪ সালে লন্ডন বিশ্ববিদ্যালয় থেকে বিএসসি শিক্ষালাভ করেন। কেম্ব্রিজে জন উইলিয়াম স্ট্রাট, ফ্রান্সিস মেটল্যান্ড, জেমস ডেওয়ার, ফ্রান্সিস ডারউইন মতো শিক্ষকদের কাছে শেখার সুযোগ পেয়েছিলেন। সেখানে তাঁর সহযোদ্ধা প্রফুল্ল চন্দ্র রায়ের সাথেও তাঁর পরিচয় হয়, যার সাথে তিনি ভাল বন্ধু হয়েছিলেন।
অন্যান্য কিংবদন্তিদের সম্পর্কে জানতে নীচে ক্লিক করুনঃ
- নেতাজির জীবন কাহিনীঃসুভাষ চন্দ্র বসুর জন্ম কাহিনী
- ঈশ্বরচন্দ্র বিদ্যাসাগরের জীবনী কাহিনী জেনে নিন
- রাজা রামমোহন রায় শৈশব, পারিবার, কর্মজীবন
- শরৎচন্দ্র চট্টোপাধ্যায় শৈশব, পরিবার, কর্মজীবন
- আচার্য প্রফুল্ল চন্দ্র রায় শৈশব, শিক্ষা, কর্মজীবন
- বঙ্কিমচন্দ্র চট্টোপাধ্যায় শৈশব, কর্মজীবন, সাহিত্যে জীবন
- যামিনী রায় শৈশব, পরিবার, কর্মজীবন
- কাজী নজরুল ইসলাম শৈশব, শিক্ষা, কর্ম, বৈবাহিক জীবন
- প্রশান্ত চন্দ্র মহলানবিশ শৈশব, শিক্ষা ও কর্মজীবন
- অমর্ত্য সেন শৈশব, শিক্ষা, পরিবার ও কর্মজীবন
- সত্যেন্দ্রনাথ বসু শৈশব, কর্মজীবন এবং ব্যক্তিগত জীবন
- মাদার টেরেসা শৈশব, প্রাথমিক এবং কর্মজীবন
- অরবিন্দ ঘোষ শৈশব, শিক্ষা, পরিবার এবং কর্মজীবন
- সিস্টার নিবেদিতা প্রাথমিক জীবন এবং কর্মজীবন
- রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর এর শৈশব এবং কর্মজীবনের কাহিনী
- রামকৃষ্ণ পরমহংস দেবের জীবন কাহিনী
- রানি রাশমণি দাশীর শৈশব এবং কর্মজীবন
- ছাত্রছাত্রীদের জন্য স্বামী বিবেকানন্দের রচনা
জগদীশ চন্দ্র বসুর কর্মজীবনঃ
সূত্রঃ- www.famousinventors.org
১৮৮৫ সালে স্যার জগদীশ চন্দ্র বসু ভারতে ফিরে আসেন এবং প্রেসিডেন্সি কলেজের পদার্থবিজ্ঞানের একজন অধ্যাপক হিসাবে নিযুক্ত হন। প্রথম চাকরিতেই তিনি বর্ণবাদের শিকার হয়েছিলেন এবং তার বেতন ব্রিটিশ অধ্যাপকদের তুলনায় অনেক নিচু স্তরে নির্ধারিত হয়েছিল। তবে জগদীশ চন্দ্র বসু প্রতিবাদ হিসাবে বেতন গ্রহণ করতে অস্বীকার করেন এবং তিন বছর বিনা বেতনে কলেজে পড়িয়েছিলেন।
দীর্ঘকাল ধরে প্রতিবাদের পরই তাঁর বেতন ব্রিটিশদের সমতুল্য করা হয়েছিল এবং প্রেসিডেন্সি কলেজের অধ্যক্ষ তাকে স্থায়ী করে দেন এবং তাকে তার পূর্বের তিন বছরের পুরো বেতন দিয়েছিলেন। কলেজে ২৪ বর্গফুট একটি ছোট ঘরে তাকে গবেষণার কাজ চালিয়ে যেতে হয় এবং তাঁর এত প্রতিকূলতা থাকা সত্ত্বেও তাঁর বিজ্ঞান সাধনার প্রতি হার না মানার সাহস দেখে ভগিনী নিবেদিতাকে অবাক করে তুলেছিলেন। জগদীশ চন্দ্র বসু নিজের অর্থের সাহায্য তাঁর গবেষণার জন্য অর্থায়ন করেছিলেন।
প্রতিদিন তাঁর কলেজের অধ্যাপনার পাশাপাশি যেটুকু সময় থাকত তিনি গবেষণার কাজ করতেন। আঠারো মাসের অতিক্ষুদ্র তরঙ্গ নিয়ে গবেষণা করেন এবং ১৮৯৫ সালে একটি ৫মিমি থেকে স্বল্পতম রেডিও-তরঙ্গ তৈরি করেছিলেন। যা বলা হয় অতি ক্ষুদ্র তরঙ্গ বা মাইক্রোওয়েভ। আধুনিক টেলিভিশন এবং মহাকাশের ক্ষেত্রে এই ধরণের তরঙ্গের ভুমিকা অনস্বীকার্য। তিনি ১৮৫৯ সালে এশিয়াটিক সোসাইটি অফ বেঙ্গল-এর সামনে তাঁর প্রথম বৈজ্ঞানিক কাগজ’, অন দ্য পোলারাইজেশন অফ ইলেকট্রিক রেইস” উপস্থাপন করেন। ১৮৯৬ সালে তাঁর গবেষণাগুলি লন্ডনের রয়েল সোসাইটির জার্নালে প্রকাশিত হয়।
১৮৯৬ সালে তিনি মার্কোনি সাথে দেখা করেন যিনি যিনি ওয়্যারলেস সিগন্যালিং পরীক্ষায় কাজ করছিলেন। মার্কোনি দীর্ঘদিন ধরে টেলিগ্রাফি নিয়ে কাজ করতেন। ১৮৯৯ সালে রয়্যাল সোসাইটির একটি পেপারে “iron-mercury-iron coherer with telephone detector” প্রকাশ করেন।
তিনি বায়ো ফিজিক্সের ক্ষেত্রেও একজন অগ্রণী ছিলেন এবং তিনি একজন বাঙালী বিজ্ঞানী যিনি প্রথম আবিষ্কার করেছিলেন ”গাছের প্রাণ আছে”। তিনি প্রথম গবেষণা করেছিলেন উদ্ভিদ প্রাণীর মতোই উত্তেজনায় সাড়া দেয় অর্থাৎ তারা ব্যথা অনুভব করতে এবং স্নেহ অনুভব করতে সক্ষম। এছাড়াও তিনি এটাও প্রমান করে দেন উদ্ভিদের জীবন চক্র রয়ছে এবং তাঁর এই গবেষণা লন্ডনের রয়্যাল সোসাইটি প্রকাশ করেন।
গবেষণা ছাড়াও তিনি একজন লেখক ছিলেন। ১৮৯৬ সালে তাঁর রচিত “নিরুদ্দেশ কাহিনী” বাংলা বিজ্ঞান কথাসাহিত্যের প্রথম প্রধান কাজ ছিল। এই গল্পটি পরে ইংরেজিতে অনুবাদ করা হয়েছিল।
জগদীশ চন্দ্র বসু অধ্যয়নের বিভিন্ন ক্ষেত্রে অবিচ্ছিন্ন চিহ্ন রেখে গেছেন। তিনি ধারাবাহিকভাবে ক্লকওয়ার্ক গিয়ার্স ব্যবহার করে উদ্ভিদের বৃদ্ধি পরিমাপের জন্য ক্রিস্কোগ্রাফ যন্ত্রটি আবিষ্কার করেন।প্রথম ওয়্যারলেস সনাক্তকরণ ডিভাইস আবিষ্কারেরও তাঁর কৃতিত্ব। তবে জগদীশ চন্দ্র বসু নিজের গবেষণার জন্য জীবদ্দশায় কোনো পেটেন্ট গ্রহণ করেন নি। তাঁর মৃত্যুর কিছুকাল আগে তিনি কলকাতায় প্রতিষ্ঠা করেছিলেন বসু বিজ্ঞান মন্দির।
মহাপ্রয়াণঃ
সূত্রঃ- image.slidesharecdn.com
১৯৩৭ সালের ২৩ শে নভেম্বর, ৭৮ বছর বয়সে বিজ্ঞানী জগদীশ চন্দ্র বসু মৃত্যু বরণ করেন। তবে তিনি রেখে গেছেন কিছু আশ্চর্যজনক তাঁর আবিষ্কার।
সারকথাঃ
আচার্য জগদীশ চন্দ্র বসু ইন্ডিয়ান বোটানিক্যাল গার্ডেনটির নামকরণ করা হয়েছে এই অসাধারণ বিজ্ঞানীর স্মরণে।
সচরাচর জিজ্ঞাস্য প্রশ্ন উত্তরঃ
প্রঃ জগদীশ চন্দ্র বসুর জন্ম কবে হয়?
উঃ জগদীশ চন্দ্র বসুর জন্মগ্রহণ করেন ১৮৫৮ সালের ৩০শে নভেম্বর।
প্রঃ জগদীশ চন্দ্র কোথায় জন্মগ্রহণ করেছেন?
উঃ জগদীশ চন্দ্র বসুর বেঙ্গল প্রেসিডেন্সি অঞ্চলের ( বাংলাদেশ) ময়মনসিংহে জন্মগ্রহণ করেছিলেন।
প্রঃ জগদীশ চন্দ্র বসুর বাবার নাম কি?
উঃ জগদীশ চন্দ্র বসুর বাবা নাম ভগবান চন্দ্র বসু।
প্রঃ জগদীশ চন্দ্র বসুর মায়ের নাম কি?
উঃ জগদীশ চন্দ্র বসুর মায়ের নাম বামা সুন্দরী দেবী।
প্রঃ জগদীশ চন্দ্র বসু “বসু বিজ্ঞান” মন্দির প্রতিষ্ঠা করেন?
উঃ “বসু বিজ্ঞান” মন্দির প্রতিষ্ঠা হয় ১৯৩৭ সালে।
প্রঃ জগদীশ চন্দ্র বসু কবে মারা যান?
উঃ জগদীশ চন্দ্র বসু ১৯৩৭ সালের ২৩ শে নভেম্বর।