বর্তমানে বেশিরভাগ কমবয়সী মহিলাদের মধ্যে পি.সি.ও.এস ( পলিস্টিক ওভারি সিন্ড্রোম ) লক্ষণটি দেখা যায়। যার একটা বড় সমস্যা ওজন বেড়ে যাওয়া। কারন পি.সি.এসের অল্প বয়স্ক মহিলাদের রক্তে ইনসুলিনের মাত্রা উচ্চতর থাকে। যার জন্য অনেকেই ওজন বজায় রাখতে সমস্যায় পড়ে। ঔষধ, ডায়েট ও ব্যায়মের মাধ্যমে পি.সি.ও.এস নিয়ন্ত্রণ করা যায়। তাই আজ আমরা ওজন কমানোর জন্য পি.সি.ও.এস ডায়েট এর খাদ্য তালিকা নিয়ে আলোচনা করব। তার আগে আমাদের জানতে হবে পি.সি.ও.এস কি ও তার ফলে কি লক্ষণ দেখা যায়-
সূত্র :- truweight . in
পি.সি.ও.এস কি?
পিসিওএস একটি জেনেটিক, হরমোনাল, বিপাকীয় এবং প্রজনন ব্যাধি। এটি একটি হরমোন জনিত সমস্যা যা ১৫ থেকে ৪৪ বছর নারীদের প্রভাবিত করে। সঠিক ডায়েটের মাধ্যমে ওজন কমিয়ে এটি নিয়ন্ত্রনে আনা সম্ভব হয়।
পি.সি.ও.এস লক্ষণঃ
কিছু কিছু মহিলাদের এই লক্ষণ দেখা যায় তাদের প্রথম ঋতু মাসিকে। আবার কিছু মহিলাদের লক্ষণ দেখা যায় অতিরিক্ত ওজন বেড়ে যাওয়ায় বা গর্ভবতী হওয়ার সময় সমস্যা থাকায়।
চলুন দেখে নিই এর লক্ষণগুলো কি কি-
-
ঋতু মাসিকঃ
দীর্ঘদিন ধরে মাসিক না হওয়ার কারনে বা সময়মতো মাসিক না হওয়া, অতিরিক্ত রক্তপাত হওয়া পি.সি.ও.এস লক্ষণ।
-
চুল বৃদ্ধিঃ
এই অবস্থায় ৮০ শতাংশ মহিলাদের মুখে ও শরীরে চুল বৃদ্ধি পায়।
সূত্র :- medicalnewstoday . com
-
ব্রণ বৃদ্ধিঃ
আপনার যদি পি.সি.ও.এস থাকে তাহলে হরমোন ত্বককে বেশি তৈলাক্ত করে তুলতে পারে যা ব্রণ বৃদ্ধি করে। কিশোর বয়ঃসন্ধিকালে ব্রণ সাধারণ হয় কিন্তু পি.সি.ও.এস সহ অল্প বয়স্ক মহিলাদের আরও গুরুতর ব্রণ হতে থাকে।
-
ওজন বৃদ্ধিঃ
এই অবস্থায় ৭০ শতাংশ মহিলাদের ওজন বৃদ্ধি পায়।
-
ত্বকে কালো দাগঃ
এর আরেক লক্ষণ হল স্তনের নীচে ও গলায় কালো প্যাচ দাগ।
সূত্র :- fashionmize . co
ওজন কমানোর জন্য পি.সি.ও.এস ডায়েটঃ
পি সিও এস ডায়েট পরিকল্পনার শুরু করার আগে, আপনাকে অব্যশই জানতে হবে পি সিও এ এড়াতে কোন খাবারগুলো ডায়েটের জন্য রাখা উচিত এবং খাবারের তালিকা কি তা জানা উচিত। এই বিষয়ে স্পষ্ট ধারণা হয়ে গেলে আপনি নিজেই পি.সি.ও.এস ডায়েট এর রেসিপি তৈরি করতে পারবেন।
পি.সি.ও.এস ডায়েট এর খাদ্য তালিকা-
-
সবুজ শাক সব্জিঃ
এই সব্জি সবসময় ওজন কমানোর জন্য খাদ্য তালিকায় পরিচিত। এছাড়াও সবুজ শাক সব্জি ভিটামিন কে, সি, ডি সমৃদ্ধ যা পি.ও.সি.এস নিয়ন্ত্রণ রাখতে সহায়তা করে। এছাড়াও এটি থাইরয়েড, চর্বি বিপাক ও হরমোনের ভারসাম্য বজায় রাখে। পি.সি.ও.এস ডায়েট খাদ্য তালিকায় এটি অবশ্যই রাখবেন।
-
টাটকা ফলঃ
ওজন কমানোর জন্য পি.সি.ও.এস ডায়েট এ ফল গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে। টাটকা ফলে (যেমন- আপেল, বেদানা, কমলালেবু,নাসপাতি ইত্যাদি) উপস্থিত ভিটামিন, খনিজ, ফাইবার পি.সি.ও.এস নিয়ন্ত্রণের পাশাপাশি ওজন কমায়।
সম্পর্কিত নিবন্ধ চেক করুন :-
- শীতকালে শুষ্ক ত্বকের যত্ন এর কিছু সহজ উপায় জেনে নিন
- পুরুষদের জন্য চুলের যত্নের টিপসঃ ১০টি অপরিহার্য টিপস
- ব্রণ দূর করার উপায়ঃ চট জলদি ব্রণ দূর করুন
- যোগ ব্যায়ামের সুবিধাঃ নিয়মিত যোগাসনের সুবিধা কি কি
- বাচ্চাদের জন্য মাছঃ মাছ কেন বাচ্চাদের জন্য উপযুক্ত খাদ্য
- আদর্শ খাবারের তালিকা ও তার শ্রেণীবিভাগ
-
রঙিন সবজিঃ
রঙিন সবজিতে রয়েছে শক্তিশালী অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট যা পি.সি.ও.এসের ক্ষতিগ্রস্তদের মধ্যে অক্সিডেটিভ স্ট্রেস কমায়।
-
অরগানিক মাংসঃ
শরীরের ওজন কমানো পি.সি.ও.এসের জন্য খুব গুরুত্বপূর্ণ। ডায়েটের খাদ্য তালিকার মধ্যে চর্বিযুক্ত খাবার অন্তর্ভুক্ত করা প্রয়োজন। প্রোটিন স্পাইক বিপাক যা ওজন নিয়ন্ত্রণ করতে সহায়তা করে।
-
স্বাস্থ্যকর ফ্যাটঃ
প্রয়োজনীয় ফ্যাটি অ্যাসিড যুক্ত স্বাস্থ্যকর খাবার খেতে হবে। যেমন- জলপাই, অ্যাভোকাডো, বাদাম ইত্যাদি। এগুলি ভিটামিন ডি ও বি সমৃদ্ধ যা পি.সি.ও.এস জন্য গুরুত্বপূর্ণ।
-
দুধঃ
দুধে রয়েছে ক্যালসিয়াম। পি.সি.ও.এস নিয়ন্ত্রণের জন্য ক্যালসিয়াম প্রয়োজন। এটা ডিম পরিপক্ক, ডিম্বাশয় বিকাশ এবং হাড় শক্তিশালী করতে সাহায্য করে। প্রতিদিন দুই গ্লাস করে দুধ পান করুন।
সূত্র :- seriouseats . com
-
ডিমঃ
এটি একটি পুষ্টিকর খাবার। তাই ডিম সেদ্ধ করে হলুদ অংশ বের করে নিন। কারণ ডিমের হলুদ অংশে রয়েছে কলেস্টেরল, যেটা হার্টের পক্ষে খারাপ।
-
টুনা মাছঃ
টুনা মাছ খুব পুষ্টিকর এবং এতে রয়েছে প্রচুর পরিমাণে ওমেগা 3 ফ্যাটি অ্যাসিড এবং ভিটামিন, যা পি.সি.ও.এস সাথে লড়াই করে।
-
মাশরুমঃ
পি.সি.ও.এস ডায়েট এর খাদ্য তালিকা কম ক্যালোরি এবং লো. জি.এল মাশরুম রাখতে পারেন।