সুন্দর মুখ, গ্লোয়িং ত্বক আর ঘন চুল কে না চায় বলুন তো। নানি-দাদিদের সময় থেকে চুলের ও ত্বকের ক্ষেত্রে ক্যাস্টর অয়েল ব্যবহার হয়ে আসছে। চুলের ক্ষেত্রে ক্যাস্টর অয়েলের উপকারিতা র জুরি নেই সে তো কম বেশি সবাই জেনে থাকি। কিন্তু চুলের সঙ্গে সঙ্গে ত্বকের পক্ষেও এর অনেক গুনাগুণ। এই অয়েলে রয়েছে ওমাগো ৯ ফ্যাটি অ্যাসিড যা চুলের বৃদ্ধির সঙ্গে চুল গোড়া মজবুত করতে ও চুল গজাতে সহায়তা করে।
ক্যাস্টর অয়েলের উপকারিতা জানার আগে আমদের জেনে নিতে হবে এই অয়েলটি আসলে কি আর এর কার্যকারিতা।
ক্যাস্টর অয়েল কী?
ক্যাস্টর অয়েল সাধারণত রেড়ি গাছের বীজ থেকে হয়ে থাকে। এটি হলুদ বর্ণের হয়। তেলটি চিটচিটে আঠালো ও অপ্রীতিকর গন্ধ হয়। তেলতিতে ভিটামিন ই, প্রোটিন, অ্যান্টি ব্যাকটেরিয়াল সমৃদ্ধ। চুল গজাতে ম্যাজিকের মতো কাজ করে।
ক্যাস্টর অয়েলের কার্যকারিতাঃ
• এই অয়েল চুলের গোড়া মজবুত করে।
• খুশকি দূর করে।
• স্ক্যাল্পে পি.এইচ লেভেল বজায় রাখে।
• চুল পড়া রোধ করে ও নতুন চুল গজাতে সাহায্য করে।
• ত্বকের ব্রণ ও বলিরেখা দূর করতে সাহায্য করে।
• ত্বকের ময়শ্চারাইজারের কাজ করে।
ত্বকের পক্ষে ক্যাস্টর অয়েলের উপকারিতা-
-
ত্বকের ব্রণ কমাতেঃ
ত্বক খুব বেশি তৈলাক্ত হয়ে গেলে ব্রণ উৎপত্তি ঘটে। ব্রণ থেকে রেহাই পেতে এই অয়েল খুব উপকারি। ক্যাস্টর অয়েলে রয়েছে ফ্যাটি অ্যাসিড যা ত্বকের আদ্রতা বজায় রেখে ব্রণ কমাতে সাহায্য করে।
ব্রণ আক্রান্ত অংশে এই তেল হালকা করে মাসাজ করে নিন। ভালো ফল পেতে সারারাত লাগিয়ে সকালে ধুয়ে ফেলুন।
-
বলিরেখা দূর করতেঃ
ক্যাস্টর অয়েল মুখের বলিরেখা (বয়সের ছাপ) দূর করতে সাহায্য করে। ত্বককে করে তোলে মোলায়াম ও মসৃণ। তাই বলিরেখা দেখা দিলে আপনি নিশ্চিন্তে ব্যবহার করতে পারেন এই অয়েল। তাই ত্বকের বলিরেখা যুক্ত স্থানে ক্যাস্টর অয়েল লাগান।
-
ত্বকে ময়শ্চারাইজারের কাজ করেঃ
ক্যাস্টর অয়েল ত্বকের ময়শ্চারাইজার হিসাবে চমৎকার কাজ করে। ত্বককে শুষ্কতা ও রুক্ষতার হাত থেকে বাঁচায়। শুষ্ক ত্বকের হাত থেকে রেহাই পেতে ক্যাস্টর অয়েলের সঙ্গে সমপরিমাণ নারকেল তেল মিশিয়ে হালকাভাবে মাসাজ করে নিন। ১০-২০ মিনিট রেখে ধুয়ে ফেলুন।
সম্পর্কিত নিবন্ধ চেক করুন :-
আইভুরু ঘন করার একটি কার্যকারী উপাদান হল ক্যাস্টর অয়েল। এই অয়েল খুব দ্রুত ভুরু ঘন করে। তুলোর বল এই অয়েলের মধ্যে ভিজিয়ে আইভুরু উপর ঘষুন। নিয়মিত এই অয়েল ব্যবহার করলে আইভুরু ঘন হবে।
চুলের পক্ষে ক্যাস্টর অয়েলের উপকারিতা-
-
নতুন চুল গজাতেঃ
নতুন চুল গজাতে এই অয়েল ম্যাজিকের মতো উপকারি। এর মধ্যে থাকা ওমাগো ৯ ফ্যাটি অ্যাসিড চুল বৃদ্ধিতে সহায়তা করে।
ক্যাস্টর অয়েলের সঙ্গে সমপরিমাণ নারকেল তেল মিশিয়ে নিন। এবার এই তেলটি হালকা গরম করে মাথায় লাগিয়ে কিছুক্ষণ রেখে শ্যাম্পু করে নেবেন। সপ্তাহে ২-৩ বার ব্যবহার করে দেখুন চুল দ্রুত বৃদ্ধি পাবে।
-
খুশকি কমাতেঃ
শীতকালে খুশকির প্রবণতা বেশি দেখা যায়। লেবু রস খুশকি কমাতে সাহায্য করে। আর ক্যাস্টর অয়েলে রয়েছে অ্যান্টি ব্যাকটেরিয়াল ও অ্যান্টি ফাঙ্গাল উপাদান। যা খুশকির সমস্যার হাত থেকে রেহাই দেয়।
২ চামচ ক্যাস্টর অয়েলের সঙ্গে সমপরিমাণ সরিষার তেল ও কয়েক ফোঁটা লেবুর রস মিশিয়ে চুলে লাগিয়ে রাখুন। ১ ঘণ্টা পর শ্যাম্পু করে ফেলবেন। খুশকি থেকে রেহাই পাবেন।
-
চুল পড়া কমাতে সাহায্যঃ
বর্তমানে সব বয়েসই ছেলেমেয়েরা চুল পড়ার সমস্যা ভুক্তভোগী। ক্যাস্টর অয়েল অকালে চুল পড়া হাত থেকে বাঁচায়। চুলের গোড়া মজবুত করে চুল পড়া রোধ করে।
-
চুলের হেয়ার মাস্ক হিসাবে কাজ করেঃ
এই অয়েল চুলের হেয়ার মাস্ক হিসাবে ব্যবহার কাজ করে। একটি ডিম ফাটিয়ের তার মধ্যে ২ চামচ ক্যাস্টর অয়েলের ও কয়েক ফোঁটা মধু মিশিয়ে প্যাক তৈরি করে নিন। এই প্যাকটি পুরো চুলে লাগিয়ে নিন। ৩০ মিনিট পর শ্যাম্পু করে নেবেন। হেয়ার মাস্ক চুলের পুষ্টি যোগায়।
নোটসঃ
অন্য কোন তেলের সঙ্গে ব্যবহার করতে না চাইলে এমনি ব্যবহার করতে পারেন।