Biography | |
---|---|
নাম | অমর্ত্য সেন |
পেশা | অর্থনীতিবিদ, লেখক,দার্শনিক |
জন্মতারিখ | ৩ রা নভেম্বর, ১৯৩৩ |
জন্মস্থান | শান্তিনিকেতন |
জাতীয় | |
রাশিচক্র | বৃশ্চিকরাশি |
শহর | কলকাতা |
পরিবার ও আত্মীয়স্বজন | |
পিতা | আশুতোষ সেন |
মা | অমিতা সেন |
স্ত্রী | নবানীতা দেব, এভা কলোর্নি, এমা জর্জিনা |
পুত্র | Not Know |
কন্যা | অন্তরা সেন, নন্দনা সেন |
শিক্ষা ও স্কুল, কলেজ | |
শিক্ষাগত যোগ্যতা | বি.এ ডিগ্রী |
বিদ্যালয় | সেইন্ট গ্রেগরী উচ্চ বিদ্যালয়, বিশ্বভারতী বিদ্যালয় |
কলেজ | কলকাতার প্রেসিডেন্সি কলেজ, কেমব্রিজের ট্রিনিটি কলেজ |
পুরস্কার | ভারত রত্ন |
অন্যান্য | |
আয় | Not available |
টুইটার | Not available |
ফেসবুক | Not available |
ইন্সটাগ্রাম | Not available |
অমর্ত্য সেন দেশের প্রখ্যাত অর্থনীতিবিদ, লেখক এবং দার্শনিক। তিনি সমাজের অনগ্রসর ও দরিদ্র অংশের জন্য ন্যায়বিচার, সম্মান ও সাম্যের পথ উন্মুক্ত করতে উল্লেখযোগ্য অবদান রেখেছেন। তিনি দেশের অনাহার এড়ানোর জন্য বেশ কয়েকটি উপায় উল্লেখ করেছিলেন, যা জাতিসংঘ উন্নয়ন কর্মসূচী সূচক গঠনে সহায়তা করেছিল এবং তাকে টাইম ম্যাগাজিনের বিশ্বের প্রভাবশালী ৫০ জন ব্যক্তির একজন করে তুলেছে। তাঁর গবেষণার বিষয়গুলি ছিল সামাজিক তত্ত্ব, অর্থনৈতিক তত্ত্ব, নীতি ও রাজনৈতিক দর্শন, কল্যাণ অর্থনীতি তত্ত্ব, উন্নয়নমূলক অর্থনীতি ইত্যাদি।
অমর্ত্য সেনের জীবনীঃ
অমর্ত্য সেনের শৈশব এবং পারিবারিক জীবন (Amartya Sen’s Childhood and Family Life):
১৯৩৩ সালে ৩ রা নভেম্বর জন্মগ্রহণ করেছিলেন অমর্ত্য সেন। তিনি পশ্চিমবাংলার শান্তিনিকেতন জন্মগ্রহণ করেন। তার পিতা ছিলেন আশুতোষ সেন, তিনি একজন ঢাকার রসায়ন অধ্যাপক যিনি পরবর্তীকালে পশ্চিমবঙ্গ পাবলিক সার্ভিস কমিশনের চেয়ারম্যান হন এবং মা অমিতা সেন। তাদের পৈতৃক বাড়ি ঢাকায়।
অমর্ত্য সেনের শিক্ষা জীবন (Amartya Sen’s Education Life):
১৯৪১ সালে অমর্ত্য সেন ঢাকার সেইন্ট গ্রেগরী উচ্চ বিদ্যালয় পড়াশুনো করেন। তার পরিবার ভারত বিভাগে পরে ভারতে চলে আসেন। এখান এসে বিশ্বভারতী বিদ্যালয় ভর্তি হন। শৈশব থেকেই অমর্ত্য সেনের সংস্কৃত, গণিত এবং পদার্থবিজ্ঞানের মতো বিষয়ে আগ্রহ ছিল।
১৯৫৩ সালে তিনি কলকাতার প্রেসিডেন্সি কলেজ থেকে বি.এ অর্থনীতিতে প্রথম শ্রেণীর সম্মান সহ স্নাতক ডিগ্রি অর্জন করেন। এবং ওই বছর তিনি কেমব্রিজের ট্রিনিটি কলেজে যান এবং ১৯৫৬ সালে বি.এ ডিগ্রী অর্জন করে।
অমর্ত্য সেনের ক্যারিয়ার জীবন (Amartya Sen’s Career Life):
১৯৫৬ সালে, ২৩ বছর বয়সে তিনি কলকাতার যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয় অর্থনীতি বিভাগে অধ্যাপক এবং প্রধান হিসাবে নিযুক্ত হন। দুই বছর পর, তিনি পিএইচডি করার জন্য ক্যামব্রিজ বিশ্ববিদ্যালয়ে ফিরে গেলেন। ১৯৫৯ সালে তিনি পিএইচডি থেসিস শিরোনাম “দ্যা চয়েজ অফ টেকনিকস” জমা দেন।
১৯৬১ সাল থেকে ১৯৭২ সাল পর্যন্ত তিনি দিল্লী স্কুল অফ ইকোনমিক্সের অধ্যাপক ছিলেন। এরপর ১৯৭৭ সাল থেকে ১৯৮৮ সাল পর্যন্ত অক্সফোর্ড বিশ্ববিদ্যালয়ে, ১৯৮৮ থেকে ১৯৯৮ সাল পর্যন্ত হার্ভার্ড বিশ্ববিদ্যালয়ে অধ্যাপক হিসাবে অর্থনীতি ও দর্শন পড়িয়েছেন।
১৯৭০ সালে তার প্রথম গ্রন্থ ‘Collective Choice and Social Welfare’ (সামগ্রিক আগ্রহ এবং সামাজিক উন্নয়ন) যা মৌলিক কল্যাণ, সাম্যতা এবং স্বতন্ত্র অধিকার, ন্যায়বিচার বিষয়গুলিকে সম্বোধন করে। যা তার অন্যতম প্রভাবশালী মনোগ্রাফ হিসাবে বিবেচিত। যার কারণে গবেষকদের মনোযোগ বুনিয়াদি কল্যাণের দিকে যায় এবং তারা এর থেকে অনুপ্রেরণা পান। ১৯৭৩ সালে তার প্রকাশিত বই ‘On Economic Inequality’ (অর্থনীতিতে অসমতা)। বইটি অর্থনৈতিক বৈষম্যের অধ্যয়নের সাথে সম্পর্কিত কল্যাণ অর্থনীতি তত্ত্বের একটি গবেষণা।
অন্যান্য কিংবদন্তিদের সম্পর্কে জানতে নীচে ক্লিক করুনঃ
- নেতাজির জীবন কাহিনীঃসুভাষ চন্দ্র বসুর জন্ম কাহিনী
- ঈশ্বরচন্দ্র বিদ্যাসাগরের জীবনী কাহিনী জেনে নিন
- রাজা রামমোহন রায় শৈশব, পারিবার, কর্মজীবন
- জগদীশ চন্দ্র বসু শৈশব, শিক্ষা, কর্মজীবনের কাহিনী
- শরৎচন্দ্র চট্টোপাধ্যায় শৈশব, পরিবার, কর্মজীবন
- বঙ্কিমচন্দ্র চট্টোপাধ্যায় শৈশব, কর্মজীবন, সাহিত্যে জীবন
- যামিনী রায় শৈশব, পরিবার, কর্মজীবন
- আচার্য প্রফুল্ল চন্দ্র রায় শৈশব, শিক্ষা, কর্মজীবন
- কাজী নজরুল ইসলাম শৈশব, শিক্ষা, কর্ম, বৈবাহিক জীবন
- প্রশান্ত চন্দ্র মহলানবিশ শৈশব, শিক্ষা ও কর্মজীবন
- সত্যেন্দ্রনাথ বসু শৈশব, কর্মজীবন এবং ব্যক্তিগত জীবন
- মাদার টেরেসা শৈশব, প্রাথমিক এবং কর্মজীবন
- অরবিন্দ ঘোষ শৈশব, শিক্ষা, পরিবার এবং কর্মজীবন
- সিস্টার নিবেদিতা প্রাথমিক জীবন এবং কর্মজীবন
- রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর এর শৈশব এবং কর্মজীবনের কাহিনী
- রামকৃষ্ণ পরমহংস দেবের জীবন কাহিনী
- রানি রাশমণি দাশীর শৈশব এবং কর্মজীবন
- ছাত্রছাত্রীদের জন্য স্বামী বিবেকানন্দের রচনা
১৯৮২ সালে প্রকাশিত নিবন্ধ ‘দারিদ্র্য ও দুর্ভিক্ষ’। এই নিবন্ধটিতে খাদ্য সরবরাহের অপ্রতুলতার কারণ, অপুষ্টি এবং দুর্ভিক্ষ বিশ্লেষণের কারণ তুলে ধরেছিলেন। ১৯৮৭ সালে তার প্রকাশিত “নীতিশাস্ত্র ও অর্থনীতিতে” (‘On Ethics and Economics’)। এটি একটি সমালোচনামূলক রচনা ছিল। কল্যাণ অর্থনীতি এবং আধুনিক নীতিশাস্ত্রের পড়াশোনা একে অপরকে উপকৃত করতে পারে এই যুক্তি তুলে ধরা হয়েছিল।
১৯৯০ সালে সালে নিউইয়র্ক রিভিউ অফ বইয়ের জন্য তিনি একটি প্রবন্ধ লিখেছিলেন যার শিরোনাম “১০ কোটির অধিক নারীকে খুঁজে পাওয়া যাচ্ছে না” (More Than 100 Million Women Are Missing)।
১৯৯২ সালে হার্ভার্ড বিশ্ববিদ্যালয় প্রেস দ্বারা প্রকাশিত তার অসমতার পুনঃপরীক্ষণ বইটি অসমতার ধারণার পরীক্ষা করে এবং মূলত সামর্থ্য পদ্ধতির উপর দৃষ্টি নিবদ্ধ করে।
১৯৯৯ সালে তিনি “আন্তর্জাতিক উন্নয়ন এবং “উন্নয়নমূলক অর্থনীতি” ধারণার উপর আলোকপাত করেছিলেন। উন্নয়ন ও স্ব-ক্ষমতা (Development as Freedom) শিরোনাম একটি বই প্রকাশ করে। ২০০২ সালে তার বইয়ের শিরোনাম ছিল যৌক্তিকতা ও স্বাধীনতা (Rationality and Freedom) যা দুটি ভাগে বিভক্ত করেছিল যৌক্তিকতা, স্বাধীনতা এবং ন্যায়বিচার।
২০০৫ সালে তার জনপ্রিয় বই “তর্কপ্রিয় ভারতীয়” (The Argumentative Indian) প্রকাশিত হয়েছিল। বইটিতে ভারতের ইতিহাস, পরিচয়, সমসাময়িক ভারত এবং যুক্তিতর্ক ঐতিহ্য ফুটিয়ে তুলেছিল। ২০০৯ সালে অ্যালেন লেন এবং হার্ভার্ড বিশ্ববিদ্যালয় প্রেস দ্বারা ‘ন্যায়বিচারের ধারণা’ (The Idea of Justice) বইটি প্রকাশিত হয়। বইটি অর্থনৈতিক যুক্তির উপর একটি হাইলাইট করা হয়েছিল।
তিনি হার্ভার্ড বিশ্ববিদ্যালয় অর্থনীতি ও দর্শন বিভাগের অধ্যাপক এবং টমাস ডব্লিউ ল্যামন্ট বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক হিসাবেও কাজ করছেন।
অমর্ত্য সেন সমাজে দারিদ্র্যসীমার নিচে বাসকারী সংখ্যাকে দারিদ্র্যের মান হিসাবে বিবেচনা করেছিলেন এবং যে কোনও সম্প্রদায়ের দারিদ্র্যের মাত্রা মাপার জন্য একটি জটিল সূচকও তৈরি করেছিলেন।
তাঁর প্রকাশনা ‘স্বাধীনতার মতো উন্নয়ন’ (Development as Freedom) অর্থনৈতিক উন্নয়ন তত্ত্বের ক্ষেত্রে গুরুত্বপূর্ণ অবদান ছিল যার জন্য তিনি নোবেল পুরস্কার লাভ করেছিলেন।
১৯৯২ সালে তার ‘অসাম্যতা পুনরায় পরীক্ষিত’ (Inequality Reexamined) একটি প্রশংসিত বই। যা এক দশকের তার কাজের সমস্ত গুরুত্বপূর্ণ থিমকে একত্রিত করেছে। এই বইয়ে তিনি অসমতার কয়েকটি গুরুত্বপূর্ণ উদ্বেগকে সম্বোধন করেছেন।
পুরস্কার ও সম্মান (Awards and honors):
- ১৯৫৪ সালে, তিনি অ্যাডাম স্মিথ পুরষ্কার পেয়েছিলেন।
- ১৯৮৮ সালে তিনি ‘কল্যাণমূলক অর্থনীতির’ ক্ষেত্রে অবদানের জন্য অর্থনৈতিক বিজ্ঞানের নোবেল মেমোরিয়াল পুরস্কার পান।
- ১৯৯৯ সালে তাঁকে ভারতরত্ন দেওয়া হয়েছিল, এটি ‘ভারতের সর্বশ্রেষ্ঠ পুরস্কার।
- ২০১১ সালে তিনি ন্যাশনাল হিউম্যানিটিস মেডেল পান।
অমর্ত্য সেনের ব্যক্তিগত জীবন (Amartya Sen’s Personal Life):
তার প্রথম স্ত্রী নবানীতা দেব সেন। যার দুটি সন্তান অন্তরা সেন এবং নন্দনা সেন। তবে তাদের বিবাহ বিচ্ছেদ হয়ে যায় ১৯৭১ সালে। ১৯৭৩ সালে তিনি আবার বিয়ে করেন এভা কলোর্নি। এবং তাদের দুটি সন্তান ছিল। ১৯৮৫ সালে তিনি ক্যান্সারে মারা যান। দ্বিতীয় স্ত্রী মারা গেলে ১৯৯১ সালে তিনি এমা জর্জিনা বিয়ে করেন।
সারকথাঃ
এই প্রশংসিত ভারতীয় ভারতরত্ন পুরষ্কার এবং লেখক প্রায় 50 বছর ধরে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে স্থায়ী বাসিন্দা হলেও তিনি ভারতীয় নাগরিকত্ব বজায় রাখতে চান।
সচরাচর জিজ্ঞাস্য প্রশ্ন উত্তরঃ
প্রঃ অমর্ত্য সেন কবে জন্মগ্রহণ করেন?
উঃ অমর্ত্য সেন ১৯৩৩ সালে ৩ রা নভেম্বর জন্মগ্রহণ করেছিলেন।
প্রঃ অমর্ত্য সেন কোথায় জন্মগ্রহণ করেছিলেন?
উঃ অমর্ত্য সেন শান্তিনিকেতন জন্মগ্রহণ করেন।
প্রঃ অমর্ত্য সেনের বাবার নাম কি?
উঃ অমর্ত্য সেনের বাবার নাম আশুতোষ সেন।
প্রঃ অমর্ত্য সেনের মায়ের নাম কি?
উঃ অমর্ত্য সেনের মায়ের নাম অমিতা সেন।
প্রঃ অমর্ত্য সেন কবে ভারত রত্ন পান?
উঃ ১৯৯৯ সালে অমর্ত্য সেন ভারত রত্ন পান।