আপনি কি কোন ব্যবসায় বিনিয়োগ করার কথা ভাবছেন? যেখানে আপনি ভালো উপার্জনের পথ পাবেন। তাহলে শেয়ার বাজার একটি ভালো বিনিয়োগের সর্বত্তোম মাধ্যম হতে পারে। অনেকেই শেয়ার বাজার পতনের ফলে আস্থা হারিয়ে ফেলেছে। কিন্তু শেয়ার বাজার আবার পুনরায় অগ্রগতি হচ্ছে দিনের পর দিন। অল্প পুঁজি দিয়ে এই ব্যবসায় আপনি বিনিয়োগ করতে পারেন। শেয়ার বাজারের আর্থিক লেনদেন হয় ব্যাংকের মাধ্যমে। কিন্তু তার আগে আপনাকে শেয়ার বাজারে বিনিয়োগ করার সঠিক পদ্ধতি জেনে নিতে হবে। শেয়ার বাজারে সম্পর্কে সম্পূর্ণ জ্ঞান না থাকলে শেয়ারের পুঁজি হারাতে পারেন। কিন্তু কীভাবে করবেন শেয়ার বাজারে বিনিয়োগ? তাই নীচে শেয়ার বাজারে বিনিয়োগের কিছু আলোচ্য বিষয় রইল –
সূত্র :- moneycrashers . com
শেয়ার বাজারে বিনিয়োগ এর পদ্ধতি
1. মৌলিক জ্ঞানঃ
অনেক সময় দেখা যায়, বন্ধু বান্ধবদের কথায় বা সহকর্মীদের কথায় অন্ধ বিশ্বাস হয়ে শেয়ার বাজারের বিনিয়োগ করার সিধান্ত করেন অনেকেই। এটা পতনের মূল কারণ। বিনিয়োগ করার আগে এটার সমন্ধে মৌলিক জ্ঞান থাকা উচিত পাশাপাশি আপনার আর্থিক লক্ষ্য অনুযায়ী বিনিয়োগ করা উচিত।
প্রাথমিক উপার্জনের থেকে শিক্ষা বেশি গুরুত্বপূর্ণ।
2. সঠিক কৌশলঃ
আমরা অনেক সময় শুনে থাকি অধিকাংশ বিনিয়োগকারীরা শেয়ার বাজারে বিনিয়োগের মাধ্যমে তাদের ভাগ্য তৈরি করছেন। অনেকের ভ্রান্ত ধরনা, শেয়ার বাজার মানেই অর্থ উপার্জনের যন্ত্র। কিন্তু আপনারা হয়তো ভুলে যাচ্ছেন, অনেক মানুষই এই বাজারে বিনিয়োগে সমগ্র সম্পদ হারিয়েছেন।
তবে এটা সত্যি বেশীরভাগ মানুষ তাদের ভাগ্যের চাকা খুলেছেন এই বাজারে নিযুক্ত হয়ে। এটা কেবল মাত্র সম্ভব হয়েছে বিনিয়োগের সঠিক কৌশল সম্পর্কে জ্ঞান থাকার দরুন।
3. কোম্পানি নির্বাচন করুনঃ
শেয়ার বাজারে বিনিয়োগ করার পূর্বে একটি কোম্পানি নির্বাচন করার সিধান্ত গ্রহণ করুন।সেই কোম্পানিটি বিস্তারিত খবর জানুন। তাদের শেয়ারের অবস্থা, লাভ- ক্ষতির হিসাব খবর রাখুন।
- ৫ টি জিনিস যা ভারতের অর্থনৈতিক অবস্থা সম্পর্কে ধারণা দেবে
- অর্থনৈতিক উন্নয়ন কাকে বলে ও উদাহরণস্বরূপ
- বর্তমান আর্থিক বাজারঃ স্টক মার্কেটে শেয়ার কীভাবে কেনা বেচা হয়
- আর্থিক স্টক মার্কেট এ ন্যাশনাল স্টক ও বোম্বে স্টক এক্সচেঞ্জের ভূমিকা
- বর্তমান আর্থিক বাজারের ভূমিকা ও শ্রেণীবিভাগ
- বাজার অর্থনীতির বৈশিষ্ট্যঃ মুক্ত বাজারে অর্থনীতির বৈশিষ্ট্য
4. প্যান কার্ড ও আধার কার্ডঃ
শেয়ার বাজারে বিনিয়োগ এর জন্য প্রথমেই যেটা প্রয়োজন, সেটা প্যান ও আধার কার্ড। বিনিয়োগের জন্য এই দুটি থাকা বাধ্যতামূলক। সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ বোর্ড অফ ইন্ডিয়া ( সেবি ) সঙ্গে একাউন্ট খোলার জন্য এটি প্রয়োজন।
5. ব্রোকার নির্বাচন করুনঃ
আপনি সরাসরি শেয়ার বাজারে শেয়ার কেনা বেচা করতে পারবেন না। শেয়ার ক্রয় ও বিক্রয়ের জন্য প্রয়োজন একজন ব্রোকারের বা দালালের। তারা শেয়ার কেনা- বেচার মধ্যস্থ্যকারী হিসাবে কাজ করে।
ব্রোকার সেই ব্যক্তি, যে কোম্পানি বা সংস্থার সঙ্গে রেজিস্টার এবং সেবি দ্বারা স্টক এক্সচেঞ্জে ব্যবসার করতে অনুমোদিত করে। এর জন্য নির্দিষ্ট সময়ে ব্রোকারদের ব্রোকারেজ চার্জ প্রদান করতে হয়।
সূত্র :- marketwatch . com
6. ডিম্যাট বা ট্রেডিং অ্যাকাউন্ট খোলাঃ
শেয়ার কিনতে বা বিক্রি করতে আপনার ডিম্যাট বা ট্রেডিং অ্যাকাউন্টের প্রয়োজন। আপনার নামের অ্যাকাউন্টে ব্রোকারের মাধ্যমে যে শেয়ারগুলি আপনি বাজার থেকে কেনেন, সেগুলি ডিম্যাট অ্যাকাউন্ট সঞ্চয় করে রাখে।
এখান থেকে আপনি বিক্রিও করতে পারেন। এবং এটি সময় মতো শেয়ারগুলি প্রতিফলিত করবে।
7. লিভারেজ এড়িয়ে চলুনঃ
লিভারেজ মানে হল শেয়ার বাজার কৌশল চালানোর জন্য ধার করা অর্থ ব্যবহার করা। একটি মার্জিন অ্যাকাউন্টে, ব্যাংক এবং ব্রোকারেজ সংস্থাগুলি আপনাকে স্টক কেনার জন্য অর্থ ঋণ দিতে পারে।
যখন শেয়ার বাজার মূল্য যখন ওপরে ওঠে, তখন দুর্দান্ত বলে মনে হয়। কিন্তু যখন স্টক ডাউনও হতে পারে। সেদিক বিবেচনা করে দেখলে আপনার ক্ষতি শুধুমাত্র প্রাথমিক বিনিয়োগকে নষ্ট করবে না। উপরন্তু ব্রোকারদের সুদ দিতে হবে। লিভারেজও ঠিক তেমনি একটি যন্ত্র যেটি ভালো ও খারাপ দুটির সম্বন্ধয়। সিধান্ত গ্রহণ করার অভিজ্ঞতা ও আস্থা অর্জন করার পরে এটা ব্যবহার করা সর্বোত্তম।
8. কেনা- বেচা শুরু করুনঃ
শেয়ার কিনতে বা বিক্রি করার জন্য, যে পরিমাণ লেনদেন চালাতে চান, তা ব্রোকারকে জানাতে হবে। শেয়ার বাজারে বিনিয়োগের উপায়গুলি নীচে রইল-
• আপনার বিনিয়োগের প্রয়োজন বুঝতে হবে এবং সেই অনুযায়ী সিধান্ত নিন।
• সঠিক সময়ে শেয়ার বিনিয়োগের জন্য প্রবেশ করুন। যখন মার্কেটের অবস্থা খারাপ চলবে, তখন সর্বনিম্ন দামে শেয়ার কিনুন এবং যখন শেয়ারের দাম বৃদ্ধি পাবে, সেই সময় শেয়ারগুলি বিক্রি করুন।
• বিনিয়োগ করার জন্য সঠিক লক্ষ্য ও পরিকল্পনা নির্বাচন করুন। আপনার বিনিয়োগের সঙ্গে সামঞ্জস্য বজায় রাখতে পারবে এমন স্টক খুঁজে বের করুন।
• ব্যবসা করা জন্য প্রয়োজনীয়তাগুলির জন্য ব্রোকারদের সঙ্গে যোগাযোগ করা উচিত। নিয়মিত পোর্টফলিওগুলি নিরীক্ষণ করুন।
সারকথাঃ
শেয়ার বাজারে লাভ ও ক্ষতি উভয় বিরাজমান। তাই সঠিক সিধান্ত নিয়ে এগিয়ে চলা উচিত।