টিউমার চিকিৎসা: ব্রেইন টিউমার কি, লক্ষণ এবং চিকিৎসা

টিউমার চিকিৎসা

সূত্র :- static.medmonks . com

ব্রেইন টিউমার একটি ভয়ংকর রোগ। এটি মস্তিষ্কের কোষে অস্বাভাবিক পদ্ধতিতে বৃদ্ধি ঘটে। ব্রেইন টিউমার থেকে ক্যান্সারও হতে পারে। টিউমার যখন আমাদের মাথার ভিতরে অবস্থান করে তখন তাকে ব্রেইন টিউমার বলা হয়। যখন মাথায় এই টিউমার বৃদ্ধি পায় তখন মস্তিষ্কের ভিতরে চাপ বেড়ে যায় যা মস্তিষ্ককে ক্ষতিগ্রস্থ করে। তাই সঠিক সময়ে ব্রেইন টিউমার চিকিৎসা করা প্রয়োজন। তবে তার আগে আপনাকে জানতে হবে ব্রেইন টিউমার কি, এটি কেন হয় এবং এর লক্ষণগুলি কি কি।

আজকের এই নিবন্ধে আমরা আপনাদের ব্রেইন টিউমার কি, কেন হয়, লক্ষণ এবং ব্রেইন টিউমার চিকিৎসা সম্পর্কে আলোচনা করব।

ব্রেইন টিউমার কি?

ব্রেইন টিউমার কি

সূত্র :- upload.wikimedia . org

ব্রেইন টিউমার মস্তিষ্কে কোষের সংগ্রহ বা বস্তু। যখন কোষের অস্বাভাবিক ভাবে বেড়ে যায় তখন ব্রেইন টিউমার সৃষ্টি হয়। ব্রেইন টিউমার দুই ধরণের হয়। এক হল ক্যান্সারযুক্ত অর্থাৎ ম্যালিগন্যান্ট আরেকটি ক্যান্সারহীন অর্থাৎ বিনাইন। ম্যালিগন্যান্ট ব্রেইন টিউমার বৃদ্ধি পেলে তা মস্তিষ্কের ভিতরে চাপ বাড়িয়ে তোলে। এটা আমাদের জন্য মারাত্মক ক্ষতি হতে পারে।

ব্রেইন টিউমার কেন হয়?

ব্রেইন টিউমার কেন হয়

সূত্র :- verywellhealth . com

টিউমার বিভিন্ন কারণের জন্য হতে পারে। ব্রেইন টিউমার তখনি হয় যখন মস্তিষ্কের স্বাভাবিক কোষগুলির ডিএনএ তে কোন ত্রুটি থাকলে।। শরীরের কোষগুলি ক্রমাগত বিভক্ত হয়ে যায় এবং মরে যায়। যার পরিবর্তে অন্য কোষ সৃষ্টি হয়। অনেক ক্ষেত্রে নতুন কোষ সৃষ্টি হয়ে যায় তবে দেখা যায় পুরনো কোষগুলি সম্পূর্ণভাবে বিন্যাস হয় না। যার ফলে এই কোষগুলি জমাট বেঁধে টিউমারের হওয়ার সম্ভবনা থাকে। আবার অনেক সময় বংশগত কারণে ব্রেইন টিউমার হয়ে থাকে। অর্থাৎ বাবা, মা বা আত্মীয় কারো ব্রেইন টিউমার থাকলে।

সারকথাঃ

সঠিক সময়ে ব্রেইন টিউমারের চিকিৎসা করালে রোগীর সুস্থ হওয়ার সম্ভবনা থাকে।

ব্রেইন টিউমারের লক্ষণঃ

Sources: instagram

যখন মাথায় টিউমার সৃষ্টি হয় তখন কয়েকটি লক্ষণ দেখা যায়। এই লক্ষণগুলি দেখলে আমরা বুঝতে পারি ব্রেইন টিউমারের লক্ষণ। ব্রেইন টিউমারের আকার, অবস্থান এবং উচ্চতার উপর নির্ভর করে ভিন্ন ধরণের লক্ষণ দেখা যায়। নীচে এই লক্ষণগুলি দেখলে অবশ্যই আপনার ডাক্তারের পরামর্শ নেওয়া দরকার।

  • মাথা ব্যথা প্রায় সবার কম-বেশি হয়ে থাকে। তবে সব ধরণের ব্যথা টিউমারের লক্ষণ নয়। ব্রেইন টিউমার হলে তীব্র মাথা ব্যথা হয় এবং তা সহ্য ক্ষমতার বাইরে চলে যায়। এই ধরণের মাথা ব্যথা টিউমারের একটি সাধারণ লক্ষণ। ব্রেইন টিউমারের মাথা ব্যথা সাধারণত সকালের দিকে হয় এবং পরে তা ক্রমাগত হতে থাকে। এছাড়াও রাতে শোয়ার সময় পর্যন্ত ব্যথা থাকে।
  • কোন কারণ ছাড়া বমি হওয়া এবং তীব্র মাথাব্যথার সঙ্গে বমি ভাব ব্রেইন টিউমারের লক্ষণ হতে পারে।
  • কথা বলতে অথবা শুনতে সমস্যা হলে।
  • ব্রেইন টিউমার হলে মাথা ঘোরায় যার ফলে পড়ে যাওয়ার সম্ভবনা থাকে। ব্রেইন টিউমার হলে রোগী শরীরের ভারসাম্য বজায় রাখতে পারে না এবং পড়ে যায়।
  • ব্যক্তির আচরণে পরিবর্তন দেখা যায়।
  • ভুলে যাওয়া ব্রেইন টিউমারের লক্ষণ হিসাবে ধরা হয়।
  • ঘন ঘন রেডিয়েশন অথবা এক্স-রে নেওয়া হলে এই রোগের সমস্যা দেখা দিতে পারে।

টিউমার রোগের লক্ষণ তাহলে নিশ্চয়ই কিছুটা বুঝতে পারলেন। এইধরনের লক্ষণ দেখা দিলে অবহেলা না করে চিকিৎসা করানো প্রয়োজন। লক্ষণ তো আমরা দেখলাম, এবার আমরা ব্রেইন টিউমার চিকিৎসা সম্পর্কে আপনাদের জানাব।

ব্রেইন টিউমার চিকিৎসা: –

ব্রেইন টিউমার চিকিৎসা

সূত্র :- e3.365dm . com

ব্রেইন টিউমার চিকিৎসা নির্ভর করে টিউমারের আকার, অবস্থান এবং ধরণের উপর। যেমন, ম্যালিগন্যান্ট ব্রেইন টিউমারের সাধারণ চিকিৎসা হল সার্জারি। এটি ব্রেইনের কোন অংশ ক্ষতি না করে ক্যান্সার অপসারণে সহায়তা করে। কিছু টিউমার এমন জায়গায় থাকে যেগুলো অপসারণ করা সহজ আবার কিছু এমন জায়গায় অবস্থান করে যেগুলি সরানো কঠিন হয়ে পড়ে। সার্জারিতে কিছু ঝুঁকি রয়েছে যেমন ইনফেকশন এবং রক্তক্ষরণ। বিনাইন টিউমার অস্ত্রোপচার মাধ্যমে অপসারণ করা হয়।

সারকথাঃ

সার্জারি অন্যান্য চিকিৎসার সাথে যৌথ যেমন রেডিয়েশন থেরাপি এবং কেমোথেরাপি।

ব্রেইন টিউমার কিভাবে প্রতিরোধ করা যায়?

ব্রেইন টিউমার কিভাবে প্রতিরোধ করা যায়

সূত্র :- sabclinic . com

ব্রেইন টিউমার হলে আমাদের চিকিৎসার হাত ধরতেই হবে। তবে আমরা এই রোগের হাত থেকে নিজেদের বাঁচাতে পারি একটু সতর্কতা মেনে চললে। ব্রেইন টিউমারের হাত থেকে বাঁচতে আপনি নীচের এই সমস্ত জিনিসগুলির উপর আপনাকে একটু খেয়াল রাখতে হবে।

  • ব্রেইন টিউমারের হাত থেকে বাঁচতে আমদের প্রত্যেকের উচিত অতিরিক্ত স্ট্রেস না নেওয়া।
  • নিয়মিত ৭-৮ ঘণ্টা গভীরভাবে ঘুমানো।
  • রেডিয়েশন থেকে দূরে থাকা।
  • অতিরিক্ত পরিমাণ জাঙ্ক ফুড খাওয়া পরিহার করা এবং পুষ্টিকর খাদ্য গ্রহণ করা।
  • ধূমপান, নেশা বা অ্যালকোহল ত্যাগ করা।
  • নিয়মিত প্রচুর পরিমাণে জল পান করা।
  • নিয়মিত ব্যায়াম করা। কারণ নিয়মিত ব্যায়াম আমাদের বিভিন্ন রোগের থেকে আমাদের সুস্থ রাখতে সহায়তা করে।
  • দীর্ঘক্ষণ মোবাইল এবং কম্পিউটারের সামনে না থাকা।

তাহলে আজকের এই নিবন্ধ থেকে আশা করি আপনারা অনেক তথ্য পেয়ে গেছেন। নিজেকে এই ভয়ংকর রোগের হাত থেকে বাঁচানোর জন্য একটু সতর্ক হন। আর টিউমারের এই লক্ষণগুলি নজরে এলে এড়িয়ে না গিয়ে সময়মত চিকিৎসা করান এবং সুস্থ থাকুন।

সারকথাঃ

ব্রেইন টিউমার দুটি শ্রেণীতে বিভক্ত। প্রাইমারী এবং সেকেন্ডারি। প্রাইমারী মস্তিষ্কেই বৃদ্ধি পায় এবং সেকেন্ডারি ফুসফুস, কিডনি এবং পাকস্থলীর সঙ্গে মাথায় ছড়িয়ে পড়ে।

Leave A Reply

Please enter your comment!
Please enter your name here