ঘরোয়া পদ্ধতিতে ঘাড়ে ব্যাথার চিকিৎসা

ঘাড়ে ব্যাথার চিকিৎসা

যত দিন যাচ্ছে মানুষের শরীরে রোগ ব্যাধি বাসা বাঁধছে। এমন মানুষ খুব কম দেখা যায় যার শরীরে কোন রোগ নেই। বিভিন্ন সময় আমরা বিভিন্ন রোগের নাম শুনে থাকি। ঠিক তেমনি একটি খুব পরিচিত একটি রোগ ঘাড়ে ব্যথা। আজকাল প্রায় অধিকাংশ মানুষ এই ব্যথায় সমস্যার মধ্যে পড়ছে। ঘাড়ে ব্যাথার চিকিৎসা করেও অনেক সময় কোন লাভ হয় না। তবে কিছু ঘরোয়া টোটকা রয়েছে যা চিকিৎসা করার পাশাপাশি অনুশীলন করলে আমরা এই ব্যথা কিছুটা কম করতে পারি।

ঘাড়ে ব্যথা এমন একটি সমস্যা যা অনেক সময় সহ্য ক্ষমতার বাইরে চলে যায়। এটি বিভিন্ন কারণের জন্য হতে পারে। তবে সঠিক সময়ে আমরা এর চিকিৎসা না করালে অনেক বড় ক্ষতির মুখে পড়তে পারি। তাই আজকের এই নিবন্ধে আমরা ঘাড়ে ব্যথার কিছু ঘরোয়া চিকিৎসার কথা আপনাদের জানাব যা অনুশীলন করলে আশা করি ব্যথা থেকে আরাম পাবেন। আসুন তাহলে দেখে নিই ঘরোয়া পদ্ধতিতে ঘাড়ে ব্যাথার চিকিৎসা করানোর উপায়।

আরও পড়ুনঃ আর্থ্রাইটিস কি, রোগের লক্ষণ এবং ব্যথা কমানোর চিকিৎসা

ঘাড়ে ব্যথা কেন হয়?

ঘাড়ে ব্যথা কেন হয়?

ঘাড়ে ব্যথা আমাদের বিভিন্ন কারণে হতে পারে। যেমন ভুল পদ্ধতিতে বিছানায় শোয়ার কারণে, নরম গদিতে শোয়ার কারণে, দীর্ঘক্ষণ একভাবে ঘাড় উচু করে কাজ করার কারনে হয়ে থাকে। এছাড়াও ঘাড়ে চোট লাগলে অথবা মাংসপেশিতে স্ট্রেস ঘাড়ে ব্যথার কারণ।

রিউমাটয়েড আর্থ্রাইটিস কারণে জয়েন্ট ফুলে যায়। যার ফলে ঘাড়ে ব্যথা হয়। স্পনডাইলাইটিস কারণে ঘাড়ে ব্যথা হয়। এটি বাড়তে না দিয়ে শুরু থেকেই এর চিকিৎসার প্রয়োজন। থেরাপি ঘাড়ে ব্যথার জন্য ভালো চিকিৎসা। পাশাপাশি ঘরোয়া কিছু উপায়ে এই ব্যথা থেকে মুক্তি পাওয়া সম্ভব।

ঘাড়ে ব্যাথার চিকিৎসা করানোর জন্য ঘরোয়া টোটকাঃ

ঘাড়ে ব্যাথার চিকিৎসা করানোর জন্য ঘরোয়া টোটকাঃডাক্তারের পরামর্শের পাশাপাশি ঘাড়ে ব্যথার ঘরোয়া টোটকাগুলি অনুশীলন করলে ঘাড়ে ব্যথা থেকে মুক্তি পেতে পারি।

আরও পড়ুনঃ টিউমার চিকিৎসা: ব্রেইন টিউমার কি, লক্ষণ এবং চিকিৎসা

  1. ঘাড়ে ব্যাথার চিকিৎসায় আপেল সাইডার ভিনিগারঃ

আপেল সাইডার ভিনিগারঃ

আপেল ভিনেগার হ’ল ঘাড়ে ব্যথার চিকিৎসার সেরা ঘরোয়া প্রতিকার। এতে উপস্থিত অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট এবং অ্যান্টি-ইনফ্ল্যামেটরি বৈশিষ্ট্য ঘাড়ের পেশীগুলির স্ট্রেস হ্রাস করে এবং ব্যথা উপশম করে।

ঘাড়ে ব্যথা থেকে মুক্তি পেতে একটি টিস্যু পেপার আপেল সাইডার ভিনিগারে ভিজিয়ে নিন। এবার টিস্যুটিকে এক ঘণ্টা ঘাড়ে উপরে রেখে দিন। দিনে দুইবার এই পদ্ধতি অনুশীলন করে দেখুন যতক্ষণ না পর্যন্ত ঘাড়ে ব্যথা কমছে।

আরও পড়ুনঃ হার্ট ভালো রাখতে নিয়মিত হার্টে ভালো রাখার ব্যায়াম

  1. ঘাড়ে ব্যথার চিকিৎসায় যোগাসনঃ

ঘাড়ে ব্যথার চিকিৎসায় যোগাসনঃ

ঘাড়ে ব্যথা কমানোর সবচেয়ে সেরা চিকিৎসা হল শরীরচর্চা। নিয়মিত কয়েকটিও যোগাসন করলে আপনি ঘাড়ের বাথা থেকে খুব সহজেই মুক্তি পেতে পারেন। ডাক্তাররা আজকাল ঘাড়ে ব্যথার জন্য যোগাসন করার পরামর্শ দিয়ে থাকেন। ঘাড়ে ব্যথার ঘরোয়া যোগ আসনগুলো হল-

  • ভরদ্বাজাসন ঘাড় এবং কাঁধে ব্যথা উপশম জন্য খুব কার্যকর যোগ আসন।
  • বালাসন একটি চাইল্ড পোজ। এই আসনটি আপনার ঘাড় এবং পিছন প্রসারিত করবে। যা ঘাড়ে ব্যথার চিকিৎসার জন্য উপযোগী।
  • সাবাসন নিয়মিত অনুসরণ করলে ব্যথা থেকে মুক্তি পাওয়া সম্ভব।

আরও পড়ুনঃ ঘরোয়া পদ্ধতিতে ক্যাভিটি দূর করার উপায়

  1. ঘাড়ে ব্যথার চিকিৎসায় বরফঃ

ঘাড়ে ব্যথার চিকিৎসায় বরফঃ

যেকোনো ব্যথা উপশমে বরফ খুব কার্যকর উপাদান। এটি একটি অসাধারণ ঘরোয়া টোটকা। বরফ ঘাড়ের ফোলাভাব কমাতে সহায়তা করে এবং ব্যথা কিছুটা কম হয়। একটি তোয়ালের মধ্যে কিছু বরফের টুকরো নিয়ে ঘাড়ের ব্যথা অংশে কিছুক্ষণের জন্য রেখে দিন আরাম পাবেন। অথবা আপনি আইস প্যাকও ব্যবহার করতে পারেন।

আরও পড়ুনঃ ওভারি সিস্ট হওয়ার লক্ষণ কারণ, লক্ষণ এবং চিকিৎসা

  1. ঘাড়ে ব্যথার চিকিৎসা জন্য ব্যায়ামঃ

ঘাড়ে ব্যথার চিকিৎসা জন্য ব্যায়ামঃ

ব্যায়াম ঘাড়ের ব্যথা উপশম করতে সহায়তা করে। নিয়মিত ব্যায়াম অনুশীলন করলে ঘাড় নমনীয় এবং মজবুত হয়। পেটের পেশীগুলিতে সমস্যা দেখা দিলে শরীরের উপরের অংশটি পিছনের দিকে ঘুরতে সক্ষম হয় না, যার ফলে ঘাড়ে সমস্যার সৃষ্টি হয়। এই অবস্থায় ব্যায়াম আপনার ঘাড়ের বেদনা কমাতে সক্ষম।

ঘাড়ে ব্যাথার এই ব্যায়াম নিয়মিত করলে সহজেই এই ব্যথা থেকে আরাম পাওয়া যায়। ব্যায়ামটি করার জন্য প্রথমে আপনার মাথাটি সামনে এবং পিছনে দিকে কাত করুন এবং তারপরে ডান এবং বাম দিকে কাত করুন। যখন আপনার পেশীগুলির টান কমে যায়, আপনার মাথাটি সম্পূর্ণ ডানদিকে কাত করুন এবং তারপরে এটি সম্পূর্ণরূপে বাম দিকে কাত করুন। এই সময়ে কিছু ব্যথা হতে পারে, তাই এটি এমনভাবে আরাম করে করুন।

এই ভাবে নিয়মিত ১৫-২০ বার পুনরাবৃত্তি করুন কিছুক্ষণ বাদে বাদে।

আরও পড়ুনঃ কিডনি রোগের লক্ষণ এবং প্রতিকার

  1. ঘাড়ে ব্যথা কমাতে মালিশঃ

ঘাড়ে ব্যথা কমাতে মালিশঃ

ম্যাসাজ যে কোনও ধরণের ব্যথা উপশম করতে সহায়তা করে। বেদনাদায়ক অংশে ভালোভাবে মালিশ করলে রক্ত ​​সঞ্চালনের স্বাভাবিক হয়। মালিশের মাধ্যমেও আপনি ঘাড়ে ব্যথা থেকে মুক্তি পেতে পারেন।

প্রথমে উষ্ণ গরম জলে স্নান করে বডি শুকিয়ে নিন। এবার জলপাই বা নারকেল তেল হালকা গরম করে কিছুক্ষণ মালিশ করুন। আপনি সকাল এবং বিকেল দুইবেলা এইভাবে মালিশ করলে উপকৃত হবেন।

ঘাড়ে ব্যথার চিকিৎসা এই ঘরোয়া টোটকাগুলি বাড়িতে ট্রাই করে দেখুন উপকার পাবেন। ডাক্তারের চিকিৎসার পাশাপাশি এই ঘরোয়া টোটকায় ব্যথায় আরাম পাবেন।

সচরাচর জিজ্ঞাস্য প্রশ্ন উত্তরঃ

Q. ঘাড়ে ব্যথা কি ঘরোয়া উপায়ে প্রতিরোধ করা যায়? 

A. হ্যাঁ, তবে খুব গুরুত্বর হলে ডাক্তারের চিকিৎসার পাশাপাশি ঘরোয়া টোটকায় ফল মিলবে।

Q.  বরফ কি ঘাড়ের ব্যথা কমাতে সহায়তা করবে? 

A. ঘাড়ের ফোলাভাব কমাতে সহায়তা করে এবং ব্যথা কিছুটা কম করতে সহায়তা করে।

Q. ঘাড়ে ব্যথার জন্য কি ব্যয়াম করতে হবে? 

A. বালাসন, সাবাসন, ভরদ্বাজাসন করতে পারেন।

Leave A Reply

Please enter your comment!
Please enter your name here