শাহরুখ খানের বায়োগ্রাফি (BIOGRAPHY)
ডাক নাম |
SRK,কিং খান, বাদশাহ |
পেশা |
অভিনেতা, প্রোডিউসার |
জন্ম তারিখ |
২রা নভেম্বর, ১৯৬৫ |
জন্মস্থান |
নয়াদিল্লি |
বয়স |
৫৩ বছর |
স্কুল |
দিল্লির সেন্ট কলম্বা |
কলেজ |
হানসরাজ কলেজ, জামিয়া মিলিয়া ইসলামিয়া বিশ্ববিদ্যালয় |
শিক্ষাগত যোগ্যতা |
BA (hons) |
বাবা |
মীর তাজ মোহাম্মদ |
মা |
লতিফ ফাতিমা |
স্ত্রী |
গৌরি চিব্বার খান |
কন্যা/পুত্র |
আব্রাম এবং আরিয়ান, সুহানা খান |
জাতীয়তা |
ভারতীয় |
উচ্চতা |
৫ফুট ৮ ইঞ্চ |
ওজন |
৭৫ কেজি |
চোখের রঙ |
গাঢ় বাদামী |
চুলের রঙ |
কালো |
শখ |
ক্রিকেট, গ্যাজেট, গেমস খেলা |
রাশি |
বৃশ্চিক |
প্রিয় অভিনেতা |
অমিতাভ বচ্চন, দিলিপ কুমার |
প্রিয় অভিনেত্রী |
মুমতাজ |
প্রিয় খাবার |
তান্দুরি চিকেন |
প্রিয় গাড়ি |
BMW |
প্রিয় রঙ |
নীল, কালো,সাদা |
সূত্র:- bollywoodcat . com
ভারতের বলিউড ইন্ডাস্ট্রি অন্যতম বড় তারকা হলেন বলিউডের সুপারস্টার শাহরুখ খান। তাকে চেনে না এমন কোন মানুষ নেই। তিনি বিভিন্ন নামে আমাদের কাছে পরিচিত। কখনও বলিউড বাদশা কখনও আবার কিং খান। যিনি কয়েক শতাব্দী ধরে বলিউড জগতে শাসন করে চলেছেন। তার অভিনয় ও প্রতিভা মানুষের মন জয় করে নিয়েছে। চলুন না আজ তাহলে এই বিখ্যাত অভিনেতা সম্পর্কে কিছু জেনে নিই। আজ এই নিবন্ধে আপনাদের জন্য রইল শাহরুখ খানের বায়োগ্রাফি।
শাহরুখ খানের বায়োগ্রাফি – শৈশব জীবনঃ
সূত্র:- s3.india . com
১৯৬৫ সালে ২ রা নভেম্বর ভারতের রাজধানী নয়াদিল্লিতে শাহরুখ খান জন্মগ্রহণ করেন। তার পিতা ছিলেন মীর তাজ মোহাম্মদ এবং মা ছিলেন লতিফ ফাতিমা। তার বাবা একজন ভারতীয় মুক্তিযোদ্ধা ছিলেন। জানজুয়া রাজপুত সম্প্রদায় জেনারেল শাহ নওয়াজ খান তার মেয়ে হিসেবে লতিফ ফাতিমাকে এডোপ্ট করেছিলেন। শাহ নওয়াজ খান নেতাজি সুভাষ চন্দ্র বসুর সেনাবাহিনীর দলের একজন সেনা নায়ক ছিলেন। শাহরুখ খানের বড় বোন ছিলেন শেহনাজ। শাহরুখ খান কিং খান হিসাবে পরিচিত সারা ভারতে। কিং খানের শৈশব জীবন কেটেছিল নিউ দিল্লির রাজেন্দ্র নগর এলাকায়।
কিং খান দিল্লির সেন্ট কলম্বা স্কুলে পড়াশুনো করেন এবং তিনি একাডেমিক, খেলাধুলো, নাটকে অংশগ্রহণ করেন। ক্রীড়াপ্রতিযোগিতায় তাকে সোয়ার্ড অফ অনার পুরস্কার দিয়ে সম্মানিত অভিনন্দন জানানো হয়। স্কুল পড়াশুনো শেষ করে ১৯৮৫ সাল থেকে ১৯৮৮ সাল পর্যন্ত হানসরাজ কলেজে পড়াশুনো করে। সেখানে তিনি অর্থনীতিতে স্নাতক ডিগ্রী অর্জন করে। ১৯৮৮ সালে কলেজ থেকে স্নাতক স্তরে ডিগ্রী অর্জন করার পর তিনি জামিয়া মিলিয়া ইসলামিয়া বিশ্ববিদ্যালয়ে পোস্ট স্নাতকস্তর ডিগ্রী অর্জন করে।
তার বাবা মা মারা যাওয়ার পর তিনি ১৯৯১ সালে মুম্বাইয়ে চলে গেলেন। এবং বলিউড ইন্ডাস্ট্রিতে যোগদান করেন। বলিউড ইন্ডাস্ট্রিতে কর্মজীবন শুরু করার আগে তিনি ‘ন্যাশনাল স্কুল অফ ড্রামা’ তে যোগ দেন।
- নেতাজির জীবন কাহিনীঃসুভাষ চন্দ্র বসুর জন্ম কাহিনী
- ঈশ্বরচন্দ্র বিদ্যাসাগরের জীবনী কাহিনী জেনে নিন
- মিমি চক্রবর্তী জীবনীঃ অভিনেত্রী মিমি চক্রবর্তী জীবন কাহিনী
- সৌরভ গাঙ্গুলির জীবনীঃ কেমন ছিল ক্রিকেটের দাদার জীবন?
- আলিয়া ভাটের বায়োগ্রাফিঃ অভিনয় জগতে আলিয়া ভাটের জীবনের গল্প
- সারা আলি খানের জীবনীঃ ছোট থেকে বড় হওয়ার কাহিনী
শাহরুখ খানের বায়োগ্রাফি – ক্যারিয়ার জীবনঃ
সূত্র:- awesomeindia . in
১৯৮৮ সালে ‘দিল দরিয়া’ টেলিভিশন অনুষ্ঠানে মাধ্যমে তিনি প্রথম টেলিভিশন জগতে পা রাখার সুযোগ পান। যদিও এই টেলিভিশন শোটি দেরীতে মুক্তি লাভ করেছিল।
১৯৮৯ সালে আরেকটি ‘ফাউজি’ নামক সিরিজ লঞ্চ করা হয় এবং সেখান থেকে তার টেলিভিশন জগতে নাম ছড়িয়ে পড়ে। ওই সময়ই ‘উমেড’ এবং ‘ওয়াগেল কি দুনিয়া’ নামে টেলিভিশন শো করেন। পাশাপাশি ‘ইন হুইচ এনি গিভস ইট দোস ওয়ানস’ নামে টেলিফিল্ম করেন।
এর পর পরিচালক মানি কুলের সিরিজ ‘ইডিয়ট’ ছবিতে তাকে দেখা যায় । পরে ভারতীয় ফিল্ম ইন্ডাস্ট্রিতে যোগ দেওয়ার স্বপ্নে যোগ দিতে মুম্বাইয়ে চলে যান। ওই একই বছর তিনি চারটি ছবিতে স্বাক্ষর করেন। প্রথমে ‘দিল আসান হ্যায়’ ছবিতে হেমা মালিনীর বিপরীতে অভিনয় করেন। পরিবর্তী সিনেমা ‘দেওয়ানা’ ১৯৯২ সালে মুক্তি পায়। এই ছবিটির পর থেকে তার অভিনয় সবার মনে জায়গা করে নেয়। এই সিনেমাটির জন্য তিনি ফিল্মফেয়ার পুরস্কার প্রাপ্ত হয় এবং তারপর থেকে নিজের প্রতিভার জন্য তাকে পিছন ফিরে দেখতে হয়নি। এরপর একের পর এক হিট ছবি করে প্রচুর ভক্তদের মনে জায়গা করে নিয়েছিলেন। ওই বছরই ‘চমৎকার’, ‘রাজু বান গেয়া জেন্টলম্যান’ সিনেমায় তাকে দেখা যায়।
১৯৯৩ সালে ‘দার’ এবং ‘বাজিগর’ সিনেমায় তাকে বিরোধী নায়কের ভুমিকায় দেখা যায়। ১৯৯৫ সালে একটি ব্লকবাস্টার মুভি রাকেশ রোশনের পরিচালিত ‘করন অর্জুন’ সিনেমায় সুপারস্টার সালমান খানের সঙ্গে পর্দা ভাগ করে নিয়েছিলেন। এই মুভিটি মুক্তি পাওয়ার পর জনগণের মাতামাতি শেষ ছিল না। আজও মানুষের মনে এই সিনেমাটি গেঁথে রয়েছে।
১৯৯৫ সালটি কিং খানের ক্যারিয়ারের জন্য ছিল ট্রার্নিং পয়েন্ট। করন ঐ সালে তার বিখ্যাত সিনেমা যশ রাজের ফিল্ম ‘দিলওইয়ালে দুলহানিয়া লে জায়েঙ্গে’ সিনেমাটি মুক্তি পায়। আর এই সিনেমার কথা নতুন করে বলার বাকি রাখে না। কারণ আজও এই সিনেমাটি এভার গ্রিন। বক্স অফিসে তুমুল সাড়া পেয়েছিল এই ব্লকবাস্টার মুভিটি এবং জনগণের থেকে প্রচুর প্রশংসা অর্জন করেছিল। বলিউড জগতের পূর্ববর্তী সব রেকর্ড ভেঙ্গে নতুন রেকর্ড তৈরি করেছিল। তাই এই মুভিটি ‘সর্বকালীন ব্লকবাস্টার’ হিসাবে স্বীকৃতি পেয়েছিল। ১৯৯৫ সাল থেকে আজ পর্যন্ত মুভি হলগুলিতে এই সিনেমাটি চলে।
১৯৯৬ সালটি শাহরুখ খানের জন্য উপযুক্ত বছর ছিল না। কারণ এই বছরে তার সিনেমা ‘আর্মি’, ‘ইংলিশ বাবু দেশি ম্যান’ এবং ‘ চাহাত’ বক্স অফিসে সেরকম সাফল্যের মুখ দেখতে পায়নি।
১৯৯৭-১৯৯৯ সাল পর্যন্ত তার মুক্তি প্রাপ্ত সিনেমা ‘পারদেস’, ‘দিল তো পাগল হ্যায়’, ‘ডুপ্লিকেট’, ‘দিল সে’, ‘কুচ কুচ হোতা হ্যায়’, ‘বাদশাহ’ সিনেমাতে প্রধান ভূমিকা পালন করে এবং ভারতীয় ফিল্ম জগতে একজন আইকন হয়ে ওঠে। ১৯৯৯ সালে তিনি প্রযোজক রুপে পরিণত হয় এবং জুহি চাওলা সঙ্গে প্রোডাকশন হাউস প্রতিষ্ঠা করে। এই প্রোডাকশন হাউসের প্রথম মুক্তি প্রাপ্ত ছবি ‘ফির ভি দিল হ্যায় হিন্দুস্থানি’। যেখানে জুহি চাওলা বিপরীতে শাহরুখ খানকে দেখা যায়। কিন্তু ২০০০ সালে মুক্তিপ্রাপ্ত ছবিতি বক্স অফিসে সফল হয়নি।
২০০০ সালে যশ রাজ ফিল্ম ‘মহব্বাতে’ মুক্তি পেয়েছিল। এই ছবির বড় পাওয় ছিল ভারতের বিখ্যাত অভিনেতা অমিতাভ বচ্চন। এই সিনেমাটি অসাধারণ সাফল্য অর্জন করেছিল। ২০০১ সালে ধর্মা প্রোডাকশন আয়োজিত করণ জোহারের পরিচালিত ‘কাভি খুশি কাভি গাম’ সিনেমাটি মুক্তি পায়। এই পারিবারিক সিনেমাটি পাঁচ বছরের জন্য সর্বোচ্চ আন্তর্জাতিক বক্স অফিস সংগ্রহ করে।
একই বছরে মুক্তি প্রাপ্ত ছবি ‘আশোকা’ যা একজন বিখ্যাত সম্রাটের জীবনের উপর ভিত্তি করে বানানো হয়েছিল। কিন্তু দুর্ভাগ্যবশত, এই ছবিটিও বক্স অফিসে ফ্লপ হয়েছে। ‘ভেনিস ফিল্ম ফেস্টিভাল’ এবং ২০০১ টরন্টো ইন্টারন্যাশনাল ফিল্ম ফেস্টিভাল থেকে দর্শক কাছ থেকে স্ক্রীনিং পেয়েছিলেন। ২০০২ সালে কিং খানের মুক্তি প্রাপ্ত ছবি সঞ্জয় লীলা ভানসালীর পরিচালিত ‘দেবদাস’ দর্শকের কাছে প্রশংসা পেয়েছিল। এই মুভিতে কিং খানের অভিনয়ও অনেক কৃতজ্ঞতা অর্জন করেছিল।
২০০৩-২০০৭ সাল পর্যন্ত কিং খানের ব্লকবাস্টার মুক্তি প্রাপ্ত ছবিগুলি হল ‘কাল হো না হো’, ‘চলতে চলতে’,’বীর- জারা’, ‘স্বদেশ’, ‘চাক দে ইন্ডিয়া’, ‘ডন’, ‘ওম শান্তি ওম’।
২০০৮ সালে ‘রাব নে বানা দি জোডি’ মুক্তি পায় এবং ২০০৮ সালে কিং খান ইন্ডিয়ান প্রিমিয়ার লিগ কলকাতা নাইট রাইডার্স টিমটি কিনেছিলেন অভিনেত্রী জুহি চাওলা এবং তার স্বামী হয় মহেতা প্রতিনিধিত্বে।
এর পর একের পর তিনি হিট মুভি ভক্তদের দিয়ে গেছেন। ২০১০ সালে তার সিনেমা ‘মাই নেম ইস খান’ ভালো প্রশংসা পেয়েছিল। এই সিনেমাটি বৈদশিক বাজারে সব রেকর্ড ভেঙ্গে বিদেশী বাজারে সর্বোচ্চ মুনাফা অর্জন করে।
২০১৪ সাল থেকে ২০১৮ সালে পর্যন্ত কিং খানের মুক্তি প্রাপ্ত ছবিগুলি হল ‘রা-ওয়ান’, ‘ডন ২’, ‘জব তক হ্যায় জান’, ‘চেন্নাই এক্সপ্রেস’,’হ্যাপি নিউ ইয়ার’, ‘চেন্নাই এক্সপ্রেস’ এবং ‘হ্যাপি নিউ ইয়ার’, ‘ডিয়ার জিন্দেগী’, ‘ডন ৩’, ‘ফ্যান’, ‘দিলওয়ালে’, ‘জিরো’ ইত্যাদি।
এই ছিল তার ক্যারিয়ার জীবনের কাহিনী। শাহরুখ খান বলিউড ইন্ডাস্ট্রির নাম্বার ১ সুপারস্টার।
শাহরুখ খানের বায়োগ্রাফি – ব্যক্তিগত জীবনঃ
সূত্র:- images.news18 . com
১৯৯১ সালে ২৫ অক্টোবর সুপারহিরো শাহরুখ খান তার দীর্ঘদিনের বান্ধবী গৌরি চিব্বার সঙ্গে বিয়ে করেন। বর্তমানে তার দুটি পুত্র সন্তান এবং একটি কন্যা সন্তান রয়েছে। আব্রাম এবং আরিয়ান তার দুই পুত্র সন্তান এবং কন্যা সুহানা খান। আরিয়ান কিং খানের বড়ো পুত্র, ১৯৯৭ সালে যার জন্ম হয়। সুহানা খান জন্মগ্রহণ করেন ২০০০ সালে এবং ২০১৩ সালে জন্মগ্রহণ করেন তার আব্রাম।
শাহরুখ খানের বায়োগ্রাফি – পুরস্কার প্রাপ্তঃ
সূত্র:- starnabe . com
বলিউড কিং খান তার জীবনে শুরু থেকে আজ পর্যন্ত প্রচুর সম্মানিত পুরস্কার প্রাপ্ত করেছেন। ২০০৫ সালে তিনি ভারত সরকার কর্তৃক প্রদত্ত পদ্মশ্রী অর্জন করেন। তিনি বহু বার ফিল্মফেয়ার অ্যাওয়ার্ড এবং শ্রেষ্ঠ অভিনেতার অ্যাওয়ার্ড অর্জন করেছেন। এছাড়াও আইফা পুরস্কার, স্টার স্ক্রিন অ্যাওয়ার্ডস,বলিউড মুভি অ্যাওয়ার্ডস,জি সিন পুরস্কার, গ্লোবাল ইন্ডিয়ান ফিল্ম অ্যাওয়ার্ড পেয়েছেন।
এই ছিল বলিউড বাদশা শাহরুখ খানের বায়োগ্রাফি। আশা করব, আপনাদের ভালো লাগবে। আরও ভালো ভালো আপডেট পেতে আমাদের অন্যান্য পেজগুলিতে লক্ষ্য রাখুন।
সচরাচর জিজ্ঞাস্য প্রশ্ন উত্তরঃ
প্রঃ শাহরুখ খানের প্রথম সিনেমা কি?
উঃ দিল আসান হাই।
প্রঃ শাহরুখ খানের জন্মদিন কবে?
উঃ ২ রা নভেম্বর।
উঃ শাহরুখ খানের গার্লফ্রেন্ডের নাম কি?
উঃ শাহরুখ খানের গার্লফ্রেন্ড এবং স্ত্রী গৌরী খান।
প্রঃ শাহরুখ খান কোথায় জন্মগ্রহণ করেছেন?
উঃ শাহরুখ খান নয়াদিল্লী শহরে জন্মগ্রহণ করেন।
প্রঃ শাহরুখ খানের প্রিয় অভিনেতা কে?
উঃ অমিতাভ বচ্চন এবং দিলিপ কুমার।
প্রঃ শাহরুখ খানের প্রিয় অভিনেত্রী কে?
উঃ মুমতাজ।
প্রঃ শাহরুখ খানের প্রিয় রং কি?
উঃ নীল, কালো, সাদা।
প্রঃ শাহরুখ খানের প্রিয় গাড়ি কি?
উঃ BMW।
প্রঃ কিং খানের আয় কত?
উঃ $38 million