বড়দিন একটি পবিত্র ধর্মীয় অনুষ্ঠান। এই দিনটিতে খ্রিস্টানরা যীশুখ্রিষ্টের জন্ম বার্ষিকী উদযাপন পালন করে। যদিও বাইবেলে যীশুর জন্মের কোন দিন ক্ষণ পাওয়া যায়নি। খ্রিস্টানদের বিশ্বাস মতে ২৫ শে ডিসেম্বর যীশুর জন্ম তারিখ ধরা হয়। উপহার একচেঞ্জ করা,ক্রিসমাস ট্রি সাজানো,মিষ্টি বিতরণ করা আর অব্যশই সান্তা ক্লজের অপেক্ষা করা। বড়দিনের ইতিহাস এর পিছনে রয়েছে অনেক কারণ যা অনেকেরই অজানা।
আরও পড়ুনঃ বড়দিন উদযাপনঃ বিশ্বব্যাপী বড়দিন উদযাপন
বড়দিনের ইতিহাস এর পিছনে মূল কারণ-
যীশুখ্রিষ্টের জন্মঃ
প্রায় দুই হাজার বছর আগে মেরির গর্ভে প্রবেশ করেছিলেন যীশু। মেরি ছিলেন যোসেফের স্ত্রী। যোসেফ ছিলেন একজন সৎ কাঠুরে। একজন ফেরেস্তার কাছ থেকে মেরি জানতে পারেন, মানব জাতিকে সত্য ও ন্যায়ের পথে পরিচালিত করার জন্য তার গর্ভে আসছেন ঈশ্বরের পুত্র।
তারা নাসরত নামে এক শহরে বাস করতেন। রোমীয় সম্রাটের আদেশ অনুযায়ী তাদেরকে বেথলেহেম শহরে ভ্রমণ করতে হয়েছিল।
আরও পড়ুনঃ ক্রিসমাসে ঘর সাজানোর জন্য বড়দিনের সাজসরঞ্জাম
যোসেফ ও মেরি যখন বেথলেহেম শহরে গিয়েছিলেন, তখন তাদের থাকার জন্য কোন জায়গা ছিল না। কারণ বেথলেহেম শহরটি ইতিমধ্যে পূর্ণ ছিল।
মাঝপথেই মেরির গর্ভবেদনা ওঠে। যার ফলে উপায় না থাকায় মেরিকে এক গোয়ালঘরে ঠাঁই নিতে হয়। আর সেখানেই জন্ম হয় ঈশ্বরের পুত্র যীশুর।
খ্রিষ্ট ধর্মের প্রবতক যীশু খ্রিষ্ট এই দিনে বেথলেহেমে জন্মগ্রহণ করেছিলেন। খ্রিষ্ট ধর্মাবলম্বীরা মনে করেন, বিশ্বে শান্তির বাণী ছড়িয়ে দেওয়ার জন্যই তার আগমন হয়েছিল।
আরও পড়ুনঃ বিশ্ব জুড়ে চলছে ২০১৮ বড়দিন উদযাপন প্রস্তুতি
মানুষের কাছে যীশুর অবস্থানঃ
যুগ যুগ ধরে যিশু খ্রিস্টের নাম মানুষের মধ্যে বেশ আবেগ জাগিয়ে তুলেছে। কিছু লোক তার নামটি অভিশাপের শব্দ হিসাবে ব্যবহার করে, অন্যেরা প্রেমময় প্রেমের শব্দ হিসাবে ব্যবহার করে।
মানুষ তাকে ঘৃণা করেছেন অথবা তাকে পছন্দ করেছেন। অনেকেই তাঁর জন্য তাদের জীবন দিয়েছেন। যুদ্ধ পর যুদ্ধ করা হয়েছে।
আরও পড়ুনঃ ক্রিসমাস উপলক্ষে ১০ টি বড়দিনের উপহার
কিছু মানুষ তার অস্তিত্ব অস্বীকার করে, কেউ কেউ বলে যে সে শুধু একজন ভাল শিক্ষক ছিলেন আবার অন্যরা তাকে ঈশ্বরের পুত্র বলে আজ্ঞা দেয়।
যীশুর আগমনের সময়ে অনেকে তাঁকে চিনতে পারল না। তার জীবনে পৃথিবীতে তিনি যেখানেই গেছেন, সেখানেই শত্রু বা বন্ধুত্ব তৈরি করছেন।
পুরুষরা এত গভীর ঘৃণা করেছিল যে তারা তাঁর জীবন শেষ করতে চেয়েছিল এবং তাকে ক্রুশে হত্যা করেছিল।
আরও পড়ুনঃ সান্টাক্লজের গল্পঃঅজানা কিছু রহস্য
বড়দিনের ইতিহাসঃ
বড়দিনের ইতিহাস এ এই দিনটি তাৎপর্যপূর্ণ। যীশু খ্রিস্টের জন্মের অনেক বছর পর থেকে খ্রিস্টানরা ২৫ শে ডিসেম্বর দিনটি আনন্দের দিন হিসাবে পালন করে থাকে।
২২১ সালে মিশরের দিনপ্ত্রিকায় লেখা হয়েছিল, মেরি ২৫ মার্চ গর্ভধারণ করে। ৩৫৪ সালে রোমান পঞ্জিকায় যীশুর জন্মদিন ২৫ শে ডিসেম্বর উল্লেখ থাকয় এই দিনটি বড়দিন হিসাবে উদযাপন হয় এবং পড়ে তা অন্যান্য দেশেও ছড়িয়ে পড়ে।
আরও পড়ুনঃ বড়দিনের শুভেচ্ছা তিলত্তমা কলকাতায় শুভ বড়দিন উদযাপন
২৫ ডিসেম্বর অধিকাংশ দেশে বড়দিন পালন হয়ে থাকলেও কিছু দেশ আছে তার ব্যতিক্রম যেমন- রাশিয়া, মিশর, সার্বিয়ায় ইত্যাদি।
সারকথাঃ
যীশুর প্রকৃত জন্ম যেই তারিখে হোক না কেন, ২৫ ডিসেম্বর দিনটি খুব আড়ম্বরের সঙ্গে পালন করা হয়। আর এই দিনটি আমাদের কাছে যীশুর প্রকৃত জন্মদিন।