আর মাত্র কয়েক দিন পরই খ্রিস্টান ধর্মের প্রবর্তক যীশুখ্রিষ্টের শুভ জন্মদিন। তাই বিশ্বের বিভিন্ন প্রান্তে চলছে বড়দিনের আয়োজনের প্রস্তুতি। সাজানো হচ্ছে ক্রিসমাস ট্রি। তাতে দেখা মিলবে রং বেরঙের আলোর ঝলকানি। দেশের অন্যান্য শহরগুলির মতো পিছিয়ে নেই আমাদের মহানগরীও। প্রত্যেক বছরের মতো এবারও রঙিন আলোয় সজ্জিত হবে কলকাতার পার্কস্ট্রিট। ২০১৮ বড়দিন উদযাপন এর প্রস্তুতির তোড়জোড় রীতিমতো শুরু।
আরও পড়ুনঃ বড়দিন উদযাপনঃ বিশ্বব্যাপী বড়দিন উদযাপন
বর্তমানে যে দিনটিকে ঘিরে বিশ্বব্যাপী মানুষের অন্তরে যে প্রবল আগ্রহ ও উত্তেজনা রয়েছে সেই দিনটি হচ্ছে ২৫ ডিসেম্বর, যীশু খ্রিষ্টের জন্মদিন। খ্রিষ্টের ধর্মের প্রবর্তক যীশু খ্রিষ্টের অলৌকিক জন্মগ্রহণ ও পৃথিবীতে তার আগমনের শুভেচ্ছা বার্তার স্মরণে খ্রিস্টান সম্প্রদায় ধর্মীয় ও সামাজিক বিশাল আড়ম্বরের সঙ্গে বড়দিন উৎসব পালন করে থাকে। যেহেতু বড়দিন খ্রিষ্টধর্মাবলম্বীদের প্রধান উৎসব। তাই তাদের কাছে এই দিনটির ধর্মীয় তাৎপর্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। তবে এ কথা বলা যায় বড়দিন উৎসব শুধু এখন আর খ্রিস্টানদের মধ্যেই সীমাবদ্ধ নেই।
আরও পড়ুনঃ বড়দিনের ইতিহাস এর পিছনে অজানা গল্প জেনে নিন
২০১৮ বড়দিন উদযাপন
মানুষকে অন্ধকার থেকে আলোর পথে ফেরাতে যীশুর পবিত্র আগমনকে ঘিরেই হাজার বছর ধরে বড়দিন পালন করে আসছে বিশ্বের খ্রিস্টান সম্প্রদায়। খ্রিস্টান ধর্ম মতে প্রায় দুই হাজার বছর আগের এই দিনে জেরুজালেম বেথেলহেমে জন্ম গ্রহণ করেছিলেন যীশুখ্রিষ্ট।
মানবজাতির মধ্যে কল্যাণ আর শান্তির বাণী ছড়িয়ে দেওয়ার জন্যই আগমন হয়েছিল যীশুখ্রিস্টের। তাই এই দিনটি উপলক্ষে থাকে বিশেষ আয়োজন। গির্জার আলোকসজ্জার পাশাপাশি আতস বাজির ঝলকানি আর প্রখ্যাত সঙ্গীত শিল্পীদের নিয়ে জমকালো অনুষ্ঠানের তালে এবারও বড়দিনের উদযাপনে মেতে উঠবে বেথেলহেমবাসি। তাদের এই দিনটিতে থাকে একটাই চাওয়া। জাতিধর্ম বৈষম্য ভুলে মানুষ যাতে শান্তির জয় গান গায়।
আরও পড়ুনঃ ক্রিসমাসে ঘর সাজানোর জন্য বড়দিনের সাজসরঞ্জাম
প্রতি বছরের মতো এবছরও নিউ ইয়র্কের এই দিনটি ঘিরে রয়েছে প্রবল উত্তেজনা। ইতিমধ্যেই বড়দিনের বর্ণিল সাজে সাজিয়ে তোলার জন্য প্রস্তুতি শুরু যুক্তরাষ্ট্রে। ২০১৮ বড়দিন উদযাপন সামনে রেখে নিউ ইয়র্কের পাঁচতরা হোটেলগুলিতে থাকছে বিশেষ আড়ম্বর। ডিসেম্বরের শুরু থেকেই সাজিয়ে তোলা হছে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে সবচেয়ে বড় গির্জা সেন্ট প্যাট্রিক। প্রতিবছর নিউ ইয়র্কের পাশাপাশি বিশ্বের বিভিন্ন প্রান্তর থেকে মানুষ জমায়েত হন এই গির্জার চত্বরে। তাই এবছরেও তার ব্যাতিক্রম হবে না। সেই কথা মাথায় রেখেই আগে থেকে চলছে গির্জার আলোকসজ্জার প্রস্তুতি। এই দিনে নিউ ইয়র্কের সবচেয়ে বড় আকর্ষণ হল ক্রিসমাস ট্রির আলোকসজ্জা।
নিউ ইয়র্কের পাশাপাশি কলকাতায়ও ২০১৮ বড়দিন উদযাপন এর প্রস্তুতি চলছে জোরকদমে। প্রতি বছরের মতো এবারও রঙিন আলোকসজ্জায় সেজে উঠবে কলকাতার পার্ক স্ট্রিট, নিউ মার্কেট, ক্যামক স্ট্রিট ও ধর্মতলার একাধিক জায়গা। বড় বড় হোটেল ও রোস্তরাগুলিতে প্ল্যানিং চলছে নিত্যনতুন আইটেম রাখার। তার পাশাপাশি রাখা হবে কড়া নিরাপত্তা। প্রতিটি স্থানগুলিতে কড়া নজরদারি জন্য বসানো হবে অতিরিক্ত সি সি ক্যামেরা।
আরও পড়ুনঃ ক্রিসমাস উপলক্ষে ১০ টি বড়দিনের উপহার
পার্ক স্ট্রিটের রাস্তা সেজে উঠবে অপরূপ সাজে। ২৫ ডিসেম্বর থেকে নিউ ইয়ার পর্যন্ত থাকবে এই আলোকসজ্জা। কেকের দোকানগুলিতে বানানো হচ্ছে নিত্যনতুন ডিজাইনের ক্রিসমাস কেক। বড়দিন ও নতুন বছরকে স্বাগত জানাতে শুরু হয়েছে নানা অনুষ্ঠানও। এদিকে শীতের আমেজ অনেকটাই থমকে গেছে। ঠাণ্ডা আবহাওয়ার ঘাটতি থাকলেও উৎসবের আমেজে কোন ঘাটতি নেই।
কেক থেকে ক্রিসমাস ট্রি, সান্টার থলে ভরা রঙিন উপহারের পাশাপাশি কচি- কাচাদের ভিড়, সান্টার টুপিতে তরুণ তরুণীদের সাজগোজে জমজমাট পার্ক স্ট্রিট।
আরও পড়ুনঃ সান্টাক্লজের গল্পঃঅজানা কিছু রহস্য
বড়দিনের উচ্ছ্বাস, উন্মাদনাকে লাগাম পরাতে প্রথম থেকেই তৈরি কলকাতা পুলিশ। বড়দিন উপলক্ষে রাস্তায় নামানো হবে অতিরিক্ত পুলিশ প্রশাসন। কলকাতার প্রতিটি রাস্তার মোড়ে তৈরি হচ্ছে পুলিশ বুথ। মেয়েদের নিরাপত্তার কথা ভেবে কলকাতার অলিগলিতে থাকবে সাদা পোশাকে মহিলা পুলিশ। সব মিলিয়ে বলাই যায় অন্যান্য শহরগুলির পাশাপাশি কলকাতায় ২০১৮ বড়দিন উদযাপন হতে চলেছে জমজমাট।
আরও পড়ুনঃ বড়দিনের শুভেচ্ছা তিলত্তমা কলকাতায় শুভ বড়দিন উদযাপন
সারকথাঃ
শীতের মরসুম বড়দিন উদযাপনের সঙ্গে সঙ্গে নিউ ইয়ারের শুভেচ্ছা বার্তার আনন্দ নিয়ে আসে আমাদের জীবনে।