একটা সময় ছিল যখন, সিনেমা অথবা সিরিয়াল মানেই নায়ক-নায়িকা। হিরো-হিরোইন হতে পারলেই দর্শকমহলে জনপ্রিয়তা। তাই সেই সময় নায়ক-নায়িকা হওয়ার ইঁদুর দৌড়ে বিশ্বাসী ছিলেন অনেকে। তবে সময় পাল্টেছে, তার সাথে পাল্টাচ্ছে মানুষের চিন্তা-ভাবনা। তাই তো আজকাল শিল্পীরা নায়ক-নায়িকা হতে নয়, বরং ভালো অভিনেতা-অভিনেত্রী হতে চান।
বাংলা টেলিভিশনের এরকম অনেকে অভিনেতা-অভিনেত্রীরা আছেন যারা নায়ক-নায়িকা নয়, বরং ভালো অভিনেতা-অভিনেত্রী হয়েই দর্শকের ভালোবাসা পেতে চান। তাদের মধ্যেই একজন হলেন অভিনেত্রী ঐন্দ্রিলা ঘোষ।
মনে পড়ে, ‘ফিরকি’ ধারাবাহিকের ‘মিতা মাসি’কে? এই চরিত্রে অভিনয় করেই বাংলার দর্শকের নজরে এসেছিলেন তিনি। বর্তমানে তিনি অভিনয় করছেন জি-বাংলার ‘কোন গোপনে মন ভেসেছে’ ধারাবাহিক এবং স্টার জলসার ‘রামপ্রসাদ’ ধারাবাহিকের রানী ভবানীর মা জয়দূর্গা চরিত্রে। ‘ফিরকি’তে রূপান্তরকামী মতো চরিত্রে অভিনয় কি আদতে সোজা ছিল? প্রগতির বাংলার-র পেজে অভিনেত্রী নিজের অভিনয় জীবনের স্ট্রাগল তুলে ধরলেন।
আপনি তো চাকরি করতেন? অভিনয়ে এলেন কীভাবে?
আমাদের বাড়ি পুরোপুরিভাবে পড়াশোনা এবং চাকুরীজীবি কেন্দ্রিক। ছোটোবেলা থেকেই ভালো রেজাল্ট করে ভালো চাকরী করতে হবে এই লক্ষ্য নিয়েই বড়ো হয়েছি। যদিও ছোটো থেকেই পড়াশোনার পাশাপাশি আবৃত্তি শিখেছি, কত্থক শিখেছি। কত্থক ও রবীন্দ্রনৃত্যে সিনিয়র ডিপ্লোমা কমপ্লিট করেছি। নাচের প্রচুর প্রোগ্রাম করতাম তখন। স্কুলে বেশ কিছু নাটক করেছি কিন্তু অভিনয়ে আসবো বা এটা প্রফেশন হবে এরকম ভাবিনি। BCA পড়ার পাশাপাশি আমার থিয়েটার চর্চা শুরু হয় দক্ষিণ কোলকাতার আভাষ নাট্যদলের সাথে। থিয়েটার করার ইচ্ছে ছোটো থেকেই ছিলো। আমার পাঁচ বছর বয়স থেকেই আমি যাতে বহুরূপী বা নান্দীকারের মতো দলের সাথে থাকতে পারি সেই ইচ্ছে নিয়ে মা অনেক খোঁজ খবর করেছিলো। তবে সেটা পুরোপুরিই শখে। একেবারেই তখন এটা ধারণাতে ছিলোনা যে অভিনয় আমার প্রফেশন হবে।
আমার ছোটোবেলা কেটেছে কাঁকিনাড়ায়। সেখান থেকে পড়াশোনা, টিউশন যাওয়া, স্কুল, আবৃত্তির ক্লাস, নাচ সামলে আবার কোলকাতায় সপ্তাহে তিনদিন করে এসে থিয়েটার করাটা সম্ভব হয়নি। তো সেই ইচ্ছেটা বড়ো হওয়ার পর পূরণ হয়। আমি তখন পার্ট টাইম জব করতাম একটি IT sector এ। ভোর সাড়ে পাঁচটায় বাড়ি থেকে বেরোতাম, BCA এর practical class করে অফিস যেতাম, সেখান থেকে বেরিয়ে আবার সাতটা নাগাদ দলে যেতাম। এইভাবেই চলছিলো। আভাষের একটি বিখ্যাত নাটক ‘সুন্দরবিবির পালা’ তে আমি একটি গুরুত্বপূর্ণ চরিত্রে অভিনয় করতাম, সেখানে আমার সহশিল্পী ছিলেন স্বনামধন্য ও বিখ্যাত অভিনেতা শ্রদ্ধেয় শ্রী চপল ভাদুড়ি। এই নাটকটি দিয়েই আমার পথ চলা শুরু। নাটকটির প্রচুর শো হয় এবং আমার চরিত্রটিও ভীষণ প্রশংসা পায়।
একদিন দুম করেই চাকরীটা ছেড়ে দিই। কারণ দলের ওপর commitment বাড়ছিলো, চরিত্রের চাপ বাড়ছিলো, আর নতুন নাটক তোলার সময় প্রচুর রিহার্সাল থাকতো, অফিস যেতামই না প্রায়, সারাদিন দলের ঘরে পড়ে থাকতাম। তো এইভাবে তো আর চাকরী করা যায়না। ছাড়তেই হতো। আর দলে যেতে না পারলে আমার দম বন্ধ লাগতো। যদিও চাকরী ছেড়ে থিয়েটার নিয়ে সারাদিন পড়ে থাকা এটা মা-বাবা পাশে না থাকলে কখনোই সম্ভব হতোনা। কারণ এখন নাহয় আমি সিরিয়াল করছি, তখনও কিন্তু জানতাম না যে এই সুযোগটা আমি পাবো। তখন থিয়েটার, রিহার্সাল, শো এটাই জীবন ছিলো। সকালে computer class করে দলে চলে গেছি, সারাদিন নতুন নাটকের রিহার্সাল করে রাতে বাড়ি ফিরছি, আবার পরদিন তাই। শো থাকলে কাঁকিনাড়া ফিরতে রাত বারোটাও বেজে যেতো। এটা চলেছে ২০১১ থেকে প্রায় ২০১৮ পর্যন্ত। এর মধ্যে renowned company থেকেও চাকরীর অফার পেয়েছি, ক্যাম্পাসিং এর পর দিল্লী থেকেও অফার এসেছে, কিন্তু থিয়েটার ছাড়তে পারবোনা বলে জয়েন করিনি। ২০১৮ সালের জুন মাসে প্রথম আমি acropolis entertainment pvt ltd এ একটি চরিত্রের জন্য অডিশন দিই এবং সেই চরিত্রে সিলেক্ট হই।
প্রথম ধারাবাহিক?
Acropolis entertainment pvt. Ltd এর সাথে ইরাবতীর চুপকথা। মজার কথা হলো, আমি যে চরিত্রের জন্য সিলেক্ট হয়েছিলাম সেটা মাত্র তিনদিনের জন্য ছিলো, কারণ আমি নতুন, আগে ক্যামেরার সামনে কাজ করার অভিজ্ঞতা নেই। কিন্তু সেখানে আমার কাজ এতোটাই প্রশংসিত হয় যে তারপর টানা দুবছর ঐ চরিত্রটি নিয়ে ইরাবতীর চুপকথায় আমার যাত্রাপথ চলে এবং চরিত্রটি ঐ সিরিয়ালের একটি অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ চরিত্র হয়ে উঠেছিলো।
‘ফিরকি’তে রূপান্তরকামী মতো একটি চ্যালেঞ্জিং চরিত্র বেছে নেওয়ার কারণ?
বিভিন্ন চরিত্রকে ফুটিয়ে তোলার মধ্যে একটা আনন্দ আছে, সেটা ঠিক বলে বোঝানো যাবেনা। থিয়েটারেও বিভিন্নরকম চরিত্র করেছি আমি। কখনও ‘সুন্দরবিবির পালা’ তে টম বয়, কখনও ‘তুঙ্গভদ্রার তীরে’ নাটকে এক চঞ্চল রাজকন্যা, কখনও পণন নাটকে মধ্যবিত্ত ঘরের শান্ত মেয়ে, তো কখনও নিভা আর্টসের ‘চন্দ্রগুপ্ত’ নাটকে হেলেন। কারণ অভিনয়ের সবথেকে বড়ো আনন্দই তো এটা, যে যেটা আমি নই সেইরকম একটা চরিত্রকে আমি establish করছি, প্রতিমুহূর্তে এক অন্য ‘আমি’কে ফুটিয়ে তুলছি।
সিরিয়ালের ক্ষেত্রেও যেমন আমি ইরাবতীতে ভীষণ ভালো একটি পজেটিভ চরিত্রে ছিলাম, আবার ‘সাহিত্যের সেরা সময়’ তে আমার চরিত্রটা এক ভীষণ কুচুটে এক মহিলার, যে সারাক্ষণ মেয়ের কানে কুমন্ত্রণা দেয় কিভাবে শ্বশুরবাড়ি থেকে আলাদা হতে হয়, আবার ‘খেলনাবাড়ি’তে আমি প্রায় চল্লিশোর্ধ এক দরিদ্র মায়ের চরিত্রে অভিনয় করেছিলাম, আবার রামপ্রসাদ সিরিয়ালে আমি রানী ভবানীর মা জয়দূর্গা। আসলে শুধু সেজেগুজে ক্যামেরার সামনে দাঁড়িয়ে কতগুলো ডায়লগ বলবো এটা তো আমি চাইনি, আমি প্রতি মুহূর্তে নতুন কিছু করতে চেয়েছি। ক্যামেরার সামনে আসার পর আমার দ্বিতীয় প্রোজেক্ট হিসেবে আমার কাছে আসে ‘ফিরকি’তে ‘মিতা মাসি’ নামের এই রূপান্তরকামী চরিত্রটি। তবে এই চরিত্র টা নিয়ে প্রথমে ভীষণ ভয় পেয়েছিলাম। ভেবেছিলাম আমি final selection এই বাদ পড়ে যাবো। কিন্তু ফাইনালি আমি সিলেক্ট হই, তারপর হাউস থেকেই স্বাগতা(মুখার্জী) দির কাছে আমাদের প্রায় পনেরো দিনের একটি ট্রেনিং চলে এবং তারপর কাজ শুরু হয়।
রূপান্তরকামী চরিত্রে অভিনয় সহজ নয়…আপনার জার্নিটা কেমন ছিল?
একেবারেই সহজ ছিলোনা। কারণ ঐ সিরিয়ালটিতে কিন্তু একজন হিজড়ের জীবন কেমন হয় সেটা দেখানো হয়েছে। তাদের কথা বলা, তাদের হাতে তালি মেরে পয়সা তোলা, তাদের যন্ত্রণা সেইসব কিছু ছিলো। তার পাশাপাশি ওরাও যে মায়ের মতো ভালোবাসতে পারে সেই জায়গাটাও ছিলো। তো ভীষণই কঠিন ছিলো আমার কাছে পুরো বিষয়টা। কারণ প্রথমতঃ এই রূপান্তরকামী মানুষরা কেমন হয়, মানে ব্যক্তিগত ভাবে মানুষ হিসেবে ওরা কেমন এটাই আমি জানতাম না। আর এই সিরিয়ালে অনেক রূপান্তরকামী অভিনেত্রী ছিলো, তাদের সাথেই কাজটা করতে হয়েছিলো। প্রথম যেদিন স্বাগতা দির কাছে আমাদের ট্রেনিং শুরু হলো, সেদিন গিয়ে বাকি যে রূপান্তরকামী অভিনেত্রীরা ছিলো, তাদের চিনলাম। তাদের সাথে আস্তে আস্তে কথা হলো, বন্ধুত্ব হলো। তারপর ওদের কাছেই ওদের কথা বলার ধরণ, ওদের খুঁটিনাটি গুলো আস্তে আস্তে আয়ত্ত করা শুরু করি।
‘ফিরকি’র একজন রূপান্তরকামী অভিনেত্রী সুজি(চরিত্র-রানী মাসি)র বাড়িতে আমি বেশ কয়েকমাস ছিলাম। তখন আরোও ভালো করে ওদের সম্বন্ধে জানতে পারি। আয়নার সামনে দাঁড়িয়ে ওদের মতো কথা বলা practice করতাম। ট্রেনে করে কোথাও যাওয়ার সময় যতবার এরকম কাউকে দেখতে পেয়েছি, ওদের observe করতাম তারপর বাড়ি এসে ওরা কেমন করে ভিক্ষে চাইছিলো সেটা practice করতাম। একবার একজনের নাম্বার নিয়েও এসেছিলাম, যেখানে ওরা থাকে, সেখানে গিয়ে সারাদিন থাকবো বলে। স্বাগতা দির ক্লাস থেকে বেরিয়ে রাস্তা দিয়ে আসার সময় ওদের মতো করে কথা বলতাম, ওদের মতো হাঁটতাম এইসব করতাম। একবার আমার মনে আছে, আমি শুটিং থেকে ফিরছিলাম, তো একটা উবের নিয়েছিলাম, আমি আর আমার সাথে তিনজন রূপান্তরকামী অভিনেত্রী ছিলো, তো উবেরে উঠেও আমি হিজড়েদের মতো করে কথা বলছিলাম, তালি দিচ্ছিলাম, তো নামার সময় ড্রাইভার আমায় প্রণাম করে আমার কাছে একটা টাকা চেয়েছিলো। মানে হিজড়েরা আশীর্বাদ করে কয়েন দিলে সেই কয়েন মানিব্যাগে রেখে দিলে উন্নতি হয়, এরকম ধারণা আছে। তো উনি আমার কাছে সেইহিসেবে চেয়েছিলেন। সেদিন আমি বাড়ি এসে কেঁদে ফেলেছিলাম। মনে হয়েছিলো, আমি কিছুটা হলেও পেরেছি, মানুষের কাছে চরিত্রটাকে বিশ্বাসযোগ্য করে তুলতে।
ধারাবাহিক বাদে অন্য কোনও প্রোজেক্টে কাজ করেছেন?
না এখনও পর্যন্ত ধারাবাহিকই চলছে। তবে সিরিজে কাজ করার ভীষণ ইচ্ছে আছে। একটু অন্যধরণের মনে রেখে দেওয়ার মতো কোনো একটি চরিত্র পেলে তো কথাই নেই।
এই মুহূর্তে জি-বাংলার ‘কোন গোপনে মন ভেসেছে’ ধারাবাহিকে কোন চরিত্রে অভিনয় করছেন? এই ধারাবাহিকে আপনার চরিত্রটা ঠিক কেমন?
‘কোন গোপনে মন ভেসেছে ‘ তে আমার চরিত্রের নাম টুম্পা। যে ছোটোবেলা থেকে জোড়া বাড়িতেই থাকে। পরিবারের সদস্যের মতোই। বাড়ির সবাইকে প্রাণ দিয়ে ভালোবাসে, সবার ভালো চায়। কিন্তু শ্যামলীকে একদম সহ্য করতে পারেনা। ওর খালি মনে হয় শ্যামলীকে সবাই বেশী ভালোবেসে ফেলবে, শ্যামলী ওর থেকে বেশী গুরুত্ব পেয়ে যাবে, শ্যামলী সবার মন জয় করে ফেলবে, তাই শ্যামলীকে কিভাবে বাড়ি থেকে তাড়াবে এই প্ল্যান করে চলেছে। অনেকবার ধরাও পড়েছে ঠাম্মির কাছে, বকা খেয়েছে কিন্তু তাতে শ্যামলীর প্রতি রাগ আরোও বেড়েছে, যে যেভাবেই হোক ওকে বাড়িতে থাকতে দেওয়া যাবে না। বেশ ইন্টারেস্টিং চরিত্র। খুব মজা লাগছে কাজটা করে।
একটা ধারাবাহিকে অভিনয়ের পর অনেক উঠিত অভিনেতা-অভিনেত্রীরা হারিয়ে যান। সেই জায়গায় দাঁড়িয়ে আপনি একের পর এক কাজ করছেন। এই ইন্ডাস্ট্রিতে টিকে থাকার লড়াইটা কতটা কঠিন?
এই জগতে টিকে থাকাটা সত্যিই খুব কঠিন। কারণ একটা চরিত্র পাওয়ার পর সেখানে আমি আমার অভিনয় ক্ষমতা বা আমি কতটা সিরিয়াস বা কতটা ভালো পারি সেগুলো দেখাতে পারবো কিন্তু সেই সুযোগটা পাওয়া, মানে সেই চরিত্র পাওয়াটা কিন্তু পুরোটাই ভাগ্য। আর আমার তো একেবারেই চেনা জানা কেউ নেই। আজ যতটুকু পরিচিতি আমি তৈরী করতে পেরেছি, যতটুকু ভালোবাসা বা ভরসা আমি পাই সেটাই ঈশ্বরের আশীর্বাদ।
তবে আমি তো যেমন ২০১১ থেকে লড়ছি, থিয়েটারের সাথে থেকে অভিনয় চর্চা করেছি বছরের পর বছর। খুব কষ্ট হয় যখন এটা দেখি যে একজন মডেলিং করা মেয়ে প্রধান চরিত্রের জন্য সিলেক্ট হয়, বা কোনো একটি উল্লেখযোগ্য চরিত্রে সুযোগ পেয়ে যায়। মডেলিং যারা করে, তাদের ওটাই প্রফেশন। ক্যামেরার সামনে দাঁড়িয়ে বিভিন্নরকম ভাবে পোজ দিয়ে ফোটো শ্যুট করলে অভিনয়ের যোগ্যতা প্রমাণ হয়? আমার তো এখন শুট থাকে, দলে যেতে পারিনা, এখন রাতে বাড়ি এসে আমি সিনেমা বা সিরিজ দেখি, বা you tube এ বিভিন্ন দলের নাটক দেখি, সেখানে আমার সিনিয়র বা অভিজ্ঞ যারা অভিনয় করছেন, সেখান থেকে শেখার চেষ্টা করি। এই চর্চা তো প্রতিদিনের।
থিয়েটারে অনেক ছেলেমেয়ে আছে, যারা একটা সুযোগ পাওয়ার জন্য ঘুরে বেড়াচ্ছে দিনের পর দিন, (এর মধ্যে আমিও পড়ি), আমি নিজেও প্রচুর অডিশন দিয়েছি, এখনও দিই, এতোগুলো কাজের পরেও, হয়তো অডিশনের পর ভীষণ appreciation পেয়েছি, তারপর জেনেছি চরিত্র মিলছেনা আমার সাথে। অথচ ফোটো শ্যুট করে ফেসবুকে ফলোয়ার্স বাড়িয়ে বা রিল বানিয়ে আজকাল সবাই অভিনেতা হয়ে যাচ্ছে বা ভালো চরিত্রে সুযোগ পেয়ে যাচ্ছে। এগুলো ভীষণ যন্ত্রণা দেয়। অনেক ভালো ভালো চরিত্রে অনেকে অভিনয় করে দেখি তাদের থেকে হয়তো আমি অনেক বেশী যোগ্য, কিন্তু আমি সুযোগটা পাইনি, তখন প্রচণ্ড হতাশ হয়ে পড়ি। সবটাই ভাগ্য। তবে আমি বাড়ির ভীষণ সাপোর্ট পেয়েছি। বাবা-মা তো পাশে ছিলোই, এখন দেবজিতও (husband) ভীষণ encourage করে। ওর জন্যই নতুন উদ্যমে আবার শুরু করতে পারি।
হ্যাঁ, সত্যিই তো কত ছেলে মেয়ে হারিয়ে যায়, আমি প্রায় ছয় বছর হয়ে গেল কাজ করছি, লড়াই করে চলেছি, এরজন্য ঈশ্বরের কাছে আমি কৃতজ্ঞ।
আর এই অভিনয় প্রফেশনটাই ভীষণ insecure। আজ আমি একটা চরিত্রে অভিনয় করছি, সেটা দর্শকের ভালোবাসাও পাচ্ছে, আপ্রাণ চেষ্টা করছি তাকে বিশ্বাসযোগ্য করে তুলতে কিন্তু এই প্রোজেক্ট টা শেষ হলে যে আমার কাছে পরবর্তী প্রোজেক্ট থাকবে এটার কোনো surety নেই। তো এই টিকে থাকার লড়াই তো প্রতি মুহূর্তে চলছে।
ভবিষ্যতে লিড রোলে অভিনয় করার ইচ্ছে আছে?
ড রোলে অভিনয় করবো এরকম আমি ভাবিনি কখনই। আমি ভালো চরিত্র করতে চাই। কারণ আমি অভিনয়কে ভালোবেসে অভিনয় করি। গ্ল্যামারের জন্য নয়। যেমন অপরাজিতা দির পারি পাগলী চরিত্রটা কিন্তু লিড ছিলোনা, কিন্তু আজও মানুষ মনে রেখেছে। তেমনি এখন শ্রীতমা দির পুতুল চরিত্রটাও। ওটাও লিড নয়, কিন্তু মানুষের মনে এ দাগ থেকে যাবে। এরকম কোনো একটা চরিত্র করতে চাই আমি। যে চরিত্র মানুষের মন থেকে মুছে যাবেনা সহজে।