বিজ্ঞান ও কুসংস্কার রচনা ছাত্রছাত্রীদের জন্য সহজ ভাষায়

বিজ্ঞান ও কুসংস্কার রচনা

বিজ্ঞান ও কুসংস্কার রচনা প্রায়ই ফাইনাল পরীক্ষায় এসে থাকে। সেদিকে নজর রেখেই এখানে ছাত্রছাত্রীদের সুবিধার্থে সহজ ভাষায় রচনাটি দেওয়া হল –

ভূমিকা

বিজ্ঞান ও কুসংস্কার একে অপরের বিপরীত। বিজ্ঞান যুক্তি, পরীক্ষা ও প্রমাণের ভিত্তিতে গঠিত জ্ঞানের পথ আর কুসংস্কার হল অন্ধবিশ্বাস ও ভয়ের সৃষ্টি। বিজ্ঞান মানুষকে আলোর পথে এগিয়ে দেয়, কুসংস্কার টেনে রাখে অন্ধকারে। তাই বিজ্ঞানমনস্কতা আজকের সমাজে সবচেয়ে প্রয়োজনীয় দিক।

বিজ্ঞানের অগ্রগতিঃ

অরণ্যচারী মানুষ আকাশের বিদ্যুৎ ঝলকানি কিংবা প্রচণ্ড বৃষ্টি, বন্যা, ভূমিকম্প ইত্যাদি দেখে চমকে উঠত। সেদিন থেকে তার মনে রহস্য উদঘাটনের চেষ্টা বা বাসনা জেগেছিল। আজ বিজ্ঞানের উপর ভর করে তা সফল হয়েছে এবং সেই দুর্গম পৃথিবী আজ সুখের আলোয় পরিণত হয়েছে। মানুষ আজ তাই জল-স্থল সব জায়গাতে নিজের প্রভাব বিস্তার করছে। বিজ্ঞান পৃথিবীকে নিয়ে এসেছে হাতের মুঠোয়। আমাদের প্রতিদিনের জীবন যেমন বিজ্ঞানের প্রভাবে হয়ে উঠেছে সুখকর ঠিক তেমন রয়েছে গেছে কুসংস্কারের বীজ।

বিজ্ঞানের ভূমিকাঃ

বিজ্ঞান যুক্তি আর পরীক্ষার মাধ্যমে সত্যকে প্রমাণ করে। একসময় মানুষ মনে করত রোগব্যাধি দেবতার অভিশাপ কিন্তু বিজ্ঞান প্রমাণ করেছে রোগব্যাধির নেপথ্য কারণ জীবাণু ও ভাইরাস। এইভাবে বিজ্ঞানের মানুষের মন থেকে অন্ধকার দূর করেছে।

কুসংস্কারের প্রভাবঃ

কুসংস্কার আমাদের সমাজকে পিছিয়ে দেয়। মানুষের মনে ভয় তৈরি করে। কুসংস্কারে অন্ধবিশ্বাস হয়ে মানুষ চিকিৎসা এবং উন্নত জীবনযাত্রা থেকে বঞ্চিত থাকে।

বিজ্ঞান বনাম কুসংস্কারঃ

বিজ্ঞানের কল্যাণে আজ মানুষ চিকিৎসার মাধ্যমে জটিল রোগ সারাতে সক্ষম হয়েছে। বিদ্যুৎ, যোগাযোগ ব্যবস্থা, পরিবহণ, কৃষিকাজ, শিক্ষা সব ক্ষেত্রেই বিজ্ঞানের আশ্চর্য উন্নতি আমাদের জীবনকে সহজ সহজ করে তুলেছে। বিজ্ঞানের কারণে মানুষ আজ মহাকাশে পাড়ি জমাতে পেরেছে, সমুদ্রের তলদেশ অন্বেষণ করতে পেরেছে, কিন্তু দুঃখের বিষয় হল, এর পাশাপাশি সমাজে আজও কুসংস্কারের প্রভাব প্রবল। ভূতপ্রেতের ভয়, অশুভ সময়ের যাত্রা না করা, কুষ্ঠি দেখে বিচার করা কিংবা অসুস্থ হলে ওঝা বা তান্ত্রিকের কাছে যাওয়া, এসব কুসংস্কার মানুষকে পিছিয়ে দেয়। কুসংস্কার শুধু মানুষের অগ্রগতি থামিয়ে দেয় না, অনেকসময় প্রাণহানির কারণও হয়। কুসংস্কারচ্ছন্ন মানুষ বিজ্ঞানের সুবিধা নিতে চায় না।

কুসংস্কার দূরীকরণে বিজ্ঞানের ভূমিকাঃ

শিক্ষা মানুষের মনে চেতনা আনে। সেই চেতনা যখন মানুষের মনে জাগ্রত হয় তখন তার যুক্তিবাদী মন সবকিছু যুক্তির দ্বারা পর্যবেক্ষণ করতে চায়। যুক্তিবাদীদের মনে কুসংস্কারের অন্ধকার ছায়া জমতে পারে না। বর্তমানে বহু মানুষ কুসংস্কারের বিরুদ্ধে সোচ্চার হয়ে উঠেছে। ভণ্ড তান্ত্রিক, ফকির, সাধুদের ভাঁওতাবাজি শেষ হতে চলেছে।

উপসংহারঃ

বিজ্ঞান মানুষকে মুক্ত করতে সহায়তা করে আর কুসংস্কার মানুষকে বন্দি করে। সমাজকে আলোকিত করতে হলে কুসংস্কারকে মুছে ফেলতে হবে আর বিজ্ঞানকে আপন করে নিতে হবে। তাহলেই সমাজ হবে প্রগতির পথে এগিয়ে চলা এক আলোকিত পৃথিবী।

Read more:

200+ শব্দ দিয়ে বাক্য রচনা । সহজ বাক্য গঠন । Make Sentence

ছোটোদের জন্য সহজ ভাষায় গরুর রচনা

বর্ষাকাল রচনা ছাত্রছাত্রীদের জন্য সহজ ভাষায়

গ্রীষ্মকাল রচনা ছাত্রছাত্রীদের জন্য সহজ ভাষায়

শরৎকাল রচনা ছোটদের জন্য সহজ ভাষায়

সহজ ভাষায় পরিবেশ দূষণ রচনা

বিশ্বকবি রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর রচনা । ছাত্রছাত্রীদের জন্য সহজ ভাষায় প্রবন্ধ 

রইল ছাত্রছাত্রীদের জন্য সহজ ভাষায় শিক্ষক দিবসের রচনা

 ছাত্রছাত্রীদের জন্য স্বামী বিবেকানন্দের রচনা

 ছাত্রছাত্রীদের জন্য সহজ ভাষায় নারী শিক্ষার রচনা

শিক্ষার্থীদের জন্য সহজ ভাষায় পরিবেশ দিবস এর রচনা

ছাত্রছাত্রীদের জন্য সহজ ভাষায় স্বাধীনতা দিবস রচনা