করোনা ভাইরাস কেবল মানুষের জীবন নয় ধ্বংস করছে বিভিন্ন ক্ষেত্রের অর্থনীতিও । লকডাউনের শিকেয় উঠেছে দেশব্যাপি যাত্রীবাহী ট্রেন পরিষেবা । কবে থেকে ফের স্বাভাবিকভাবে চলাচল করবে ট্রেনগুলি তাও এখনো স্পষ্ট নয় । ফলে বিস্তর ক্ষতির মুখে দেখতে হচ্ছে ভারতীয় রেলকে। পরিস্থিতি এতটাই সংঙ্কটজনক জায়গায় পৌঁছেছে, যে সময়মতো কর্মীদের বেতন ও পেনশন দেওয়া নিয়েও দেখা দিয়েছে সংশয় ।
আরও পড়ুন : যুক্তরাজ্যের এই প্রথম এক গৃহপালিত বিড়ালের পরীক্ষা ইতিবাচক ফল
রেলমন্ত্রক সুত্রে জানা গিয়েছে, ১৫ লক্ষ পেনশনভোগীকে চলতি বছর ৫৩ হাজার কোটি টাকা দিতে হবে রেলকে । এছাড়া রয়েছে কর্মীদের বিপুল অঙ্কের বেতনও । কোভিড-১৯-এ সৃষ্ট মন্দার জেরে রেলমন্ত্রকের পক্ষে বিপুল পরিমাণ অর্থ দেওয়া সম্ভব হবে না । সম্প্রতি প্রধানমন্ত্রীর দপ্তরের সঙ্গে অন্যান্য মন্ত্রকের মিটিংয়ে অর্থমন্ত্রকের কাছে এই পেনশনের টাকা জোগান দেওয়ার আবেদন জানিয়েছে রেলমন্ত্রক ।
আরও পড়ুন : এক্সপার্ট বলছে, উহান অফিসিয়ালরা কোভিড-১৯ তথ্য গোপন করার চেষ্টা করছে
সূত্রের খবর, রেলের পরিকাঠামো উন্নয়নে ধার্য করা হয়েছে ১২০ লক্ষ কোটি টাকা । কিন্তু বিপুল পরিমাণের অর্থ রেলের হাতে নেই । পাশাপাশি, ১৩ লক্ষ কর্মীর বেতন ও ১৫ লক্ষ অবসরপ্রাপ্তকে পেনশন দেওয়াও দুষ্কর হয়ে পড়েছে । এই সংক্রান্ত বিষয়ে যে অর্থের প্রয়োজন তা রেলের ফান্ডে নেই । পরিকাঠামোর উন্নয়নে বরাদ্দ অর্থ থেকে বেতন ও পেনশন দিলে নির্ধারিত প্রকল্প মার খাবে বা বন্ধ হয়ে যাবে । রেলমন্ত্রকের তরফে আবেদন জানানো হয়েছে, অন্তত এবছরের পেনশন অর্থমন্ত্রক দিক ।
আরও পড়ুন : ঠান্ডা লড়াইয়ের জের, দূতাবাসে নামিয়ে দেওয়া হল মার্কিন পতাকা
অন্যদিকে, রেলমন্ত্রকের নেতিবাচক বার্তায় তীব্র অসন্তোষ ছাড়িয়েছে রেলকর্মীদের মধ্যে । আতঙ্কিত হয়ে পড়েছেন পেনশনভোগীরাও । পূর্ব রেলের মেনস ইউনিয়নের সাধারণ সম্পাদক অমিত ঘোষের কথায়, রেলকে কোথায় এনে ফেলেছে কেন্দ্র সরকার । লালুপ্রসাদ যাদব রেলমন্ত্রী থাকাকালীন ২০ হাজার কোটি টাকা আয় হয়েছিল । এখন আর কোনও আয় নেই । যাত্রীবাহী ট্রেনে তেমন আয় হয় না । ৪৩ শতাংশ সাবসিডি দিতে হয় রেলকে । যাত্রীবাহী ট্রেন বন্ধে সেই টাকা বেঁচে গিয়েছে । শ্রমিক স্পেশ্যাল চালিয়ে ৪৩৯ কোটি টাকা আয় হয়েছে । পণ্য পরিবহণ বাড়িয়ে আয়ের ভারসাম্য রাখার চেষ্টা হচ্ছে । আগামী দু’বছর পণ্য থেকে আয় দ্বিগুণ করার পরিকল্পনা নেওয়া হয়েছে । তারপরেও আয় হচ্ছে না রেলের । বিষয়টি খতিয়ে দেখা প্রয়োজন।