টলিউডের অনেকেই মহামারীর মধ্যে সাহায্য করার জন্য এগিয়ে এসেছেন। তাদের মধ্যে টলিপাড়ার চেনা মুখ সব্যসাচী চৌধুরী অর্থাৎ পর্দার বামাক্ষ্যাপা। সব্যসাচী চৌধুরীও তাঁর দলের সাথে অসহায় লোকদের সহায়তা করার জন্য কাজ করছেন।
কিছুদিন আগে অভিনেতা দক্ষিণ বারাসতের বাজারের কাছে এক বৃদ্ধাশ্রমে টিমের সঙ্গে হাজির হয়েছিলেন। বৃদ্ধাশ্রমে এক মায়ের সাথে আলাপ হয় তার। তার কথা শোনার পর এবং তাকে দেখা পর হৃদয় ভেঙ্গে যায় তার। সোশ্যাল মিডিয়ায় সেই কথা শেয়ার করে আবেগ প্রবণ হয়ে পড়েন।
দক্ষিণ বারাসতের বৃদ্ধাশ্রমে সব্যসাচী এক মায়ের সাথে তার পরিচয় হয়, যার বাড়ি কালীঘাটে। ছেলে ভালো চাকরি করে কিন্তু মহিলা দৃষ্টিহীন। চিকিৎসা করানোটাও একরকম পয়সা নষ্ট বৈকি। দৃষ্টিহীন মায়ের ঠিকানা তাই বৃদ্ধাশ্রম। মহিলাটি চোখে দেখেন না, কিন্তু অভিনেতার গলার স্বর চেনেন। মহিলাটি সব্যসাচীকে জানায়, “তোমার গলার স্বর আমার বুকে আছে বাবা”। কারণ প্রতিদিন তিনি টিভিতে মহাপীঠ তারাপীঠ ‘শোনেন’।
দৃষ্টিহীন মহিলা অভিনেতাকে আরও জানান, “আমার ছেলে বড় চাকরি করে, আমার যাতে কোনো কষ্ট না হয় তাই এখানে রেখেছে। খুব ভালো ছেলে আমার, ওকে একটু আশীর্বাদ করো বাবা”। চোখে জল অভিনেতা এক মায়ের ভালোবাসা দেখে। যার পুত্র তাকে বৃদ্ধাশ্রমে রেখে যায়, সেই মা কীভাবে তার সন্তানের সুস্থতা ছাড়া কিছুই চান না। আবার ক্ষোভ জন্মায় এইরকম ছেলের উপর যে ছেলে সুপ্রতিষ্ঠিত তার মায়ের যত্ন নিতে পারে না?
সমাজে এইরকম ঘটনা অনেকেই প্রায়ই চোখে পড়ে। দক্ষিণ বারাসাতে আর্থিক কষ্টে ভোগা একটি ক্ষুদ্র বৃদ্ধাশ্রমের খোঁজ পেয়ে অভিনেতা ছুটে যায় তার টিমের সাথে। সেখানে গিয়ে বুঝতে পারে কেবল খাবার না, আরো বেশ কিছু জিনিস প্রয়োজন তাদের। তাই অভিনেতা পরের বার সে ব্যবস্থা করেই যাবে বলে স্থির করেছেন এবং দেখা করবেন বৃদ্ধা আশ্রমের তার সেই মায়ের সঙ্গে।
সোশ্যাল মিডিয়ায় এই মাকে নিয়ে চিঠি লিখে অভিনেতা নিজের অনুভূতি প্রকাশ করে লেখেন, “মা কাকে বলে জানো? এমন একটি মানুষ যার ওপর রাগ দেখানো যায়, অভিমান করা যায়, অপমান করা যায়, ‘তুমি ওসব বুঝবে না’ বলে পাশ কাটানো যায়, এমনকি অন্য কারোর ওপর জমা রাগ নির্দ্বিধায় তার ওপর বর্ষণ করা যায়। প্রেমিকার কাছ থেকে ‘খেয়েছিস?’ শোনার জন্যে ছটফট করা যায়, কিন্তু একই কথা মা বললেই তিতিবিরক্ত হওয়া যায়। মা জিনিসটাই কেমন যেন আঠালো, চটচটে একটি বস্তু। ঝেড়ে ফেলতে চাইলেও যায় না, ঘেঁটি ধরে দূর করে দিলেও আবার বেড়ালের মতন ফিরে আসে। পা দিয়ে মাড়িয়ে চলে গেলেও উল্টে জিজ্ঞাসা করে “লাগেনি তো?”