বর্তমানে বাংলা সিরিয়ালের মান কমলেও দর্শকের মধ্যে চাহিদা প্রচুর। তাই তো বড়পর্দার দর্শকেরা ছোটপর্দার দিকে ঝুঁকছে। যদিও বাংলা সিরিয়ালের অনিশ্চয়তা রয়েছে। কারণ আগে সিরিয়াল মানেই ২-৩ বছর অথবা ৫ বছর চলত তবে আজকাল মাত্র ২ মাসেও শেষ হয়ে যাচ্ছে ধারাবাহিক।
এবার বাংলা সিরিয়াল নিয়েই মুখ খুললেন ‘রান্নাঘর’ সঞ্চালক সুদীপা চট্টোপাধ্যায়। পাকিস্তানি সিরিয়াল সঙ্গে বাংলা সিরিয়ালের তুলনা টেনে সুদীপা সোশ্যাল মিডিয়ায় লেখেন, ‘একটি টিভি সিরিয়াল সারা দেশের সিনেমা হলে শেষ মেগা এপিসোড রিলিজ করছে। আজ সারা দেশে হাজার হাজার লোক মিলে সিনেমা হলে এই এপিসোডটা দেখবে, পারলে এই সিরিয়ালটি ইউটিউবে দেখে নেবেন, কভি ম্যায় কভি তুম। এখানে শুধুমাত্র নায়িকাই রান্না করবে, বাসন মাজবে, মন্দিরে প্রদীপ জ্বালাবে। আবার বরকে বাবু আর আপনি বলে সম্মোধন করবে। এবং এখানেই শেষ নয়- শাশুড়ি মায়ের অত্যাচার মুখ বুজে সইবে।’
সুদীপা আরও লেখেন, ‘দাঁড়ান! দাঁড়ান!… এখানেই শেষ নয়.. আরও আছে… বন্দুক হাতে অশুভ শক্তির নিধন করবে… আর মাঝে মাঝে – বরের প্রেমিকা বৌকে সাহায্য করবে। এটা কোন বর্বরতার দিকে- মেয়েদের ঠেলে দেওয়ার চেষ্টা চলছে? দর্শক- বাধ্য হচ্ছেন,আমাদের প্রতিবেশী দেশ- পাকিস্তান এর টিভি সিরিয়াল মুগ্ধ হয়ে দেখতে… কি সুন্দর গল্পের বন্ধন, কি ন্যাচরাল মেকআপ, কি স্বাভাবিক জামা কাপড়,কোনও সেট নয়।
সব আসল লোকেশনে শ্যুটিং । বাঘা বাঘা অবিনেতারা তাতে। আমরা কোনওদিনও ভাবতে পারি একটা গল্প মানুষ এত পছন্দ করেছে যে নির্মাতারা বাধ্য হয়ে, থিয়েটার রিহের্সাল করছে শেষ এপিসোড? আর কবে আমাদের চ্যানেল কর্তৃপক্ষ বুঝবেন, যে দর্শক টিভি থেকে মুখ ফিরিয়ে নিচ্ছেন? বাধ্য হচ্ছেন- বাংলাদেশি নাটক, পাকিস্তানি সিরিয়াল,আর কোরিয়ান ড্রামা দেখতে। এটা কতদিন অস্বীকার করবেন? সেই এক গল্প, এক পোশাক, এক সেট। এবার জাগুন! আর কতদিন শাঁখাঁ-সিঁদুরের দিব্যি দিয়ে এক গল্প নতুন মোড়কে চালাবেন?’
টেলিভিশন ইন্ডাস্ট্রি একটা বড় মাপের ইন্ডাস্ট্রি । প্রচুর পরিবার চলে- এই ইন্ডাস্ট্রি কে বেস করে। অনেক সংসার চলে। সেই ইন্ডাস্ট্রি কে নিয়ে এত ছেলেখেলা- বেশীদিন সইবে না। কেন বাস্তব থেকে সরে আসছে- বাংলা সিরিয়াল? আমি জানি- এর পর আমাকে অনেকে খারাপ খারাপ কথা লিখবেন। হয়তো ট্রোলের হবো আবার।কিন্তু, আজ এই পোস্টার তা দেখে আর থাকতে পারলাম না। আমি এই ইন্ডাস্ট্রিকে ভালবাসি । এই ইন্ডাস্ট্রি- আমাকে অনেক কিছু দিয়েছে। তার কাছে আমার দায়বদ্ধতা আছে। সত্যিকারের মন খারাপ থেকে- এত কিছু লিখলাম। আশেপাশে- সবাই কত এগিয়ে গেছে । আর আমরা এখনও মেয়েদের- সবার মন জয় করার কাহিনী শোনাতে ব্যস্ত । আর কবে?
সুদীপা’র এই পোস্টে তাকে সমর্থন জানিয়েছেন বহু মানুষ।