‘আঁচল’ এর টুসু হোক বা ‘কড়ি খেলা’-র পারমিতা সব চরিত্রেই দর্শক আপন করে নিয়েছে শ্রীপর্ণা রায় কে। মাঝে পর্দা থেকে হারিয়ে গেলেও বর্তমানে স্টার জলসার ‘লক্ষ্মী ঝাঁপি’ ধারাবাহিকে এই প্রথম পার্শ্ব চরিত্রে দেখা যাচ্ছে শ্রীপর্ণাকে।
শ্রীপর্ণার হাসিমুখের আড়ালে থাকা কঠিন বাস্তব অনেকেরই অজানা। সম্প্রতি এক সাক্ষাৎকারে জীবনের তিক্ত অভিজ্ঞতা নিয়ে মুখ খুললেন শ্রীপর্ণা।
অভিনেত্রীর কথায়, “এমন একটা কঠিন সময় আমার জীবনেও এসেছিল, যখন আমার মা হাসপাতালে ভর্তি ছিলেন। আমি একমাত্রই সন্তান, মা-বাবা ছাড়া পরিবারে আর কেউ নেই। কাজেই আমি ছোট থেকে খুব আদরে বড় হয়েছি। আমার কাজ চলাকালীন মা যখন হাসপাতালে ভর্তি ছিল, নিজের সবটা করতে হয়েছে আমায়।”
এমনকি হাসপাতালে বসেই স্ক্রিপ্ট মুখস্ত করেছি আবার শুটিংও করেছি। যদিও শেষ রক্ষা হয়নি, মা কিছুদিন পরেই চলে যান। নিশ্চয়ই বুঝতে পারছেন এটা কত বড় আঘাত? চারিদিকে সবাই সহানুভূতি দেখাচ্ছে কিন্তু আমাকে সেই সময় দৃঢ়ভাবে দাঁড়িয়ে থাকতে হয়েছে। ব্যক্তিগত জীবনে সে যেমনই ঝড় আসুক না কেন, সেটাকে লুকিয়ে রেখে পর্দার সামনে হাসিমুখে দাঁড়াতে হয়। আমরা ইমোশান বেঁচে খাই।
নিজের ইমোশন লুকিয়ে, চরিত্রের খাতিরে মিথ্যে ইমোশন নিয়ে পর্দার সামনে দাঁড়াতে হয়েছে। কারণ অভিনয়টা আমি ভালোবেসে করি আর আমি চাই না আমাকে বাদ দিয়ে দেওয়া হোক। হাসপাতালে যখন একদিকে ডাক্তার বলছেন মাকে আর বাঁচানো সম্ভব নয়। সেখানে দাঁড়িয়ে কাঁদছি আবার সেটে ফিরে এসে হা হা করে হাসতেও হচ্ছে আমায়! সেই পরিস্থিতি কাউকেই বোঝানো সম্ভব নয়।
জীবনের তিক্ত অভিজ্ঞতা থেকে শ্রীপর্ণা আরও বলেন, একটা ধারাবাহিকে মাঝপথেই আমাকে বাদ দিয়ে দেওয়া হয়েছিল। তাদের কথা, আমার জন্য নাকি টিআরপি উঠছিল না। একটি প্রোডাকশন হাউজের তরফে কাজও পেয়েছিলেন পরে। তবে স্বেচ্ছায় সেই কাজ ফিরিরে দিয়েছিলেন। পরবর্তীতে যখন সেই প্রোডাকশন হাউজের কাজটি হওয়ার সময় আসে, কাজটা হয় না। অভিনেত্রীর বিশ্বাস, কপালে যেটুকু লেখা আছে সেটা যে কোনও মূল্যে তিনি পাবেন।
এরপর দু’বছর কাজ পাননি শ্রীপর্ণা। এই সময়তে অভিনেত্রীর দীর্ঘদিনের সম্পর্কও ভেঙে যায়। এই বিষয়ে যদিও কিছু বলতে চাননি শ্রীপর্ণা। জীবনের চরাই উতরাই পেরিয়ে আপাতত জীবনে সুখের মুখ দেখেছেন অভিনেত্রী।