‘টুপি পরায় এরা’, ‘কাস্টিং এজেন্সি’ নিয়ে সাবধান করলেন শ্রুতি

অভিনেত্রী শ্রুতি দাস

গ্রাম মফস্বল থেকে অনেকেই অভিনেতা-অভিনেত্রী হওয়ার স্বপ্ন নিয়ে চলে আসেন কলকাতা শহরে। কীভাবে টালিগঞ্জে পা রাখবে বা কথায় অডিশন দেবে না জানায় অনেকেই ভুল পথে পা বাড়ায়। অনেকের প্রচুর টাকাও নষ্ট হয় এই চক্করে। তাই এবার তাদের সতর্ক করতে এগিয়ে এলেন ছোটপর্দার জনপ্রিয় অভিনেত্রী শ্রুতি দাস।

এবার ভুয়ো কাস্টিং এজেন্সি নিয়ে সোশ্যাল মিডিয়ায় সরব শ্রুতি। কি বললেন ছোটপর্দার রাঙা বউ। ফেসবুকে লম্বা পোস্ট করে শ্রুতি লেখেন, ‘আমাদের টালিগঞ্জ/ঢালিউড ইন্ডাস্ট্রি তে সত্যিই কি কোনো এজেন্সি দ্বারা কাস্টিং হয় ? এখনও পর্যন্ত কি কোনো ডিরেক্টর, কোনো প্রোডাকশন হাউস কোনো কাস্টিং কোম্পানির হাতে কোনো সিনেমা , সিরিয়াল, ওয়েব সিরিজ এর স্ক্রীপ্ট দিয়ে বলেছেন যে ভাই পুরো কাস্টিং টা করে দাও পরিবর্তে এই রেমুনারেশন তোমাকে দিচ্ছি।। না, আমাদের কলকাতায় এই ভাবে কোনো কাস্টিং হয়না।। আমি নিজে এতো বছর সহযোগী পরিচালক হিসাবে রেগুলার কাজ করছি, বা যে কটি পরিচালনার কাজ করেছি.. আমি দেখিনি .. আমার বাবা ও কস্মিন কালে দেখেননি।।তাহলে এই যে socical media তে এতো কাস্টিং এজেন্সি র বিজ্ঞাপন দেখি এরা কি করে ? আমার ও প্রশ্ন এরা কি করে ? এরা টুপি পড়ায়, তাদের .. যারা গ্রাম মফস্বল থেকে আসে দু চোখে অভিনেতা হওয়ার স্বপ্ন নিয়ে .. কিন্তু জানেনা কোথায় যাবে, কার কাছে যাবে .. সেই না জানার সুযোগ নেয়।। আর এই সমস্ত এজেন্সি গুলো অধিকাংশই জুনিয়র আর্টিস্ট মানে ভিড়ে 15 জন দাড়াবে.. সবাই চিৎকার করবে ..তাদের মধ্যে দু একজন একটা দুটো কথা বলবে .. বা একজন নার্স, ওয়ার্ডবয়, ওয়েটার দু একটি কথা আছে এই টাইপ এর চরিত্র গুলি .. যেগুলো সাধারণত কেউ করতে চায়না।। সেই কাস্টিং গুলোর জন্য এদের থেকে ছেলে মেয়ে আমরা নিই।। আর মাঝে মধ্যে কখনো কোথাও audition এর খবর এদের ছেলে মেয়েদের দেয়।’

শ্রুতি আরও জানান, ‘হয়তো টালিগঞ্জে একটি কি দুটি এজেন্সি আছে যারা ঠিকঠাক character এর জন্য রেফার করে। কিন্তু এরা কেউ কাস্টিং করেনা।।প্রায়ই শুনি অনেকের থেকে মোটা টাকা নেয়া হয়েছে আরও নানান কিছুর মুখোমুখি হতে হয় নতুন ছেলে মেয়েদের।। আমাদের ইন্ডাস্ট্রির বাইরে আর একটা ইন্ডাস্ট্রি আছে।। যার অফিস গুলো গোটা কোলকাতার ওলি গলিতে ছড়িয়ে আছে।।যাদের বিজ্ঞাপন সোশ্যাল মিডিয়া, পাড়ার ওলি গলিতে দেখা যায়।।টালিগঞ্জ মেট্রোর বাইরে চায়ের দোকানের আলোচনা কানে এলে মনে হয় ছবির pre production থেকে শুরু করে রিলিজ বোধ হয় এখানেই করে দিলো.. সেখানেও নতুন ছেলে মেয়েরা ঘিড়ে দাড়িয়ে।এদের কাছে পৌঁছানো টা যেহেতু খুব সহজ তাই এদের এখানেই ভিড় জমায় ছেলমেয়েরা।। কোনো কিছু না জানার সুযোগ নিয়ে বিভিন্ন ভাবে গলা কাটে।। এই ভন্ড গুলোর ইন্ডাস্ট্রি র সাথে কোনো রকম যোগাযোগ নেই।। এরা হাজার প্রতিশ্রুতি দেবে, স্বপ্ন দেখাবে।। এদের দেখানো স্বপ্নে যখন বিভোর হয়ে যাবেন then আপনাকে এক্সপ্লোইড করবে।। অধিকাংশ ছেলে মেয়েরা এদের ট্র্যাপ এ পড়ে।। ছবির নামে যে কতো জলছবি হয়.. সেখানে না ইন্ডাস্ট্রির কোনো টেকনিশিয়ান থাকে না আর্টিস্ট।। হয়তো দু একজন চেনা মুখ নিল, যাদের মুখ দেখিয়ে টাকা পয়সা তোলা যায় নতুন ছেলে মেয়েদের কাছ থেকে।। আর এ ছবি কোথায় রিলিজ হয়, কারা দেখে তা ঈশ্বরও জানেন না।।’

‘তাই যারা অভিনয় করার জন্য আসছেন ডাইরেক্ট সেই প্রডাকশন হাউস গুলোতে যান।। যাদের নাম আছে, প্রজেক্ট চলছে।।এমন হাউস কলকাতায় যে প্রচুর এমন না।। আমাদের খুব ছোট্ট একটা ইন্ডাস্ট্রি।। হাতে গোনা প্রডাকশন হাউজ। তাই 5 দিন হয়তো ফিরে আসবেন।। 6দিনের মাথায় ঠিক কারুর সাথে কথা বলার সুযোগ হবে।। ডিরেক্ট ষ্টুডিও তে যান।। সেখানে প্রোগ্রামার,ep, director, assistant director এদের সাথে যোগাযোগ করুণ।। অন্য কারুর সাথে না।। সঠিক পথে হাঁটুন, সেটা হয়তো সময় সাপেক্ষ, লড়াই বেশি ..কিন্তু ঠকবেন না।। আর সবসময় মাথায় রাখবেন আপনি কাজ করলে আপনি টাকা পাবেন।। আপনাকে কোথাও টাকা দিতে হবে না।। আগে সঠিক লোকজনের কাছে পৌঁছান, নিজেকে চেনান।’