মহাকালেশ্বর মন্দিরে পূজার সময়

মহাকালেশ্বর মন্দিরে পূজার সময়

Puja Time At Mahakaleshwar Temple

উজ্জয়িনের মহাকালেশ্বর মন্দিরটিতে মহাকাল রুপে অধিষ্ঠান করছেন স্বয়ং দেবাদিদেব মহাদেব। যিনি ত্রিকালদর্শী নামেও পরিচিত। এই মন্দিরের শিবলিঙ্গকে স্বয়ম্ভূ বা শিবের সাক্ষাৎ মূর্তি বলে মনে করা হয়। এমনটা বিশ্বাস করা হয় যে মহাকালের দর্শন করলেই মানুষের জীবনের সমস্ত দুঃখ-কষ্ট নাশ হয়। এই মন্দিরের আর একটি বিশেষত্ব হল ভস্ম আরতি, ভস্ম দিয়ে মহাদেবের আরতি করা হয়।

উজ্জয়িনী শহরে মহাকালের ভস্ম আরতি দেখতে দূর-দূরান্ত থেকে লক্ষাধিক মানুষ আসেন। শুধু তাই নয়, সময়ে সময়ে আরতি, ভোগ নিবেদন সবটাই করা হয় নিয়ম মেনে। আজকের আলোচনায় রইল মহাকালেশ্বর মন্দিরে কোন সময়ে কি কি পূজা হয় সেই বিষয়ে।

আপনিও যদি মহাকালের দর্শন করতে চান, তাহলে কোন সময়ে কি কি পূজা হয়, দর্শনের সময় সবটাই জানতে পারবেন আজকের নিবন্ধ থেকে।

1. ভস্ম আরতি

উজ্জয়নের মহাকাল মন্দিরে প্রতিদিন ভোর ৪ টায় ভস্ম আরতি করা হয়। সারা বিশ্ব থেকে ভক্তরা এই পবিত্র অনুষ্ঠানের সাক্ষী হতে সমবেত হয়। অশ্বত্থগাছ, শমী, পলাশ গাছ, অমলতাস ও বেল গাছের কাঠ পুড়িয়ে তৈরি করা হয় এই ভস্ম। ভস্ম আরতির পরে, এই ভস্ম ভক্তদের প্রসাদ হিসাবে বিতরণ করা হয়। এটা বিশ্বাস করা হয় যে যারা ভস্মকে প্রসাদ হিসাবে গ্রহণ করেন, তারা স্বয়ং মহাকালের আশীর্বাদ পান।

2. দাত্যোদক আরতি

ভস্ম আরতির পরই বৈদিক মন্ত্রের সাথে সাথে দুধ, দই, মধু, ঘি এবং জল দ্বারা মহাকাল কে স্নান করানো হয়। বাবা মহাকালের দ্বিতীয় আরতির সময় সকাল ৭টা। এই সময়, বাবার বিশেষ অলঙ্করণ পরে আরতি করা হয় একে দাত্যোদক আরতি বলা হয়।

3. ভোগ আরতি

বাবা মহাকালের তৃতীয় আরতির সময় সকাল ১০টা। এই আরতিতে বাবাকে সজ্জিত করা হয় এবং ভোগ নিবেদন করা হয় এবং আরতি করা হয়। একে ভোগ আরতি বলে।

4. সন্ধ্যা আরতি

বাবা মহাকালের চতুর্থ আরতি হল সন্ধ্যা আরতি বলা হয়। এটি বিকেল ৫ টায় হয়, যেখানে বাবাকে বিশেষ সাজসজ্জার পরে আরতি করা হয়।

5. শ্রী মহাকাল আরতি

মহাকাল বাবার পঞ্চম আরতিকে শ্রী মহাকাল আরতি বলা হয়। এই আরতির সময় সন্ধ্যা ৭টা।

6. শয়ন আরতি

বাবা মহাকালের নিত্য আরতির শেষ শয়ন আরতি। প্রতিদিন রাত সাড়ে ১০টায় হয় এই আরতি। মহাকালকে সুন্দর বেশে সাজিয়ে এই আরতি করা হয়।

পরিবর্তনশীল ঋতু এবং বিশেষ অনুষ্ঠানের জন্য মন্দিরে দর্শনের সময় এবং পূজার সময়ের কিছুটা পরিবর্তন হতে পারে। মহাকালেশ্বর মন্দির সারা বছর ধরে বিভিন্ন উত্সব এবং বিশেষ অনুষ্ঠান উদযাপিত হয়। মহা শিবরাত্রি, শ্রাবন মাস, নাগ পঞ্চমী, কার্তিক পূর্ণিমার মত বিশেষ অনুষ্ঠান গুলিতে মন্দির সহ মহাকালকে সুন্দরভাবে সাজানো হয়।

এখানকার ওঙ্কারেশ্বর মহাদেবের মূর্তিটি মহাকাল মন্দিরের গর্ভগৃহের ঠিক ওপরেই রয়েছে। মন্দিরের গর্ভগৃহের পশ্চিমে রয়েছে গণেশের মূর্তি। উত্তর দিকে রয়েছে পার্বতীর মূর্তি। পূর্ব দিকে রয়েছে কার্তিকের মূর্তি। দক্ষিণে রয়েছে শিবের বাহন নন্দীর মূর্তি। মন্দিরের তৃতীয় তলে আছে নাগচন্দ্রেশ্বর মূর্তি। কেবলমাত্র নাগপঞ্চমীর দিনই তা ভক্তদের দর্শনের জন্য খুলে দেওয়া হয়। প্রাচীনকালের ইতিহাসের সাথে, এই মন্দিরটি ভারতের সমৃদ্ধ সাংস্কৃতিক এবং আধ্যাত্মিক ঐতিহ্যের প্রমাণ হিসাবে নজির গড়েছে।