সোশ্যাল মিডিয়ার দৌলতে সাধারণ মানুষ জেনেছিলেন বর্ধমানের নন্দিনী পরিশ্রমের কাহিনী। যার পুরো নাম মমতা গঙ্গোপাধ্যায়। ইউটিউবের ফুড ব্লগ থেকেই এখন সে জনপ্রিয় হয়ে উঠছে। এমবিএ পাশ করে নিজের চাকরি ছেড়ে বাবার-মায়ের পাশে দাঁড়াতে ফুটপাতে বাবার হোটেল সামলাচ্ছেন এই আধুনিক নারী। তাঁর কথা বলার ভঙ্গি, স্মার্টনেস দেখে সকলে তাঁকে ‘স্মার্ট দিদি’ বলেই ডাকেন।
রাস্তার ধারে তাঁর ছোট হোটেল এখন বড় বড় হোটেলকেও হার মানাচ্ছে। মাত্র ৩০ টাকার ভেজ থালি, ১০০ টাকার চিকেন থালি আর মটন ২০০ টাকায়, নজর কেড়েছেন এই নন্দিনী। তাঁর হাতের রান্নাও নাকি খুব সুস্বাদু। পথ চলতি মানুষ থেকে অফিসে স্টাফ এখন অফিস পাড়ার এই হোটেলে ভিড় জমাচ্ছে ‘স্মার্ট দিদি’র হাতে রান্না খেতে। একগাল হাসি নিয়ে ধোঁয়া ওঠা ভাত পরিবেশন করতে ব্যস্ত থাকেন সারাদিন। অক্লান্ত পরিশ্রমের পরও তাঁর মুখ সবসময় মিষ্টি হাসি দেখেই সবাই মুগ্ধ। এমনকি বাবা-মায়ের পাশে কীভাবে দাঁড়াতে হয় এই জেনারেশনকে শিখা দিচ্ছে সে।
একটা সময় ছিল বাবার ব্যবসাতে মার খাচ্ছিল। নন্দিনী জানিয়েছেন এমন অনেক দিন গেছে যখন বউনি হয়নি। সেই খাবারগুলো শিয়ালদহের আশেপাশের ভিখারিদের খাবার বিতরণ করে দেওয়া হত। চলতি বছরের জানুয়ারি মাসে বাবা-মাকে নিয়ে নতুন কাজের সন্ধানে যাওয়ার কথা ছিল গুজরাটে। কিন্তু আচমকাই ছবিটা কেমন পাল্টে যায়। ২৩-২৪ ডিসেম্বর নাগাদ একের পর ইউটিউবাররা আসতে থাকে। তাঁর পরিশ্রমের কথা শোনে, হাতের রান্না খেয়ে প্রশংসা জানায়। হঠাৎ করে কেমন যেন ভাইরাল হয়ে গেলন নন্দিনী। এখন তাঁর ছোট হোটেলে তাঁর রান্না খেতে লাইন দিয়ে দাঁড়িয়ে থাকেন মানুষ। তাই সিদ্ধান্ত নেন এই হোটেলটাকেই বড় করে তোলার।
সোশ্যাল মিডিয়ায় সুবাদে আজ সাধারণ মানুষ থেকে ভাইরাল হয়ে উঠেছেন নন্দিনী। এবার জনপ্রিয়তা মিলতেই নতুন যাত্রায় পা রাখলেন তিনি। হয়ে উঠলেন ট্র্যাভেল ভ্লগার। বেশ কিছুদিন আগেই ইউটিউব চ্যানেল খুলেছেন নন্দিনী। সম্প্রতি সুন্দরবন নিয়ে শেয়ার করে ফেলেছেন ট্র্যাভেল ভ্লগ। একজন বড় ইউটিউবার হয়ে ওঠার স্বপ্ন সকলেই দেখেন। নন্দিনীও তার ব্যতিক্রম নন। তার এই নতুন যাত্রায় খুশি হয়েছেন তার ভক্তরা।