আজকের এই পোস্টে আমরা ছাত্রছাত্রীদের জন্য বর্ষাকাল রচনা নিয়ে হাজির। যা খুব সহজ ভাষায় লেখা তাদের সুবিধার্থে। এখানে ১০০, ২০০ থেকে ৫০০, ১০০০ শব্দের বর্ষাকাল নিয়ে রচনা রইল।
Read more: বিশ্বকবি রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর রচনা । ছাত্রছাত্রীদের জন্য সহজ ভাষায় প্রবন্ধ
বর্ষাকাল রচনা (১০০ শব্দ)
- বাংলার ছয় ঋতুর মধ্যে দ্বিতীয় স্থানে রয়েছে বর্ষাকাল।
- বাংলার আষাঢ় ও শ্রাবণ এই দুই মাস নিয়ে বর্ষাকাল। ইংরাজির সাধারণত জুন মাসে শুরু হয় এবং সেপ্টেম্বর পর্যন্ত স্থায়ী হয়।
-
বর্ষাকাল গ্রীষ্মের তাপ থেকে স্বস্তি এনে দেয়। তাই বর্ষাকাল আমাদের সকলের জন্য জাদুকারি।
- একটানা বৃষ্টির ফলে মাঠ-ঘাট-হ্রদ চারিদিকে জলে ভরে ওঠে।
- মাঝে মাঝে বজ্রপাত ও বিদ্যুৎ চমকানির সাথে বৃষ্টি হয়।
- বর্ষাকালে প্রকৃতি সতেজ এবং সবুজ দেখায়।
- এই সময় গন্ধরাজ, কদম, জুঁই, কদম, কেতকী ফুল ফোটে।
- পর্যাপ্ত বৃষ্টিপাতের কারণে ফসল ভালো জন্ম হয় তাই বর্ষাকাল কৃষকদের মুখে হাসি ফোঁটায়।
- প্রচুর বৃষ্টিপাতের জন্য অনেক জায়গায় বন্যা দেখা যায়।
- সব মিলিয়ে বর্ষাকাল প্রকৃতির নতুন রুপ ধারণ করে।
Read more: রইল ছাত্রছাত্রীদের জন্য সহজ ভাষায় শিক্ষক দিবসের রচনা
বর্ষাকাল রচনা (২০০-৫০০ শব্দের)
ভারতের ছয়টি ঋতুর মধ্যে বর্ষাকাল অন্যতম। গ্রীষ্মের দাবদাহের পরেই হাজির হয় ঋতুরানী বর্ষা। বর্ষকাল শুরু হয় জুলাই মাসে এবং শেষ হয় অক্টোবর মাসে। এটি প্রাণী এবং উদ্ভিদের জন্য শ্রেষ্ঠ ঋতু। সূর্যের তাপের থেকে এটি আমাদের মুক্তি দেয়। বর্ষাকালে প্রকৃতি তাঁর অন্য রুপ পায়। অতিরিক্ত বৃষ্টিপাতের জন্য পুকুর, নদী, খাল-বিল জলে ভরে ওঠে। দৈনন্দিন জীবনযাত্রার ব্যাঘাত ঘটে।
এটা কৃষকদের জন্য উপযুক্ত সময়। তারা ভালো ফসলের উৎপন্ন করতে পারে। এই সময় প্রকৃতি সবুজে ঘেরা থাকে। আকাশে ভরা মেঘ থাকে। বর্ষকালে প্রকৃতি সুন্দর এবং মনোরম থাকে। আমরা আকাশে রামধনু দেখতে পাই।
বর্ষাকাল কৃষিকাজের জন্য শ্রেষ্ঠ ঋতু। এটা এটা আমাদের জন্য শীতল এবং আরামদায়ক মরসুম। এই ঋতু আমাদের বিভিন্ন ধরণের সবজি, ফল রবং ফুল উপহার দেয়। তবে এই ঋতুতে অতিরিক্ত বৃষ্টি হওয়ার জন্য জল জমে যার ফলে বিভিন্ন রোগের সৃষ্টি হয় যেমন ম্যালেরিয়া, ডেঙ্গু ইত্যাদি। তবে সব মিলিয়ে এই ঋতু আমাদের জন্য খুব ভালো।
Read more: ছাত্রছাত্রীদের জন্য স্বামী বিবেকানন্দের রচনা
বর্ষাকাল রচনা (৫০০-১০০০ শব্দের)
ভূমিকাঃ
আমাদের দেশের ছয়টি ঋতুর মধ্যে একটি হল বর্ষাকাল। আষাঢ় আর শ্রাবণ এই দুই মাস বলা হয় বর্ষাকাল। গ্রীষ্মের দাবদাহের পরে হাজির হয় বৃষ্টি মুহুর বর্ষাকাল, সবুজে ভরে ওঠে চারিদিক।
সময়কালঃ
বৈশাখ জ্যৈষ্ঠ বিদায় নিতেই আগমন হয় বর্ষকাল। আষাঢ়-শ্রাবণ এই দুই মাস নিয়ে বর্ষা। এটি গ্রীষ্মের পরে শুরু হয় এবং ভাদ্র ও আশ্বিন মাস পর্যন্ত স্থায়ী হতে পারে। এই সময় আকাশ মেঘে ঢাকা থাকে, ঘন ঘন বৃষ্টি হয়, এবং কখনো কখনো বজ্রপাত ঘটে।
প্রাকৃতিক রুপঃ
আষাঢ় শ্রাবণ মাসে বর্ষার আসল রূপটি দেখা যায়। বেশিরভাগ সময় আকাশ কালো মেঘে ঢাকা। গুরুগুরু মেঘ ডাকে, বিদ্যুৎ চমকায়, বাজ পড়ে। যখন-তখন ঝমঝম করে বৃষ্টি নামে। চারিদিকে ঝাপসা দেখায়। বর্ষাকালে পুকুর, দিঘি, খাল, বিল, নদীনালা জলে থৈ থৈ করে। এই সময় কদম, কেতকী, জুঁই, রজনীগন্ধা প্রভুতি ফুল ফোটে। চারিদিকে সতেজ, সবুজ, গাছপালা, কালো মেঘের বুকে বিদ্যুতের ঝলকানি, বৃষ্টির শব্দ, ব্যাঙের ডাক সব মিলিয়ে বর্ষার প্রকৃতি অপরূপা শোভা ধারণ করে।
উপকারিতাঃ
বর্ষার আগমনে কৃষকের মুখে হাসি ফুটে ওঠে। মাঠে মাঠে চাষাবাদের কাজ শুরু হয়। বাঙালির প্রধান খাদ্যশস্য ধানের চাষ এই সময় সব থেকে ভালো হয়। এছাড়াও কৃষিকাজ বর্ষার ওপর নির্ভর করে এই সময় জমিতে পলিমাটিতে পড়ে। সেজন্য প্রচুর ধান উৎপন্ন হয়। শাকসবজিও প্রচুর পাওয়া যায়। বর্ষাকালে কাঁঠাল, পেয়ারা, তাল, আতা, আনারস, কলা প্রভৃতি ফল পাওয়া যায়।
অপকারিতাঃ
বর্ষাকালে নানা রকমের অসুবিধা ভোগ করতে হয় বৃষ্টির কারণে। রাস্তাঘাট কাদায় ভরে যায়। চলেফেরায় খুব কষ্ট হয়। ম্যালেরিয়া, আমাশয়, টাইফয়েড প্রভৃতি রোগ দেখা যায়। অতিবৃষ্টিতে ফসল নষ্ট হয়ে যায়। অনেক কাঁচাবাড়ি ধ্বসে পড়ে। অনেক গবাদি পশুর জীবনহানি হয়।
উপসংহারঃ
বর্ষার সুবিধা এবং অসুবিধা উভয়ই রয়েছে। তবে এই ঋতুতে ক্ষতির চেয়ে লাভ বেশি। তাই আমরা বর্ষা ঋতুকে ভালোবাসো। বর্ষা ঋতু আমাদের কাছে আশীর্বাদ স্বরূপ।
Read more: ছাত্রছাত্রীদের জন্য সহজ ভাষায় নারী শিক্ষার রচনা
Read more: শিক্ষার্থীদের জন্য সহজ ভাষায় পরিবেশ দিবস এর রচনা
প্রায়শই জিজ্ঞাসিত প্রশ্ন (Frequently Asked Questions)
প্রশ্নঃ চতুর্থ বা পঞ্চম শ্রেণীর শিক্ষার্থীদের জন্য বর্ষাকাল রচনা কত শব্দের হতে পারে?
উঃ চতুর্থ শ্রেণীর জন্য, ১০০ থেকে ১৫০ শব্দের লক্ষ্য রাখুন। পঞ্চম শ্রেণীর জন্য, ২০০ থেকে ৩০০ শব্দের প্রবন্ধ উপযুক্ত।
প্রশ্নঃ কীভাবে বর্ষাকাল রচনা লিখতে হবে?
উঃ বর্ষকাল সম্পর্কিত রচনা লিখতে হলে ভূমিকা দিয়ে শুরু করতে হবে। সময়কাল, প্রাকৃতিক অবস্থা, উপকারিতা, অপকারিতা, প্রভাব আর উপসংহারের মতো বিষয় লিখতে হবে।


