একের পর এক লিড রোলে না! অভিনয় জগত ছাড়ার আসল কারণ জানালেন তোড়া ওরফে মধুবনী গোস্বামী

মধুবনী গোস্বামী

সংসার জীবন, সন্তান সামলানোর পাশাপাশি অনেক অভিনেত্রীরা রয়েছেন যারা নিজেদের কর্মজীবনটা চালিয়ে যাচ্ছেন। অনেক অভিনেত্রীরা মা হওয়ার পরেও পর্দায় ফিরে এসেছেন। তাদের থেকে একটু ব্যতিক্রম অভিনেত্রী মধুবনী গোস্বামী।

ছোটপর্দায় জনপ্রিয় মুখ তিনি। বিয়ের পর থেকে খুব কম কাজ করেছেন আর কেশবকে মানুষ করার জন্য নিজের পেশা ত্যাগ করেছেন। সিরিয়াল দুনিয়ায় যখন ক্যারিয়ার তুঙ্গে ঠিক সেই সময় অভিনয় জগত থেকে নিজেকে একটু একটু করে গুটিয়ে নেন মধুবনী। তার স্বামী অভিনেতা রাজা গোস্বামী এবং শাশুড়ি বরাবর চাইতেন মধুবনী অভিনয়টা করুক কিন্তু নিজের ছেলের জন্যই কাজ করা ছেড়ে দেন। তবে অভিনেত্রীর মধ্যে কোনও আক্ষেপ নেই। একজন মা হিসাবে এটাই তার কাছে শ্রেষ্ঠ বলে মনে হয়।

সম্প্রতি মধুবনী একটি  ভিডিও পোস্ট করেন। এই ভিডিওতে অভিনয় ছাড়ার পিছনে আসল কারণ জানান তিনি। মধুবনী বলেন, ‘আমি যখন বিয়ে করি তখন আমি আমার কেরিয়ারের সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ সময়ে ছিলাম। বিয়ে করার পর কিন্তু আমি আমার কাজ অনেক কমিয়ে দিই। ‘আমার শ্বশুর-শাশুড়ি আমার মা-বার থেকেও বেশি। ওঁরা আমাকে এতটা ভালোবাসেন, সব সময় পাশে থাকেন সেটা বলে বোঝানো সম্ভব নয়। ওঁদের উৎসাহেই আমি বিয়ের পর অনেক কাজ করেছি। ওঁরা রীতিমতো ঘাড় ধাক্কা দিয়ে আমাকে কাজে পাঠাতেন। আমি কিন্তু চেয়েছিলাম আরাম করে সংসার করতে। আমি এরকমই।’

অভিনেত্রী আরও বলেন, ‘কেশব জন্মানোর পর যখন আমি আবার আমার স্বাভাবিক ওজনে ফিরে আসি, তখন আমার কাছে প্রচুর অফার এসেছিল। যে দুটো লিডিং চ্যানেল আছে সেখান থেকে অনেক ফোন আসে। মুখ্য চরিত্র, নেগেটিভ লিড, প্যারালাল লিড, এক কথায় বলা যেতে পারে সব ভালো ভালো চরিত্রের জন্য অফার আসে আমার কাছে। কিন্তু আমি সকলকে না করে দিই। কারণ আমার মধ্যে একটা শান্তি ছিল যে আমি সেই সময়টা আমার ছেলেটাকে দিতে পারছিলাম। আমি তো এই পেশায় যুক্ত, আরও অনেককে যাঁরা অন্য পেশাতেও রয়েছেন তাঁদের বেশির ভাগকেই সন্তানের জন্য কাজ ছেড়ে বাড়িতে বসে যেতে দেখিনি। কিন্তু আমি বিনোদন জগতে থেকেও এই সিদ্ধান্তটা নিয়েছিলাম। আমার ছেলে যে সকলের সামনে এত সুন্দর করে কথা বলে তা কিন্তু হুট করে হয়ে যায়নি। আমি বছরের পর বছর, মাসের পর মাস ওর সঙ্গে থেকে, ওর সঙ্গে কথা বলে বলে এই বিষয়টা এসেছে। এর জন্যই ও এত সাবলীল ভাবে কথা বলে। একটা বাচ্চা কী রকম হবে তার সিংহ ভাগ নির্ভর করে তাঁর বাবা-মায়ের উপর। জানবেন তাঁর বাবা-মা অতোটা ভালো বলেই সে অত ভালো হয়েছে।’

‘আজকাল চাকুরীজীবী মায়েরা সন্তানকে আয়ার কাছে বাড়িতে রেখেও কাজে যাচ্ছেন। অনেকেই এক্ষেত্রে বলতে পারেন সবার হয়তো আমার মতো সুযোগ-সুবিধা থাকে না। আমার অনেক ব্যাঙ্ক-ব্যালেন্স, টাকা আছে। না এটা ব্যাঙ্ক-ব্যালেন্স, টাকা থাকলেই হয় না। যাঁরা সবদিক সামলাতে পারেন তাঁদের আমি নমস্কার জানাচ্ছি। কারণ সত্যি তাঁরা সবটায় ভারসাম্য রাখতে পারেন। কিন্তু কারুর ক্ষেত্রেই টাকার কমের জন্য এটা হয় না। মি আমার বাচ্চাকে দেখে যেটা করতে পারি সেটাই করি। আমার সন্তানকে সামলে আমি স্যোশাল মিডিয়ায় কাজ করতে পারি। কারণ এটার জন্য আমাকে আমার সন্তানকে কারুর কাছে রেখে, কোথাও গিয়ে ১০.-১২ ঘণ্টা থাকতে হয় না। আমি কেশব সামলাতে সামলাতেও নিজের সময় মতো সবটা করে নিতে পারি। আমরা পার্লারের বিষয়টাও তাই, ওটার দেখাশোনা আমি বাড়ি থেকে বসেই করতে পারি। হ্যাঁ আমাকে ওখানে যেতেও হয়, কিন্তু সেটা বাড়ির কাছাকাছি, তাই যাতায়াত করতে পারি। তবে বেশির ভাগটাই আমি বাড়ি থেকে করতে পারি। আজকের যুগে আমি একটু ব্যতিক্রমী।’

সূত্রঃ https://bangla . hindustantimes . com/