আমরা সকলেই জানি উত্তরাখণ্ড রাজ্যটি দেবরাজ্য হিসেবে পরিচিত। আর এই দেবরাজ্যেই রয়েছে প্রসিদ্ধ তীর্থক্ষেত্র কেদারনাথ। যেখানে স্বয়ং দেবাদিদেব মহাদেবের অধিষ্ঠান। দেবভূমি উত্তরাখণ্ড রাজ্যের রুদ্রপ্রয়াগ জেলায় অবস্থিত অবস্থিত এই মন্দিরে কেদারবাবার জ্যোতির্লিঙ্গটি বারোটি জ্যোতির্লিঙ্গের মধ্যে অন্যতম। এমনকি প্রাকৃতিক জলপ্রপাত তুষার আচ্ছাদিত পাহাড়ের সৌন্দর্যের মাঝে অবস্থিত কেদারনাথ ধাম উত্তরাখণ্ড চারধাম যাত্রার (বৈদ্যনাথ, কেদারনাথ, গঙ্গোত্রী, যমুনেত্রী) অন্যতম অবিচ্ছেদ্য অংশ।
এই মন্দির নিয়ে নানা পৌরাণিক কাহানী থাকলেও মন্দিরটি প্রতি বছর বৈশাখ মাসে দর্শণার্থীদের জন্য খোলা হয় এবং কার্তিক মাসের প্রথম দিনে বন্ধ করে দেওয়া হয়। শীতকালে প্রচণ্ড তুষারপাতের কারণে মন্দিরের রাস্তা বন্ধ থাকে তাই মন্দির ছয় মাস বন্ধ থাকে আর বাকি ছয়মাস খোলা থাকে।
কেদারনাথ দর্শন করা অনেকেরই স্বপ্ন থাকে। অনেকে আবার হয়ত কেদারনাথ যাওয়ার পরিকল্পনাও নিচ্ছেন। সেক্ষেত্রে কেদারনাথ ভ্রমণ নিয়ে অনেকের মনেই অনেক প্রশ্ন থাকে। কেমন করে যাবো, কোথায় থাকবো, কোন সময়ে গেলে বাবার দর্শন পাওয়া যাবে এমন আরও কিছু প্রশ্নের উত্তর রইল আজকের নিবন্ধে।
কেদারনাথ মন্দিরে কিভাবে যাবেন?
উত্তরাখণ্ড রাজ্যের চোরাবাড়ি হিমবাহের কাছে, মন্দাকিনী নদীর তীরে সমুদ্রপৃষ্ঠ থেকে ৩,৫৮৩ মিটার উপরে অবস্থিত কেদারনাথ মন্দির পঞ্চ কেদার এর একটি অংশ। যার সবকটি গাড়োয়াল হিমালয়ে অবস্থিত। আর এই মোহনীয় স্বর্গরাজ্য যদি আপনার পরবর্তী ডেস্টিনেশন হয় তবে কেদারনাথ পৌঁছানোর কিছু সহজ উপায় রইল আপনাদের জন্য। কলকাতা থেকে কেদারনাথের দূরত্ব প্রায় ১,২৯৩ কিলোমিটার। আর এই পবিত্র ধাম পৌঁছাতে হলে জার্নি শুরু করতে হয় হরিদ্বার বা দেরাদুন থেকে। এক্ষেত্রে আপনি যদি কলকাতানিবাসী হয়ে থাকেন তাহলে-
বিমানে – কলকাতা থেকে বিমানে প্রথমে পৌঁছে যান দেরাদুনের জলি গ্রান্ট বিমানবন্দর। সেখান থেকে ৫ ঘণ্টার দূরত্ব অতিক্রম করে পৌঁছে যান গৌরীকুণ্ড। গৌরীকুণ্ড থেকে পৌঁছে যান কেদারনাথের উদ্দেশ্যে।
এছাড়াও আপনি ফ্লাইটে দিল্লি পৌঁছাতে পারেন সেখান থেকে গাড়িতে কিংবা ট্রেনে হরিদ্বার, সেখান থেকে গুপ্তকাশি (২০৮ কিমি)। গুপ্তকাশি থেকে শোনপ্রয়াগ (৩০ কিমি), সেখান থেকে যেকোন গাড়িতে গৌরিকুন্ড। আর গৌরিকুন্ড থেকেই কেদারনাথ ট্রেক শুরু হয়। গৌরিকুন্ড থেকে কেদারনাথ মন্দিরের দূরত্ব প্রায় ২৩ কিমি। গৌরীকুন্ড থেকে হাঁটা পথ বা ট্রেক করে ২৩ কিমি পথ অতিক্রম করে পৌঁছতে হবে কেদারনাথ মন্দির। গৌরীকুণ্ড থেকে ভীমবলি,সেখান থেকে লিঞ্চোলি হয়ে কেদারনাথ।
ট্রেনে – হাওড়া থেকে ট্রেনে ধরে পৌঁছে যান হরিদ্বার। সেখান থেকে গাড়ি ভাড়া করে পৌঁছে যান গুপ্তকাশী। এরপর গুপ্তকাশী থেকে গাড়ি নিয়ে পৌঁছে যান শোনপ্রয়াগ অথবা গৌরীকুণ্ড। এছাড়াও ট্রেনে ঋশিকেশ পৌঁছাতে পারেন, সেখান থেকে বাস কিংবা যেকোন গাড়ি করে শোনপ্রয়াগ। সেখান থেকে গৌরীকুণ্ড হয়ে কেদারনাথের উদ্দেশ্যে।
সড়কপথে- কলকাতা থেকে নিজস্ব গাড়িতে কিংবা বাসে দিল্লি। দিল্লি থেকে দেরাদুন হয়ে হরিদ্বার। সেখান থেকে কেদারনাথ ট্রেক করতে পারেন।
হেলিকপ্টারে- অনেকেই যারা হেলিকপ্টারে যেতে চান তারা শোনপ্রয়াগ না গিয়ে ফাটা কিংবা গুপ্তকাশির আসে পাশে নেমে সেখান থেকে হেলিকপ্টারে কেদারনাথ পৌঁছাতে পারেন।
কেদারনাথ মন্দিরের কাছে থাকার সেরা জায়গা । হোটেল
গ্রীষ্মকাল আসতে না আসতেই তীর্থযাত্রীদের ভিড় দেখা যায় কেদারনাথ মন্দিরে। যদিও অনেকের কাছে ড্রিম ডেস্টিনেশন হল কেদারনাথ যাত্রা। তাই এই পবিত্র ধামে এসে কোথায় থাকব, কোন হোটেলটা বেস্ট হবে সেই নিয়ে প্রশ্ন থাকে অনেকের মনেই।
মন্দির থেকে ১ কিমি এর কম দুরত্বে রয়েছে হোটেল কেদার ইন, হোটেল কেদার গঙ্গা। প্রায় ১.৫- ২ কিমির মধ্যে রয়েছে হোটেল কেদারনাথ প্যারাডাইস, হোটেল কেদারনাথ প্যালেস। এছাড়াও মন্দির সংলগ্ন এলাকায় রয়েছে আর অনেক হোটেল।
কেদারনাথ মন্দির যাওয়ার সেরা সময়
ভ্রমণপ্রিয় দর্শনার্থীদের কাছে কেদারনাথ ভ্রমণ স্বপ্নের মতো। মে-জুন মাস জুড়ে এখানে পর্যটকদের ভিড় লেগেই থাকে। যেহেতু শীতকালীন সময়ে কেদারনাথ ধাম ও আসে পাশের এলাকা বরফের মোটা চাদরে আবৃত থাকে, তাই বছরের ছয়মাস একদমই এখানে যাওয়া যায়না। তাই ঠিক কোন সময় গেলে বাবার দর্শন পাওয়া যাবে চলুন জেনে নেওয়া যাক-
প্রতি বছর বৈশাখ মাসের (ইংরাজির মে মাসে) অক্ষয় তৃতীয়ার দিন মন্দিরের দরজা খোলা হয়। আবার নভেম্বর মাসে ভ্রাতৃ দ্বিতীয়া বা ভাই ফোটার দিন মন্দিরের দরজা সাধারণ মানুষের জন্য বন্ধ করে দেওয়া হয়। মন্দিরের দরজা বন্ধ থাকাকালীন সময়ে উখিমঠের ওমকারেশ্বর মন্দিরে ভোলেনাথের পঞ্চমুখী মূর্তি স্থানান্তরিত করা হয়। বছরের ছয়মাস এখানেই কেদার বাবার পূজা করা হয়।
মন্দিরের দরজা খোলার দিনেই আবারও বাবার পঞ্চমুখী মূর্তিকে তার শীতকালীন আবাসস্থল থেকে পুনরায় কেদারনাথের মন্দিরে আনা হয়। আর এই যাত্রাকে ডোলি যাত্রা বলা হয়। এই যাত্রা দেখার জন্য ওই দিন প্রচুর মানুষের ভিড় হয়, কারণ এই দিন খুব কাছ থেকে বাবার পঞ্চমুখী মূর্তির দর্শন পাওয়া যায়।
কেদারনাথ গিয়ে যদি চারপাশের প্রাকৃতিক দৃশ্য উপভোগই না করতে পারেন তাহলে যাত্রাটাই অসম্পূর্ণ থেকে যায়। তাই এক্ষেত্রে মে, জুন মাস হল কেদারনাথ যাত্রার পিক টাইম। কারণ এই সময়ে ঠান্ডাটা একটু কম থাকে। জুলাই আগস্ট মাসে অনেকেই কেদারনাথ ভ্রমনের পরিকল্পনা করেন না কারণ এই সময় বর্ষার কারণে মন্দির পৌঁছানো খুবই কস্টকর হতে পারে। অন্যদিকে মন্দির ভ্রমনের বেস্ট টাইম হতে পারে সেপ্টেম্বর মাসের শেষ সপ্তাহ থেকে নভেম্বরের প্রথম সপ্তাহ। কারণ এই সময়টায় আবহাওয়া বেশ মনোরম থাকে।
কেদারনাথ মন্দিরে পূজার সময়
কেদারনাথ মন্দির শুধু প্রসিদ্ধ তীর্থস্থানই নয়, এই মন্দিরের সঙ্গে জড়িয়ে রয়েছে বহু পৌরাণিক কাহিনি ও অজানা রহস্য। পুরাণ মতে জানা যায়, কুরুক্ষেত্র যুদ্ধ শেষ হওয়ার পর মহাভারতে জ্ঞাতি হত্যার পাপ থেকে মুক্তি পেতে পান্ডবগন তীর্থ দর্শন করতে বেরিয়ে পৌঁছেছিলেন। সেই সময় তারা কাশীতে এসে জানতে পারেন ভগবান শিব তাঁদের দর্শন না দেওয়ার জন্য ষাঁড়ের ছদ্মবেশে পাহাড়ের কোলে আত্মগোপন করেছেন। এরপর থেকে কেদারনাথে বৃষের পিঠের কুঁজকেই জ্যোতির্লিঙ্গ হিসাবেই পুজো করা হয়।
কেদারনাথ মন্দিরে প্রতিদিনের আরতি শুরু হয় ভোর ৪ টে থেকে। সেই সময় চলে বাবার মহা অভিষেক। এরপর হয় রুদ্র অভিষেক। সন্ধ্যায় শিব সহস্রনাম পাঠ করা হয়, অর্থাৎ মহাদেবের ১০০৮ নাম পাঠ করা হয় এই সময়ে। শিব মহিমাস্ত্রোত্র পাঠ ও শিব থান্ডবস্ত্রোত্র পাঠ করা হয় যা মহাবেদের মাহাত্ম্য বর্ণনা করে।
কেদারনাথ মন্দিরের আশেপাশে ঘোরার জায়গা
কেদারনাথ ধামের পাশাপাশি এখানে আর কিছু দর্শনীয় স্থান রয়েছে যা এই স্থানকে আরও বিচিত্র করে তোলে। সেইসাথে কেদারনাথ পর্বত তীর্থযাত্রীদের আকর্ষণের অন্যতম জায়গা। যেখানে বরফে ঢাকা পাহাড় আর নীল আকাশ মিলেমিশে একাকার হয়ে গিয়েছে।
কেদারনাথ মন্দির আসলে পঞ্চকেদারের অংশ। তাই এই মন্দির ছাড়াও রয়েছে আরও চারটি মন্দির- তুঙ্গনাথ, রুদ্রনাথ, মধ্যমহেশ্বর এবং কল্পেশ্বর।
এছাড়াও কেদারনাথ মন্দিরের দক্ষিনে ১ কিমি এর একটু কম হাঁটা পথে রয়েছে ভৈরব মন্দির। কেদার বাবার দর্শনের পাশাপাশি কালভৈরব মহাদেবের রুদ্ররূপ দর্শনে আসে লক্ষ লক্ষ ভক্ত। রয়েছে শোনপ্রয়াগ, চোপ্তা, সেইসাথে এশিয়ার দীর্ঘতম এবং পৃথিবীর দ্বিতীয় উচ্চতম রোপওয়ে স্টেশন আউলি। তুষারময় পাহাড়ের মাঝখানে ৪১৩৫ মিটার উচ্চতায় রয়েছে ভাসুকি হ্রদ। রয়েছে চন্দ্রশীলা থেকে শুরু করে গুপ্তকাশী, ত্রিযুগীনারায়ণ, চোরাবাড়ি লেক, অগস্ত্যমুনি ছাড়াও অন্যান্য দর্শনীয় স্থান।
কেদারনাথ যাত্রায় সেরা খাবার
কেদারনাথ ধাম প্রসিদ্ধ তীর্থস্থানের পাশাপাশি এখানকার রন্ধনপ্রণালীতেও রয়েছে বিশেষ বৈচিত্র্য। তবে কেদার বাবার দর্শনে এসে ব্রেকফাস্ট টু ডিনার, স্ন্যাক্স টু মেইন কোর্স সবটাই পাবেন ভিন্ন রকম স্বাদে।
পাহাড়ি মুলো ও আলু দিয়ে তৈরি একটি খাবার হল থেঞ্চওয়ানি যা এখানকার পরিচিত খাবার গুলির মধ্যে একটি। এছাড়াও আর একটি বিখ্যাত গাড়োয়ালি খাবার যার নাম চেইনস। পালংশাক ও মেথি পাতার সংমিশ্রনে তৈরি রেসিপি কাফালি বেশ সুস্বাদু। রয়েছে ভাং কি চাটনি, ফানু। এছাড়াও মিষ্টি জাতীয় খাবারের মধ্যে রয়েছে ঝাঙ্গর কি খির, কুমাওনি রাইতা, সিঙ্গোরি, আরসা ইত্যাদি।
সচরাচর জিজ্ঞাস্য প্রশ্ন ও উত্তরঃ
প্রঃ কেদারনাথ মন্দির কোথায় অবস্থিত?
উঃ উত্তরাখণ্ডের গাড়োয়াল শহরের কাছে হিমালয়ের কোলে অবস্থিত এই তীর্থভূমি। কাছেই বয়ে চলেছে মন্দাকিনী নদী। যদিও এই পবিত্র ধামের আগের নাম ছিল কেদারখণ্ড। সেই জন্য ভগবান শিব এখানে কেদারখণ্ডের অধিপতি বা কেদারনাথ নামে পুজিত হন।
প্রঃ কেদারনাথ মন্দির পর্যটকদের দর্শনের জন্য কোন সময় খোলা হয় ও বন্ধ হয়?
উঃ শীতকালীন সময়ে অতিরিক্ত বরফের জন্য সারাবছর কেদারনাথ মন্দির খোলা থাকে না। বছরে ছয়মাস খোলা থাকে এই মন্দির। এপ্রিলের শেষের দিকে অক্ষয় তৃতীয়ার দিন মন্দির খোলা হয়। বন্ধ হয় নভেম্বরের প্রথম দিকে, কার্তিক পূর্ণিমায়।
প্রঃ কেদারনাথ মন্দির কবে প্রতিষ্ঠা করা হয়?
উঃ এই মন্দিরের প্রতিষ্ঠাকাল সম্বন্ধে সঠিকভাবে কিছু বলা না গেলেও মোটামুটি ধারণা করা হয় যে অষ্টম শতকে এই মন্দিরের প্রতিষ্ঠা হয়।
প্রঃ কোন নদীর তীরে অবস্থিত কেদারনাথ মন্দির ?
উঃ তুষারাবৃত হিমালয়ের কোলে এবং মন্দাকিনী নদী তীরবর্তী স্থানে অবস্থিত এই মন্দির।
প্রঃ কেদারনাথ মন্দির দর্শনের সঠিক সময় কখন?
উঃ কেদারনাথ মন্দির দর্শনের সঠিক সময় হল মে থেকে জুন মাস এবং সেপ্টেম্বর থেকে অক্টোবর মাস।
প্রঃ কেদারনাথ মন্দির কোন কোন সময়ে খোলা থাকে?
উঃ মন্দিরের মুখ্যদ্বার রাত ৩ টায় খুলে দেওয়া হয় আবার বিকেল ৩ টা থেকে বিকেল ৫ টা অব্দি বন্ধ করে রাখা হয়। আবার বিকেল ৫ টা থেকে রাত ৮ টা ৩০ অব্দি মূখ্যদ্বার খোলা রাখা হয় পূজা দেবার জন্য।
প্রঃ কেদারনাথ ধামে জ্যোতির্লিঙ্গটি ত্রিকোণাকৃতি কেন?
উঃ কথিত আছে, পাণ্ডবরা এখানে তপস্যা করে শিবকে তুষ্ট করেন। ষাঁড়ের ছদ্মবেশে লুকিয়ে রয়েছেন মহাদেব এমন খবর পান পাণ্ডবেরা। কেদারনাথে বৃষের পিঠের কুঁজকেই জ্যোতির্লিঙ্গ হিসাবেই পুজো করা হয়।
প্রঃ কেদারনাথ মন্দির এর প্রধান পূজারীকে কি বলা হয়?
উঃ রাওয়াল
প্রঃ অক্ষয় তৃতীয়ার দিনেই কেন কেদারনাথ মন্দির এর দরজা খোলা হয়ে থাকে?
উঃ অক্ষয় তৃতীয়ার পুণ্যতিথির গুরুত্ব হিন্দু ধর্মে খুব শ্রদ্ধা ও সমীহের সঙ্গে মানা হয়। আদ্যাশক্তির অনন্য রূপ মা অন্নপূর্ণার আর্বিভাব নাকি এই বিশেষ তিথিতেই হয়েছিল। শুধু তাই নয়, হিমালয়ের দুর্গম জায়গায় অবস্থানের পরেও বারবার প্রবল প্রাকৃতিক বিপর্যয়ের সন্মুখিন হওয়া সত্ত্বেও এই পবিত্র ধাম আজও অক্ষয়। তাই এই দিনেই মন্দিরের দরজা খোলা হয়।