সিরিয়াল হোক বা সিনেমা, যেকোনো পার্শ্ব চরিত্রে অভিনয় করা চ্যালেঞ্জিং। কারণ দর্শকের চোখ সবার প্রথমে থাকে নায়ক-নায়িকার উপর। আর তারপর পার্শ্ব চরিত্রের উপর। তাই দর্শকের মন জয় করতে পার্শ্ব চরিত্রে অভিনেতাদের একটু কঠোর পরিশ্রম করতে হয়। আর তা যদি হয় নবাগতা। আর সেরকম একজন অভিনেতা হলেন তন্ময় মজুমদার। যাকে এই মুহূর্তে জি-বাংলার ‘চিরদিনই তুমি যে আমার’ ধারাবাহিকে ‘সন্তু’ চরিত্রে অভিনয় করতে দেখা যাচ্ছে।
ইন্ডাস্ট্রিতে নবাগতা না হলেও দর্শকমহলে পরিচিতির নিরিখে তন্ময়কে নবাগতা বলাই যায়। এর আগে বেশ কিছু ধারাবাহিকে কাজ করলেও সেভাবে দর্শকের নজরে আসেনি। কিন্তু এই একটি চরিত্র যেন অভিনেতার সেই স্বপ্ন পূরণ করে দিয়েছে। নিজের থেকে একেবারে বিপরীতধর্মী একটি চরিত্রে কাজ করা মুখের কথা নয়।
বয়সে বড় হলেও তার আচারণ শিশুসুলভ। এরকম একটি চরিত্রকে পর্দায় নিখুঁত ভাবে ফুটিয়ে তুলতে সক্ষম হয়েছেন তন্ময়। পাশাপাশি খুব অল্প সময়ের মধ্যে অসংখ্য দর্শকের ভালোবাসা পাচ্ছেন।
বহরমপুরের গ্রাম থেকে কলকাতায় উঠে আসা একটি ছেলেকে এই ইন্ডাস্ট্রিতে মাটি দখল করে নিতে প্রচুর লড়াই করতে হয়। প্রথম থিয়েটারের দুনিয়ায় তৈরি করেন নিজের পরিচিতি। এরপর ইন্ডাস্ট্রিতে পায়ের তলায় জমি শক্ত করতে মাথার ঘাম পায়ে ফেলতে হয়েছে তাকে।
একসময় যাকে কেউ চিনতই না, আজ তিনিই বাঙালির ড্রয়িংরুমে সকলের প্রিয় সন্তু। সম্প্রতি সন্তু চরিত্রটি নিয়ে সামাজিক পাতায় নিজের অভিজ্ঞতা শেয়ার করে নিলেন অভিনেতা।
নিজের ফেসবুক পেজে সন্তু থুড়ি তন্ময় লেখেন, “আপনারা সকলেই ইতিমধ্যে জানেন যে “চিরদিনই তুমি যে আমার” এই সিরিয়াল আপনাদের মনকে কতোটা ছুঁতে পেরেছে। মানুষের মনে জায়গা করে নিয়েছে আমাদের এই সিরিয়াল। একটা ভালো টিম থাকলে সব সম্ভব, ভালো কাজ মানুষ পছন্দ করে আবারও প্রমাণিত। এবার আসি সন্তুর কথাই…’ সন্তু ‘ কে আপনারা এতো ভালোবাসা দিয়েছেন , যে আমি সত্যিই আপ্লুত। কঠোর পরিশ্রম, অধ্যবসায় আর অভ্যেস ছাড়া এরকম একটা কঠিন চরিত্রে অভিনয় করা সম্ভব হতো না বলে আমার মনে হয়েছে। এই দীর্ঘ পাঁচ মাসে এটুকু বুঝতে পেরেছি, ঠিক কতোটা সাধনা না করলে এরকম চরিত্রকে জীবন্ত করে তোলা কোনোদিন সম্ভব নয়। আমি আমার সাধ্যমতো চেষ্টা করেছি এই চরিত্রকে জীবন্ত রূপ দেওয়ার, কারণ আমার মনে হয়, একজন অভিনেতার ভালো অভিনয়টাই শেষ কথা বলে।”
“যেদিন আমি এই চরিত্রের জন্য সিলেক্ট হই সেদিন থেকে আজ পর্যন্ত প্রত্যেকটা মুহূর্তে নিজেকে একটু একটু করে ভেঙেছি। বাস্তবের তন্ময় আর টেলিভিশনের সন্তুর মধ্যে রয়েছে বিস্তর ফারাক। আর তাই এই চরিত্রটা হয়ে ওঠার জন্য আমাকে যথেষ্ট পরিশ্রম করতে হয়েছে (যদিও একজন অভিনেতা হিসেবে এটাই আমি পছন্দ করি)। রাতের পর রাত না ঘুমিয়ে শুধু চরিত্রের মনন ধরার চেষ্টা করে গেছি। বরাবরই এরকম একটা চ্যালেঞ্জিং চরিত্রের প্রতি লোভ ছিলো কিন্তু যখন পেলাম তখন বুঝলাম ঠিক কতোটা অধ্যবসায় আর অভ্যেস ছাড়া আপনাদের মন ছুঁতে পারা সম্ভব নয়। দিনের পর দিন খেটে গেছি, এখনও খাটছি, চেষ্টা করে যাচ্ছি যেনো আপনাদের ‘ সন্তু ‘ আরোও অনেকটা ভালোবাসা আপনাদের থেকে অর্জন করতে পারে। জানি আপনারা উজাড় করে এতোটাই ভালবেসেছেন, আমার চেষ্টা করার ইচ্ছেটা যেনো দশগুণ বেড়ে গেছে। আগামী দিনেও এভাবেই সাথে থাকবেন। তাহলে জীবনে শুধু সন্তু নয় যেকোনো চরিত্র দিয়ে আপনাদের ঠিক মন জয় করে নেবো। কথা দিলাম।”