পুরনো দিনের বাংলা সিনেমার অন্যতম জনপ্রিয় খলনায়িকা বলতে সবার আগে যার নাম মাথায় আসে তিনি হলেন বর্ষীয়ান অভিনেত্রী অনামিকা সাহা। বলাবাহুল্য, ইন্ডাস্ট্রি থেকে শুরু করে দর্শকমহল, সবাই তাকে খলনায়িকা হিসাবেই বেশি চেনেন। বিগত কয়েক দশক ধরে বড়পর্দার থেকে শুরু করে যাত্রার মঞ্চ কাঁপিয়ে এসেছেন তিনি। সবরকম চরিত্রেই সমানভাবে সাবলীল এই অভিনেত্রী।
এককালের সেরা দাপুটে অভিনেত্রী ছিলেন তিনি। যার আসল নাম ছিল ঊষা। তবে সিনেজগতে পা রাখার পরই নাম পাল্টে রাখেন অনামিকা সাহা। ১৯৭৩ সালে ‘আশার আলো’ ছবির হাত ধরে অভিনয় জগতে পা রাখেন তিনি। এমনকি উত্তম কুমার, সৌমিত্র চট্টোপাধ্যায়ের সঙ্গেও স্ক্রিন শেয়ার করেছেন। ৩০০-৪০০টিরও বেশি ছবিতে চুটিয়ে অভিনয় করেছেন তিনি। দুর্দান্ত অভিনয়ের জন্য কেরিয়ার জীবনে তাকে পিছন ফিরে তাকাতে হয়নি কখনোই। তাকে পর্দায় দেখলে আট থেকে আশি সবাই ভয় পেত। ভয় ধরিয়ে দেওয়ার জন্য অভিনেত্রীর চোখ দুটোই যথেষ্ট ছিল।
তবে ব্যক্তিগত জীবনে বহু কটাক্ষের সন্মুক্ষিন হতে হয়েছে অভিনেত্রীকে। এক সাক্ষাৎকারে অভিনেত্রী জানিয়েছিলেন, শ্বশুরবাড়িতে নিজের মেয়েকে নিয়ে অনেক কথা শুনতে হয়েছিল তাকে। কটাক্ষ করে তাকে বলা হত, ‘মেয়েও নাকি মায়ের মত নেচে বেড়াবে’। অভিনেত্রী ও তার স্বামী দুজনেই অভিনয় জগতের সাথে যুক্ত থাকায় তাদের মেয়েরও নাকি লেখাপড়া হবে না। অভিনেত্রী আরও জানান, ‘ছোট থেকেই তাই মেয়েকে বারবার করে বলেছিলাম, চিনি মন দিয়ে পড়াশোনা কর। এটা লেখাপড়ার বাড়ি। তোকেও সেটাই করতে হবে। আমার মেয়ে কিন্তু আমার কথা রেখেছে।’
অনামিকা সাহা আর বোধিসত্ত্ব মজুমদারের এক মাত্র কন্যা সন্তান রাই। মা কে কটাক্ষ করার উচিৎ জবাব দিয়েছেন তাদের মেয়ে। মায়ের কথা রাখতে, অভিনয় জগতের সাথে যুক্ত নয়, বর্তমানে মনস্তত্ত্ব নিয়ে গবেষণা করেন রাই। এমনকি তার লেখা গবেষণা পত্র বই আকারে ছেপে বেরোয় এবং সেই বই পড়ানো হয় গোটা বিশ্বে। শুধু তাই নয়, বর্তমানে দিল্লির দুটি কলেজে অধ্যাপনা করেন অভিনেত্রীর মেয়ে রাই।