হাতে কাজ নেই! ‘অটো চালাবো বা রাস্তায় সব্জি বিক্রি করতেও পারবো না’, কান্নায় ভেঙে পড়লেন ‘জগদ্ধাত্রী’ ধারাবাহিকের সাধু ওরফে অভিনেতা সত্যম মজুমদার

অভিনেতা সত্যম মজুমদার

তারকা মানেই ঝা চকচকে জীবন, এমনটাই অনেকে মনে করে থাকেন। তবে পরিস্থিতি কখন কাকে কোন জায়গায় এনে ফেলে দেয় তা হয়তো কেউ বলতে পারে না। তেমনি একজন অভিনেতা হলেন সত্যম মজুমদার।যিনি বর্তমানে ‘জগদ্ধাত্রী’ ধারাবাহিকের সাধু বাটোয়াল নামে পরিচিত।

একসময় চলচ্চিত্র জগতে একাধিক কাজ করলেও এখন তার হাতে কাজ নেই। সারাজীবন অভিনয় পেশাকে ভালোবেসে গেছেন তাই অন্য কোনও অপশন নেই তার হাতে। তাই অভিনেতার সরকারের কাছে অনুরোধ যদি যেকোনো শিল্পীদের জন্য যদি পেনশনের ব্যবস্থা থাকে যাতে বৃদ্ধ বয়সে ডাল-ভাত টুকু জোগাড় হয়।

অনেক পরিশ্রম করে আজ এই জায়গা অভিনেতা সত্যম মজুমদার। তিনি খুব সাধারণ ছাত্র ছিলেন তাই চাকরি করবেন সেই সুযোগটাও নেই। ব্যাংক থেকে ঋণ করে বাড়ি করেছেন। একদিকে আর্থিক ঋণে দায় মাথার উপর, অন্যদিকে প্রতিদিন ডাল-ভাত জোগাড় করতে নাজেহাল হতে হচ্ছে অভিনেতাকে।

আনন্দ বাজার অনলাইনকে অভিনেতা জানিয়েছিলেন, “ছেলে সবে চাকরিতে ঢুকেছে। ওর উপর আর কত চাপ দেব? মাসে ১৪ হাজার টাকা করে বাড়ির লোন দিতে হয়। তার পর সংসারের খরচ, বিদ্যুতের বিল, সবই তো রয়েছে। বাধ্য হয়ে ফেসবুকে লিখলাম কাজ চাই। মাসে তিন-চার দিন কাজ করে কি খরচা তোলা সম্ভব! জানি না। সমাধানের উপায় আমার জানা নেই।”

সম্প্রতি আম অর্পিতাকে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে নিজের করুণ পরিস্থিতি তুলে ধরলেন সত্যম মজুমদার। বর্তমান অবস্থার কথা বলতে গিয়ে আবেগপ্রবণ হয়ে কেঁদে ফেলেন তিনি।

এই সাক্ষাৎকারে অভিনেতা বলেন, “আমি একদম কোণঠাসা হয়ে গেছি, দেওয়ালে পিঠ ঠেকে গেছে কারণ আমি নর্থের ছেলে ছিলাম সেখান থেকে কাজের সুবিধার জন্য এখানে কাছাকাছি বাড়ি কিনলাম কিন্তু এখন দেখছি যেখানে যতটুকু আমার দরকার ততটুকু, আমার কোনদিন বিলাসিতা পছন্দ নয় তবে যতটুকু দরকার সেই কাজ করে যদি উপার্জন করতে পারতাম তার জন্যই সোশ্যাল মিডিয়ায় কাজ চাওয়া।”

অভিনেতা আরও বলেন, “বাড়ি লোন না দিতে পারলে ব্যাংকের লোক এসে সেটা ধর্না দেবে সেটা তো মান সম্মানের ব্যাপার। কিছুদিন আগেই স্ত্রীকে বলছিলাম অন্য কিছু করার উপায় নেই কাঁচা মাল নিয়ে বিক্রি করবো কিন্তু যেখানে যাবো সেখানেই মানুষ চিনে যাবে। আমাদের এমন অবস্থা অটোও চালাতে পারবো না কারণ আমরা শিল্পী, ইন্ডাস্ট্রির লোক। সেই কারণেই অন্য পেশা করা যাবে না বলেই একটা কাজের জন্য অনুরোধ করা যাতে খেয়ে পড়ে বাঁচতে পারি। আমার বেশি কিছু প্রয়োজন নেই।” সবমিলিয়ে বর্তমানে কাজ না থাকায় আর্থিক সমস্যার মুখে পরতে হচ্ছেন সত্যম মজুমদারকে।