সাধারণ গৃহবধূ থেকে আজ প্রতিষ্ঠিত কেক ব্যবসায়ী স্বর্ণালী চট্টোপাধ্যায়

স্বর্ণালী চট্টোপাধ্যায়

অল্প বয়সে বিয়ে হয়ে সংসারের দায়িত্ব সামলাতে গিয়ে নিজের শখ আহ্লাদকে বিসর্জন দেন অনেক নারীরা। তার মধ্যে অন্যতম দমদমের বাসিন্দা স্বর্ণালী চট্টোপাধ্যায়। তবে বর্তমানে তিনি এখন প্রতিষ্ঠিত একজন ব্যবসায়ী। সাধারণ গৃহবধূ থেকে কেক ব্যবসায়ী হওয়ার গল্প  স্বর্ণালী চট্টোপাধ্যায়ের জীবন যেন আস্ত সিনেমা।

অল্প বয়সে বিয়ে করেছিলেন এই দমদমের গৃহবধূ। পুত্র সন্তানকে মানুষ করতে গিয়ে ভুলে গিয়েছিলেন তার নিজের অস্তিত্বকে। স্বামী চাকরিসূত্রে বাইরে থাকায় পুরো দায়িত্বটাই একাই সামলাতে হয় স্বর্ণালীকে। ছোটবেলা থেকেই ইচ্ছা ছিল নিজের পায়ে দাঁড়ানোর। ছেলে বড় হওয়ার সাথে সাথে মাধ্যমিক পরীক্ষা দিয়ে দেওয়ার পরে অবসর সময়টাকেই কাজে লাগালেন দমদমের এই গৃহবধূ।

স্বর্ণালী চট্টোপাধ্যায়

কোন্নগরের তথাকথিত জমিদারবাড়ি ঘোষাল বাড়িতে জন্ম তার কিন্তু কালের নিয়মে আস্তে আস্তে জমিদারি যখন প্রায় শেষের দিকে, তখন থেকেই বাস্তবের সম্মুখীন হতে হয়েছে স্বর্ণালীকে। তার ছোটবেলা কেটেছে বোন বর্ণালী এবং মা-বাবা ও ঠাকুমা এবং সংসারের আর ৫ জন মানুষের সঙ্গে। ছোট থেকে মাকে দেখতেন সংসার সামলাতে সামলাতে মা নিজের শখ আহ্লাদ ধুলোয় মিশিয়েছে। তার জীবনটাও ঠিক তেমনি হয়েছিল। ছোটবেলায় গান, নাচ শিখলেও অল্প বয়সে বিয়ে হয়ে যাওয়ায় সব প্রতিভা চাপা পড়ে যায়।

ছোটবেলায় বিয়ে হওয়ায় রান্নাবান্না একেবারে পাকা পোক্ত হয়ে গেছেন স্বর্ণালী। স্বামী আবাদারে বানিয়ে ফেলতেন নানা রকম রেসিপি। এককথায় কুকিং এক্সপার্ট হয়ে গেছেন স্বর্ণালী।

স্বর্ণালী চট্টোপাধ্যায়

রান্না রেসিপি থেকে আচমকাই মাথায় এল কেক বানানোর বিষয়টি। বাড়িতে দু একবার ট্রাই করার পরে সিধান্ত প্রফেশনাল ট্রেনিং নেবেন। কোন্নগরের একজন কেক বেকারী এক্সপার্ট অদিতি দির সাথে যোগাযোগ করেন। তার থেকে কেক বানানো শেখা।

প্রথমে পরিবারের সবার জন্মদিনে নানান রকম কেক বানিয়ে সকলকে চমকে দিয়েছিলেন। কেক কেমন দেখতে হবে, কেকের ডিজাইন কেমন হবে এই বিষয়ে স্বর্ণালীর ছোট্ট ছেলে মাকে নানান রকম ভাবে সাহায্য করে। ক্যারিয়ারের এই পথ চলায় তার পাশে ছিল শ্বশুরবাড়ি প্রত্যেকটা মানুষ।

স্বর্ণালী চট্টোপাধ্যায়

গত বছর লকডাউনের সময় চারিদিকে দোকানপাট বন্ধ সেই সময় যখন বাড়ির ছেলেমেয়েরা কার্যত গৃহবন্দি অবস্থায় ছিল, যখন বাচ্চারা বাইরের খাবার খেতে চেয়েও খেতে পারছেনা, সেসময় স্বর্ণালী ভাবলেন কেননা মাতৃস্নেহে শুধু তার ছেলের জন্য নয় সব ছোটদের জন্যই এমন হাতে বানানো কেক, চকলেট, কুকিস ইত্যাদি বানানো যায় তাহলে মন্দ হয়না। তারপর থেকেই কেক তৈরির বিষয়টিকে একটু ব্যবসায়িক দিকে এগিয়ে নিয়ে গেলেন। এইভাবেই আজ সফল কেক ব্যবসায়ী তিনি।

স্বর্ণালী চট্টোপাধ্যায়ের বানানো কেকের দাম শুরু আড়াইশো টাকা থেকে। কেকের সঙ্গে আছে নানান ধরনের চকলেট। চকলেট এর দাম শুরু হচ্ছে মাত্র ৫ টাকা থেকে। অল্প পয়সায় যদি ভালো জিনিস, খাঁটি জিনিস পেতে চান তাহলে অবশ্যই আপনারা স্বর্ণালীর সঙ্গে যোগাযোগ করবেন।

স্বর্ণালী চট্টোপাধ্যায়

কাছে পিঠে অর্ডার থাকলে স্বর্ণালী নিজে গিয়ে এই কাস্টোমারের বাড়িতে কেক ডেলিভারি করে আসেন, তবে দমদম থেকে কোন্নগর অব্দি, আপনি যেখানেই থাকুন না কেন আপনার বাড়িতে কেক দিতে ডেলিভারি প্রস্তুত স্বর্ণালী।

কেক বানানোর সময় অবশ্যই হাইজিন এর দিকে খেয়াল রাখেন স্বর্ণালী। কেকের তালিকায় রয়েছে চকলেট ট্রাফেল কেক, ডল কেক, স্ট্রবেরি কেক, রসমালাই কেক, নলেন গুড়ের কেক, চকলেট ওভারলোডেড কেক, ব্ল্যাক ফরেস্ট কেক, পাইনাপেল কেক, আরো অনেক কিছু এছাড়া আপনি যেমনটা চাইবে তেমনটাই কাস্টমাইজড হয়ে যাবে। স্বর্ণালী চট্টোপাধ্যায়ের ফোন নম্বর -7980355278

Leave A Reply

Please enter your comment!
Please enter your name here