দ্বিতীয়বার ক্যান্সার যুদ্ধে জয়ী হলেন ‘জিয়ন কাঠি’র খ্যাত অভিনেত্রী ঐন্দ্রিলা শর্মা। পুরোপুরি সুস্থ অভিনেত্রী, সেই সুখবর দিলেন ঐন্দ্রলার বন্ধু-প্রেমিক অভিনেতা সব্যসাচী চৌধুরী। দ্বিতীয়বার ক্যান্সার আক্রান্ত হওয়ার পর থেকে প্রেমিকার লড়াই, প্রতি মাসে সোশ্যাল মিডিয়ায় তুলে ধরেন সব্যসাচী। এবার তিনি জানালেন, প্রেমিকাকে নিয়ে এটাই তাঁর শেষ লেখা। কারণ, চিকিৎসা সম্পূর্ণ, সম্পূর্ণরূপে ক্যান্সার মুক্ত ঐন্দ্রিলা।
ক্যান্সার শুনলেই প্রত্যেক রোগীর মনের জোর ভেঙ্গে যায়। সেখানে দু’বার ক্যান্সারের সঙ্গে লড়াই করে জয়ী ঐন্দ্রলা। তার জীবনে চরাই-উৎরাইয়ে শক্ত করে হাত ধরে রেখেছিলেন প্রেমিক সব্যসাচী। আজ প্রেমিকার জীবনে সব কষ্টের লড়াই শেষ। জীবন যুদ্ধের লড়াইয়ের শেষ দিনে কলম ধরলেন সব্যসাচী, লিখলেন মনে কথা।
অভিনেতা সব্যসাচী চৌধুরী লেখেন, “ঐন্দ্রিলাকে নিয়ে এটাই আমার শেষ লেখা। আর এটাই হলো ওর চিকিৎসার শেষ মাস। সেই ফেব্রুয়ারী থেকে দিন গোনা শুরু হয়েছিল আর অবশেষে সেই বহু প্রতীক্ষিত ডিসেম্বর মাস এলো”।
অভিনেতা আরও লেখেন, “১৪ই ফেব্রুয়ারী নাকি ভালোবাসার দিবস, আমি বড়ই কাঠখোট্টা মানুষ, এসব বিশেষ দিনে কিছুই করি না কখনও। কিন্তু এই বছর, এই প্রথমবার তিনি বায়না করেছিলেন যে দিনটি মাসের দ্বিতীয় রবিবার, তাই দুজনেরই ছুটি, অতএব রাতে রেস্টুরেন্টে খেতে যেতে হবে। ভালো কথা, টেবিল বুক করা হলো, বললো দুপুরে একটু ঘুমাচ্ছি, উঠে তৈরী হবো। ঘুমালো কিন্তু আর উঠতে পারলো না। পিঠের যন্ত্রনায় পরিত্রাহি চিৎকার করছে, এদিকে আমি বুঝতেই পারছি না যে কি হয়েছে। অগত্যা খেতে যাওয়া বাতিল করে আমি নিজেই রান্না করে খাওয়ালাম, তখনও আমরা ভাবছি যে পিঠের মাংসপেশিতে টান লেগেছে বোধহয়। পরের দিন জানা গেলো ছয় বছর আগের সেই কালসদৃশ অসুখ আবার ফিরে এসেছে এবং ফুসফুসে এক লিটার রক্ত জমেছিলো, আমরা কেউ তা বুঝিনি। এর পর থেকে, আমাদের জীবনে আর কোনও নির্দিষ্ট ভালোবাসার দিন নেই। জীবনেও তা পালন করবো না”।
সব্যসাচী আরও বলেন, “এবার ভালো খবরটা বলি। বেশ কয়েক বছর আগে, ইংমার বার্গম্যানের একটা বহু পুরোনো সিনেমা দেখেছিলাম, যেখানে মৃত্যু এসেছে নায়কের প্রাণ নিতে আর এক ধূসর প্রান্তরে বসে, নায়ক মৃত্যুর সাথে দাবা খেলছে। খুব সামনে থেকে এই অসুখটাকে পর্যবেক্ষণ করে, বারবার ওই সিনেমাটার কথা মনে পরে যায় আমার। একটা গুটিকে রক্ষা করতে পনেরোটা গুটি ছুটোছুটি করছে। নিয়ম মেনে, মাপ মেনে নড়াচড়া করে প্রতিপক্ষকে প্রতিহত করাই তাদের মূল লক্ষ্য। সারাটা বছর ধরে ডাক্তাররা এবং ওর পরিবার মিলে সেটাই করে এসেছে, এক মুহূর্তের জন্যও কেউ হাল ছাড়েনি। জীবন সংশয় আছে জেনেও ঝুঁকি নিয়ে অস্ত্রোপচার করা হয় মে মাসে। কিছুদিন আগে, অস্ত্রোপচারের ঠিক ছয় মাস পর পুনরায় পরীক্ষা করা হয় ওকে। ডাক্তার জানিয়েছেন যে কোনও বদ কোষ অবশিষ্ট নেই ওর শরীরে। এই মুহূর্তে, ঐন্দ্রিলা সুস্থ এবং বিপদমুক্ত”।
সব্যসাচীর এই পোস্ট লাইক-কমেন্ট করেছেন হাজার হাজার নেট-নাগরিক। যাঁদের অনেকেই ঐন্দ্রিলার জন্য প্রার্থনা করেছিলেন। “একেবারে সুস্থ হয়ে পরের বছর পুনরায় ক্যামেরার সামনে দাঁড়াবেই, ফিরবে স্বাভাবিক জীবনের ছন্দে”, জানিয়েছেন ঐন্দ্রিলা।
সূত্রঃ bangla . hindustantimes.com/entertainment/aindrila-sharma-win-the-battle-with-cancer-sabyasachi-chowdhury-shares-her-plan-to-return-in-work-by-next-year-31638432279838.html