স্বপ্নপূরণ স্বস্তিকার! একসময় শিয়ালদা স্টেশনে রাত কাটিয়েছিলেন দীপা, আজ তাকে দেখতেই বাড়ির সামনে মানুষের ভিড়

স্বস্তিকা ঘোষ

নেই কোনও গডফাদার, পরিবারের কেউ অভিনয়ের সঙ্গেও যুক্ত নয়, মধ্যবিত্ত পরিবারের মেয়ে চোখে অভিনেত্রী হওয়ার স্বপ্ন নিয়েই নিজের শহর ছেড়ে উঠে আসেন কলকাতায়। আজ তিনি বাংলা টেলিভিশনের এক নম্বর সারির নায়িকা, আশাকরি বুঝতে পেরেছেন এখানে কার সম্পর্কে আলোচনা করা হচ্ছে। অভিনেত্রী স্বস্তিকা ঘোষ। যাকে আপনারা ‘অনুরাগের ছোঁয়া’র নায়িকা দীপা নামে চেনেন।

দীপা থুৃড়ি স্বস্তিকার স্বপ্ন ছিল একজন ভালো অভিনেত্রী হওয়ার, মানুষের কাছে পরিচিতি গড়ে তোলার। সেই স্বপ্নই আজ পূরণ হয়েছে তার। নিজের স্বপ্ন সফরে এবিপি লাইভকে অভিনয় জীবনের অভিজ্ঞতা তুলে ধরলেন ছোটপর্দার দীপা।

অভিনেত্রী জানান, তাদের পরিবারের কেউ অভিনয় জানতেন না। তবে গানের চর্চা ছিল। মায়ের কাছ থেকে গানের তামিল, নাচের চর্চাও ছিল। তবে ক্লাস সেভেন-এইট থেকে স্কুলের প্রোগামে অভিনয় করার পর থেকে অভিনয়ের প্রতি আলাদাই আকর্ষণ তৈরি হয়।

বাবা-মা চেয়েছিলেন স্বস্তিকা গান-নাচ নিয়ে ক্যারিয়ার কিন্তু মেয়ের অভিনয়ের স্বপ্নে বাধা দেননি কখনো। বাবা-মা’র সমর্থন পেয়েই স্বস্তিকা বিভিন্ন চ্যানেলে আইডি জোগাড় করে ইমেল করে বসেন। মথুরাপুর থেকে কলকাতার দূরত্ব অনেকটা, তাই প্রথমে এইভাবেই ইমেল দিয়ে শুরু করেন।

স্কুল পাশ করার পরেই অভিনয় আসার ইচ্ছে ছিল তার কিন্তু তার আগেই চলে আসে সিরিয়ালের সুযোগ। নায়িকা নয়, তবে নায়কের বোনের চরিত্রে প্রথম সুযোগ। সেই সময় করোনার মহামারি। তাই মথুরাপুর থেকে কলকাতা যাতায়াত সম্ভব নয়। প্রথম কিছুদিন গাড়ি ভাড়া করেও এলেও পরবর্তীকালে শিয়ালদা স্টেশনেই রাত কাটিয়েছেন।  শিয়ালদা স্টেশনে বসে থাকতেন অভিনেত্রী আর তার বাবা। পরেরদিন আবার শুটিং ফ্লোরে। তবে কিছুদিন এইভাবে কাটার পর অভিনেত্রী বুঝতে পারেন এইভাবে সম্ভব নয়। কারণ গোটা ফ্লোর তার জন্য অপেক্ষা করে থাকে। যাতায়াত করাটা বড্ড কঠিন হয়ে পড়ছে আর সেদিন থেকেই কলকাতায় থাকার সিদ্ধান্ত নেন।

‘অনুরাগের ছোঁয়া’ ধারাবাহিক শুরুর আগে মথুরাপুর থেকে কলকাতা এইভাবেই যাতায়াত করেছেন। তবে ‘অনুরাগের ছোঁয়া’ মুখ্য চরিত্রে সুযোগ পাওয়ার পর আরও বেশি সময় দিতে হত তাকে তাই যাতায়াত সম্ভব হচ্ছিল, এরপর কলকাতাতেই থাকতে শুরু করেন। তবে পরিবারের একসঙ্গে থেকে মানুষ, সেখানে একা থাকতে ভীষণ কষ্ট হত তার। সেই সময় স্কুলের গণ্ডি পেরোয়নি, মাঝেমধ্যে ভীষণ কান্না পেত তার। এরপর ভাইয়ের পরীক্ষা শেষ হওয়ার পর বাবা-মা-ভাইকে কলকাতায় চলে আসেন। অনুরাগের ছোঁয়া অভিনয়ের পাশাপাশি উচ্চ মাধ্যমিক পরীক্ষা দেন তিনি।

অভিনেত্রী অকপটে স্বীকার করে নেন, অনুরাগের ছোঁয়া তার জন্য বড় ব্রেক ছিল। এই ধারাবাহিকের হাত ধরে তার মানুষের মধ্যে পরিচয় তৈরি করার স্বপ্ন সফল হয়েছে। যে একসময় কষ্ট করে স্টেশনে রাত কাটিয়েছিল আজ তাকে দেখতেই মানুষ তার বাড়িতে ভিড় করেন।

স্বস্তিকা বলেন, “মথুরাপুরে যখন যান তখন তিনি চেনেন না এমন অনেক মানুষ এসে তার বাড়ির সামনে তাকে দেখার জন্য জড়ো হন। এই ভালবাসাটা পাওয়ারই তো স্বপ্ন দেখেছি আমি।”

সূত্রঃ bengali . abplive . com