বলা হয়ে থাকে যে লোকেরা তাদের ভাগ্য নিজের হাতে লিখে আনে এবং তাদের হাতের রেখায় বিশ্বাস করে, তারা বিশ্বাস করে যে তাদের ভাগ্য একদিন না কোনও দিন পরিবর্তিত হবে। তবে আপনি কি কখনও ভেবে দেখেছেন যে যাদের হাত নেই তাদের ভাগ্য কে লিখেছেন?
আমরা আপনাকে এমন একজন মেয়ের গল্প বলবো যার জন্ম থেকে দুটি হাত নেই অথচ তার ভাগ্য সুন্দরভাবে লিখেছেন বিধাতা। রায়পুরের দামিনী সেন জন্মগ্রহণ করেছেন দুই হাত ছাড়া। এই উনিশ বছরের কন্যার নিজের শারীরিক প্রতিবন্ধকতা নিয়ে কোন আফসোস নেই বরং মনের জোর দিয়ে ভবিষ্যৎ তৈরি করছে।
ছত্তিশগড়ের রাজধানী রায়পুরের দামিনী তার পা দিয়ে হাতের অভাব পূরণ করেছে। নিজের পা দিয়ে এত সুন্দর ছবি আঁকে, যেকোনো শিল্পীকে হার মানিয়ে দেবে। শুধু ছবি নয় পা দিয়ের লেখেন, ছবি আঁকে, মেহেন্দি পড়ে আবার রান্নাও করে।
ছোটবেলায় স্কুলের দিদিমণিরা বলেছেন দামিনীর পক্ষে লেখাপড়া করা সম্ভব নয়, কারণ তার হাত নেই। কিন্তু সেই সব বাঁধা পেরিয়ে নিজের পা দিয়ে পরীক্ষা দিয়েছেন এবং ৭৩ শতাংশ নম্বর নিয়েই উচ্চমাধ্যমিক পাশ করেছেন।
দামিনীর কথায় তার মা তার আসল শিক্ষিকা। কারণ ছোটবেলায় তার মা তাকে প্রথম শিখিয়েছেন পায়ের দুটো আঙুলের মাঝে চক রেখে কীভাবে লিখতে হয়। তার পক্ষে তখন এই কাজটি সহজ ছিল না। কিন্তু পরিশ্রমের পর আজ তার কাছে এই কাজটা খুবই সহজ। এখন কাজ করার সময় অন্যদের থেকে আলাদা মনে হয় না নিজেকে।
দামিনীর স্বপ্ন সিভিল সার্ভিসে গিয়ে জনসাধারণের সেবা করা। তবে অসাধারণ ছবি আঁকেন দামিনী। এক ঘণ্টার মধ্যে ৩৮ টি ছবি এঁকে দুটি বিশ্ব রেকর্ড জয় করেছে এই কিশোরী। দামিনী পরিবার তাকে খুব সাপোর্ট করে। আর তার এই সাহসিকতার কাজ তার মতো অনেক দামিনীকেই অনুপ্রাণিত করেছে।
দামিনীর এই দক্ষতা দেখে প্রধানমন্ত্রী নরেন মোদী তাকে পুরষ্কারটি দিয়েছিলেন, এবং বলেছিলেন – “আমার হাতের লেখার চেয়ে পা লেখাই ভাল”।