মা সীতা হিন্দু ধর্মে একজন নিষ্ঠাবান, নিষ্ঠাবান স্ত্রী এবং আদর্শ নারী হিসেবে পরিচিত। মা সীতা হলেন পবিত্রতা, ত্যাগ, উৎসর্গ, নম্রতা, সাহস এবং ধৈর্যের প্রতীক। দেবী সীতা ছিলেন মিথিলার রাজা জনক রাজার জ্যেষ্ঠ কন্যা। স্বয়ম্বরে শিবের ধনুক ভেঙ্গে অযোধ্যার রাজা দশরথের জ্যেষ্ঠ পুত্র শ্রী রামের সাথে তার বিয়ে হয়েছিল। তিনি সম্পূর্ণরূপে নারী ও সতীত্বের ধর্ম অনুসরণ করেছিলেন যার কারণে মা সীতার নাম অত্যন্ত সম্মানের সাথে নেওয়া হয়। মা সীতার অটল ভক্তি, শক্তি এবং প্রজ্ঞা আমাদের দৈনন্দিন জীবনে অনুপ্রাণিত করতে পারে তার
জন্যই আজকের পেজে রইল সীতা কে নিয়ে উক্তি।
আরও পড়ুনঃ
দেবী সীতা কে নিয়ে উক্তি
মা সীতা নারীর প্রেরণা, নারীর শক্তি, নারীর ভক্তি।
ইতিহাস সাক্ষী নারীকে অপমান করলে তার ধ্বংস নিশ্চিত, ঠিক যেমন মা সীতাকে অপহরণ করে অপমানিত করে স্বয়ং রাবনও ধ্বংসের পথে এগিয়ে গিয়েছেল।
জনক নন্দিনী, মা জানকির শিক্ষা যে নারী তার জীবনে পালন করতে পারে সেই নারীর জীবন ধন্য হয়ে যায়।
মা সীতাকে ধন ও ঐশ্বর্যের দেবী মাতা লক্ষ্মীর অবতার বলে মনে করা হয়, তাই বলা হয় রীতি অনুসারে মা সীতার পূজা করলে তার সাথে মা লক্ষ্মীর আশীর্বাদ পাওয়া যায়।
একজন আদর্শ নারীর প্রতিচ্ছবি, ত্যাগ, ভালবাসা, ধৈর্য, সহানুভূতি এবং সংযমের অধিপতি দেবী হলেন মা সীতা।
আরও পড়ুনঃ ভগবান শ্রীকৃষ্ণের বাণী নিয়ে উক্তি ও উপদেশ
মা সীতার ঐশ্বরিক উপস্থিতি আমাদের পরিবারকে ভালবাসা, সম্প্রীতি এবং সমৃদ্ধিতে ভরিয়ে তোলে।
রাম ছাড়া যেমন রামায়ণ অসম্পূর্ণ, ঠিক তেমনই সীতা ছাড়া ভগবান রাম অসম্পূর্ণ।
সীতার নাম না নিয়ে ভগবান শ্রী রামের প্রশংসা অসম্পূর্ণ।
দেবী সীতার চরিত্রের গুণাবলী আমাদের জীবনের যাত্রাপথে পথপ্রদর্শক হতে পারে।
আরও পড়ুনঃ আধ্যাত্মিক উক্তি যা সকলকে অনুপ্রেরণা দেবে
দেবী সীতা কে নিয়ে কিছু কথা
দেবী সীতা, যিনি হিন্দু মহাকাব্য রামায়ণের শক্তির নীরব ব্যক্তিত্ব।
যদি শ্রী রাম ধর্মের মূর্ত রূপ হন তাহলে মা সীতা হলেন পবিত্রতার মূর্ত প্রতীক।
জনক নন্দিনী মাতা সীতা, যিনি ত্রেতাযুগে মরিয়দা পুরুষোত্তম শ্রী রামের স্ত্রী হয়েছিলেন, তিনি যে ত্যাগ, তপস্যা এবং পবিত্রতার উদাহরণ উপস্থাপন করেছিলেন তা অনন্য।
রাজকন্যা ও রাণী হওয়া সত্ত্বেও প্রাসাদের ভোগ-বিলাস ত্যাগ করে হাসিমুখে প্রবাসে চৌদ্দ বছর কাটিয়েছেন। স্বামীর সেবায় অতি সাধারণ জীবনযাপনের এক অন্যতম দৃষ্টান্ত রাখেন দেবী সীতা।
আরও পড়ুনঃ রইল মহাভারতের বিশেষ উক্তি ও শ্রী কৃষ্ণের শাশ্বত বাণী
শাস্ত্রমতে, মা সীতা লক্ষ্মী দেবীর অংশ, অন্যদিকে শ্রীরাম হলেন নারায়ণের অবতার। মর্তে শ্রীরামের মাহাত্ম্য প্রচার পেলেও মা সীতার কখনই শ্রীরামের মত মাহাত্ম্য পাননি।
স্বামীর প্রতি মূল্যবোধ, দায়িত্বপরায়ণের অন্যতম আদর্শ পূর্ণস্বরুপা হলেন মাতা সীতা।
শ্রীরাম যদি শক্তির আধার হন তাহলে মা সীতা হলেন শ্রীরামের শক্তি।
আরও পড়ুনঃ ভগবত গীতার নির্বাচিত কিছু বাণী
আশাকরি, সীতা কে নিয়ে উক্তি সকলের ভালো লাগবে।
সচরাচর জিজ্ঞাস্য প্রশ্ন ও উত্তরঃ
Q. দেবী সীতা কি কি নামে পরিচিত?
A. রামায়ণে দেবী সীতা বহু নামে উল্লিখিতা হয়েছেন। তবে তিনি মূলত সীতা নামেই জগত সংসারের কাছে পরিচিত। তাছাড়াও জনকের কন্যা বলে সীতাকে জানকী বলা হয়। মিথিলা রাজ্যের কন্যা হওয়ায় তিনি মৈথিলি নামেও পরিচিত। এছাড়া তিনি রাম পত্নী হওয়ায় তাকে রমাও বলা হয়ে থাকে। তবে মা সীতা দ্বাপর যুগে কৃষ্ণের রাধিকা রূপে অবতীর্ণ হন।
Q. সীতা কে নিয়ে উক্তি কি হতে পারে?
A. একজন আদর্শ নারীর প্রতিচ্ছবি, ত্যাগ, ভালবাসা, ধৈর্য, সহানুভূতি এবং সংযমের অধিপতি দেবী হলেন মা সীতা।
Q. কোন তিথিতে সীতানবমী পালন করা হয়?
A. হিন্দু পঞ্জিকা অনুযায়ী, বৈশাখ মাসের শুক্লানবমী তিথিতে সীতানবমী পালন করা হয়। বলা হয়, এই দিনেই মা সীতা জন্মগ্রহণ করেছিলেন।