দেবভূমি কেদারনাথ দর্শন অনেকেরই স্বপ্ন থাকে। যাকে বলে ড্রিম ডেস্টিনেশন। শুধু তাই নয়, পঞ্চকেদারের অন্যতম অংশ হল কেদারনাথধাম। যেখানে মহিষরূপী শিব ভীম দ্বারা আবিষ্ট হয়ে খণ্ডিতভাবে ছড়িয়ে পড়েছিল যাকে কেন্দ্র করে গড়ে উঠেছে পঞ্চকেদার।
গাড়োয়াল হিমালয়ের অন্তর্গত এই তীর্থস্থানে যেমন সবরকম প্রাকৃতিক বৈচিত্র ধরা পড়ে, তেমনই পাহাড়ের কোলে এমন মনোরম পরিবেশে ভিন্ন স্বাদের খাবার গুলি চেখে দেখার মত। ব্রেকফাস্ট টু ডিনার, স্ন্যাক্স টু মেইন কোর্স, এখানে সবটাই পাবেন ভিন্ন রকম স্বাদে। তাই কেদার বাবার দর্শনে এসে কি কি খাবার টেস্ট করবেন সেই সমস্ত খাবারের তালিকা রইল আজকের আলোচনায়।
1. থেঞ্চওয়ানি (Thenchwani)
উত্তরাখণ্ডের সুস্বাদু রেসিপিগুলির মধ্যে একটি হল থেঞ্চওয়ানি। পাহাড়ি মুলো ও আলু দিয়ে তৈরি একটি খাবার হল থেঞ্চওয়ানি যা এখানকার পরিচিত খাবার গুলির মধ্যে একটি।
2. চেইনসু (Chainsoo)
উরাদ বা কালো ডাল দিয়ে তৈরি এই রেসিপিটি বেশ প্রোটিন সমৃদ্ধ। যার নাম চেইনসু। উত্তরাখণ্ডের পাহাড়ের শীতল ভূখণ্ডে বসবাসকারী মানুষদের কাছে এই খাবারটি অত্যন্ত স্বাস্থ্যকর। ভাজা উরদ ডাল দিয়ে তৈরি এই রেসিপি তার স্বাদের কারনেই সমৃদ্ধ নয়, এতে রয়েছে যথেষ্ট পুষ্টির সন্ধান।
3. ফানু (Phaanu)
উত্তরাখণ্ডের গাড়ওয়াল অঞ্চলে ফানু কিন্তু খুবই জনপ্রিয় একটি খাবার। যা বিভিন্ন ধরণের মসুর ডাল একত্রিত করে তৈরি করা হয়।
4. ভট্ট কি চুরকানি (Bhatt Ki Churkani)
কালো সয়াবিন থেকে তৈরি এই রেসিপিটি একটি ঐতিহ্যবাহী গাড়োয়ালি খাবার। প্রোটিন, ফাইবার এবং ভিটামিনের সমৃদ্ধ এই রেসিপিটি যেমন সুস্বাদু, তেমন পুষ্টিকরও। পাশাপাশি কোলেস্টেরল কমাতে সাহায্য করে এবং হৃদরোগের ঝুঁকি কমায়।
5. কাফুলি (Kafuli)
খাদ্য-সচেতন মানুষদের জন্য এটি একটি পুষ্টিকর খাবার। যার নাম কাফুলি। খাবারটি মূলত পালং শাক এবং মেথি পাতা দিয়ে তৈরি।
6. ভাং কি চাটনি (Bhang Ki Chutney)
শণ বীজ থেকে তৈরি এই বিশেষ চাটনি যেমন সুস্বাদু তেমনই যেকোন খাবারের সাথে টেস্ট করলে তার স্বাদ আর দ্বিগুন করে তোলে। শণের বীজ, তাজা ধনে পাতা, সবুজ মরিচ, রসুন, জিরা এবং লেবুর রস তৈরি এই চাটনি ফ্যাটি অ্যাসিড, প্রোটিন এবং অ্যান্টিঅক্সিডেন্টে সমৃদ্ধ যা খাবার হজম করতে সাহায্য করে।
7. কুমায়নি রায়তা (Kumaoni Raita)
ভারতীয় খাবারের একটি অবিচ্ছেদ্য অংশ হল রায়তা। ভারতের সব রাজ্যেই এই খাবারের চল থাকলেও উত্তরাখণ্ডের কুমায়নি রায়তা স্বাদ একটু আলাদা। দই ফেটিয়ে নিয়ে তারপর তাতে পেঁয়াজ, শসা, টমেটো, আনারসের মত উপাদান মিশিয়ে তৈরি করা হয় এই রায়তা। বিয়ে হোক বা কোনও শুভ অনুষ্ঠান উত্তরাখণ্ডের যে কোনও উৎসবেই সাইড ডিশ হিসাবে রাখা হয় রেসিপিকে। কুমাওনি রায়তায় টক ভাব থাকলেও এতে রয়েছে পাহাড়ি কাখাদি, পাহাড়ি মশলা, সর্ষের বীজ এবং পাহাড়ি লঙ্কার ভরপুর স্বাদ।
8. সিঙ্গোরি (Singori)
মোলু বা মালু পাতায় মোড়ানো এই সুস্বাদু ডেজার্টটির নাম হল সিঙ্গোরি। ঘন দুধ ফুটিয়ে খোয়া তৈরি করে তাতে চিনিউ ও এলাচ গুড়ো মিশিয়ে মালু পাতায় শঙ্কু আকৃতি দিয়ে পরিবেশন করা হয় এই খাবারটি। মনে করা হয় কুমায়ুনের একটি ছোট শহর আলমোড়াতে এই খাবারের উৎপত্তি।
9. আরসা (Arsa)
আরসা, এটি এমন একটি মিষ্টিজাতীয় খাবার যা উত্তরাখণ্ডের প্রতিটি ঘরে ঘরে জায়গা করে নিয়েছে। স্বাদে ভরপুর হলেও ক্যালোরি কম থাকায়, এটি বেশ জনপ্রিয়।
10. ঝিঙ্গোরা কি খীর (Jhangora Ki Kheer)
গাড়ওয়াল অঞ্চলে জনপ্রিয় মিষ্টিজাতীয় খাবারের তালিকায় রয়েছে ঝাংগোরে কি খীর। যা অনেকরকম শুকনো ফল এবং দুধ দিয়ে তৈরি পুষ্টিগুণ সম্পন্ন একটি সুস্বাদু ডেজার্ট। কেদারনাথ ভ্রমনে এই টেস্টি ডেসার্ট একবার হলেও চেখে দেখবেন।