উজ্জয়িনী শহরটি তীর্থস্থানের জন্য পর্যটকদের কাছে বিশেষ পরিচিত হলেও এই শহরের রন্ধনপ্রণালী তার আধ্যাত্মিক ঐতিহ্যের মতোই সমৃদ্ধ এবং বৈচিত্র্যময়। যেখানে প্রতিটি খাবার এই অঞ্চলের প্রাণবন্ত সংস্কৃতি এবং ইতিহাসের গল্প বলে। তাই আপনার পরবর্তী ডেস্টিনেশন যদি উজ্জয়িনী শহর হয়ে থাকে, তাহলে এখানকার সেরা খাবার গুলো চেখে দেখতে ভুলবেন না। আজকের আলোচনায় রইল এই শহরে বিশেষ কিছু খাবারের নাম-
1. পোহা
উজ্জয়িনী শহরের বিখ্যাত একটি খাবার হল পোহা। চিড়ে দিয়ে তৈরি, যা মরিচ, পেঁয়াজ, সরিষা এবং জিরা এবং কারি পাতা দিয়ে ভাজা হয়। এটি একটি উচ্চ কার্বোহাইড্রেট, কম চর্বিযুক্ত দ্রুত খাবার যা কয়েক মিনিটের মধ্যে তৈরি করা যায়। মহাকালেশ্বর মন্দিরের কাছাকাছি থাকা প্রায় সব রেস্তোরাঁতেই মিলবে এই খাবারের স্বাদ।
2. ডাল বাফলা
যদিও উজ্জয়িনী শহরে চেখে দেখার মত অনেক খাবারই আছে তবে তার মধ্যে ডাল বাফলা অন্যতম। ডাল বাফলার জন্য ময়দার বলগুলি প্রথমে হলুদ জলে সিদ্ধ করা হয় এবং তারপরে ভাজা হয়। খাবারটি প্রোটিন, ভিটামিন, কার্বোহাইড্রেট সমৃদ্ধ যা স্বাস্থ্যের পক্ষে খুবই ভালো।
3. ভুট্টে কা কিস
মধ্যপ্রদেশের আরেকটি স্বাস্থ্যকর এবং সুস্বাদু খাবার হল ভুট্টে কা কিস। এই খাবারটি মূলত ভুট্টা দিয়ে তৈরি। গ্রেড করা ভুট্টার সাথে নানা রকম মশলা ব্যবহার করে প্রস্তুত করা হয় এই সুন্দর রেসিপি।
4. ভোপালী গোষ্ট কোরমা
উজ্জয়িনী শহরের রন্ধনশৈলীতে মুঘলাই রন্ধনপ্রণালীর একটি উল্লেখযোগ্য প্রভাব রয়েছে এবং এই প্রভাবের ফলস্বরূপ সবচেয়ে বিখ্যাত খাবারগুলির মধ্যে একটি হল ভোপালী গোষ্ট কোর্মা। উজ্জয়িনী ভ্রমনে এসে যদি আমিষ খাবার খেতে চান তাহলে মটন দিয়ে তৈরি এই রেসিপি সকলেরই ভালো লাগবে।
5. মাওয়া বাটি
উজ্জয়িনী শহরে এসে যদি মিষ্টি মুখ করতে চান তাহলে অবশ্যই চেখে দেখতে পারেন এখানকার মিষ্টি জাতীয় একটি রেসিপি। যার নাম মাওয়া বাটি। এগুলি দেখতে অনেকটা গোলাপ জামুনের মতই।
6. মালপুয়া
উজ্জয়িনী শহরে মিষ্টি জাতীয় খাবার গুলির মধ্যে মালপুয়া অন্যতম। যা গমের আটা এবং চিনির শরবত দিয়ে তৈরি। মালপুয়া তৈরিতে চ্যাপ্টা গমের আটার রুটির টুকরোগুলো গভীর তেলে ভাজা এবং চাসনিতে ডুবিয়ে রাখা হয়।
7. জালেবি
বাচ্চা থেকে বুড়ো, উজ্জয়িনী শহরে এসে এখানকার জালেবি চেখে দেখেনি এমন মানুষ খুব কমই আছে। এটি একটি মিষ্টি জাতীয় খাবার।
8. শাহী শিখাঞ্জি
ভ্রমণের পথে নিজেকে রিফ্রেশ রাখতে ট্রাই করতে পারেন শাহী শিখাঞ্জি। রিফ্রেশিং এই পানীয়টি দুধ, শুকনো ফল এবং দই দিয়ে তৈরি। যার প্রতিটা চুমুকে রয়েছে অপূর্ব স্বাদ।
9. পালক পুরী
পালক পুরী বানাতে পালং শাকের পেস্ট ও ময়দা দিয়ে প্রথমে পুরি তৈরি করা হয় এবং তারপরে তেলে ভাজা হয়। সকালের ব্রেকফাস্টে পালক পুরীর সাথে রাইতা হোক, আলু সবজি, কিংবা আচার, যেকোন কিছুর সাথেই জমে যাবে।
10. সেখ কাবাব
সেখ কাবাব মধ্যপ্রদেশের সবচেয়ে প্রিয় আমিষ খাবারের মধ্যে একটি। কিমা করা মাংস একটি শিখ এর চারপাশে মোড়ানো হয় এবং তারপর একটি কয়লার আগুনে রান্না করা হয়। উজ্জয়িনী শহরে এসে অবশ্যই এই খাবারটি ট্রাই করতে পারেন। এছাড়াও এখানকার শাম্মি কাবাব, কোরমা এবং কিমাও টেস্ট করে দেখতে পারেন।
তবে এইসব খাবার গুলি চেখে দেখতে উজ্জয়িনী শহরের সেরা কিছু রেস্তোরাঁ বেছে নিতে পারেন। তার মধ্যে রয়েছে ঝাড়োখা রেস্টুরেন্ট, সুদামা রেস্টুরেন্ট, ইম্পেরিয়াল রেস্তোরাঁ, মহাকালেশ্বর মার্গের কাছে ভোলা গুরু অ্যান্ড সন্স, ডমরুওয়ালা রেস্তোরাঁতেও যেতে পারেন।