বাংলা সিরিয়াল অথবা বাংলা সিনেমার অভিনেত্রী মানেই ছিপছিপে চেহারা, সুন্দরী হতে হয়। এই প্রবাদ যেন যুগের পর যুগ চলে এসেছে ইন্ডাস্ট্রিতে। কিন্তু কে বলে মোটা হলে অভিনেত্রী হওয়া যায়না? এই চিন্তাধারাকেই পাল্টে দিয়েছেন যেসব শিল্পীরা তাদের মধ্যেই একজন হলেন অভিনেত্রী অরিজিতা মুখোপাধ্যায়। যাকে আপনারা জি-বাংলার ‘নিম ফুলের ধারাবাহিকে’ শাশুড়ি মার চরিত্রে অভিনয় করতে দেখতে পারছেন।
অরিজিতা মুখোপাধ্যায় প্রমাণ করে দিয়েছেন চেহারা নয় দিনের শেষে কীভাবে নিজের প্রতিভা দিয়ে ইন্ডাস্ট্রিতে টিকে থাকা যায়। বলাই চলে, তিনি ইন্ডাস্ট্রিতে এখন জনপ্রিয় মুখ। একাধিক ওয়েব সিরিজে চুটিয়ে কাজ করে প্রশংসা পেয়েছেন। পা রেখেছেন বড়পর্দায়। পাশাপাশি দাপিয়ে বেড়াচ্ছেন ছোটপর্দায়ও।
তবে আজ ইন্ডাস্ট্রিতে তাঁর অভিনয় নিয়ে চর্চা হলেও, একসময় ইন্ডাস্ট্রিতেই জুটেছিল অপমান। আনন্দ বাজার অনলাইনের এক সাক্ষাৎকারে ইন্ডাস্ট্রিতে কাজের প্রসঙ্গে কথোপকথনে কিছু তথ্য শেয়ার করেন অভিনেত্রী।
একসময় ইংল্যান্ডে থিয়েটার প্রশিক্ষক হয়ে এক বছর কাটিয়েছেন। এরপর দেশে ফিরে গবেষণা চালিয়েছেন। এরপর থিয়েটার জগত থেকে বাংলা ধারাবাহিক। এই প্রসঙ্গে অভিনেত্রী জানান, “টাকা রোজগার করতেই হত। বাবার অনেক বয়স হয়েছে। আমি বাড়ির একমাত্র উপার্জনকারী। কিন্তু প্রথম দিন থেকেই জানতাম, এই কাজটা সহজ হবে না। এটা চাকরির মতো নয়। তোমাকে প্রথম সুযোগটা কেউ দেবে, তার পর সুযোগগুলো নিজেকে করে নিতে হবে”।
অভিনেত্রীর অভিনয় জার্নি শুরু হয়েছিল খলচরিত্র হয়ে। সান বাংলার ধারাবাহিক ‘আয় খুকু আয়’-এর ‘রত্না মাসি’ নেগেটিভ চরিত্রের হাত ধরেই প্রথম বাংলা সিরিয়ালে কাজ। এরপর নিজের অভিনয়ের দক্ষতার জন্যই তাঁকে আর ফিরে তাকাতে হয়নি।
তবে প্রথমদিকে চেহারা নিয়ে খোঁটা শুনতে হয়েছিল অরিজিতা মুখোপাধ্যায়কে। দেখতে যথেষ্ট সুন্দর নয় বলে কাজ থেকে বাতিল করে দেওয়া হত অভিনেত্রীকে। এমনকি সহকর্মী থেকে শুরু করে ইন্ডাস্ট্রির অনেকের কাছেই বডিশেমিং এর শিকার হয়েছে। নিজেকে যেন মাংসের তাল মনে করতেন। তার মনে হত তার কোনও অস্তিত্ব নেই! কিন্তু তিনি প্রমাণ করে দিয়েছেন, ‘তিনি অভিনয়টা জানেন’।