মায়ানগরীতে অভিনেতা অভিনেত্রীদের সংগ্রাম করে উঠে আসার কাহিনি অনেকেই শুনেছেন। নেপথ্য জড়িয়ে রয়েছে স্ট্রাগল, অসম্মান, ত্যাগ আর রিজেক্টের গল্প। বাইরে থেকে তারকাদের জীবন ঝা চকচকে মনে হলেও আদতে কি তাই?
সত্যিই কি অভিনয় জীবনের পথ এতটাই সোজা? চলুন সেই গল্পই আজ শুনে নিই ছোটপর্দার এক পরিচিত অভিনেত্রীর কাছ থেকে। তিনি হলেন অভিনেত্রী অদিতি ঘোষ। যাকে আপনারা নিয়মিত জি-বাংলার পর্দায় ‘কোন গোপনে মন ভেসেছে’ ধারাবাহিকে খলচরিত্র শিউলি’র ভূমিকায় দেখতে পারছেন। প্রগতির বাংলার-র পেজে অভিনেত্রী নিজের জীবনের স্ট্রাগল তুলে ধরলেন।
দুর্গাপুরের মেয়ে অদিতি। কর্মসূত্রে কলকাতার টালিগঞ্জের বাসিন্দা। ৭ বছর কাটিয়ে দিলেন এই ইন্ডাস্ট্রিতে। তবুও আজও এই ইন্ডাস্ট্রিতে টিকে থাকার লড়াই চালিয়ে যেতে হচ্ছে তাকে। আকাশ আট চ্যানেলে প্রথম হাতেখড়ি। এরপর ‘জয় বাবা লোকনাথ’, ‘বেদের মেয়ে জ্যোৎস্না’র মতো একাধিক জনপ্রিয় ধারাবাহিকে কাজ করেছেন।
‘বৌমা একঘর’ ধারাবাহিকের হাত ধরেই প্রথম নেগেটিভ চরিত্রে দর্শকমহলে খ্যাতি অর্জন করেন তিনি। এর আগে একাধিক ধারাবাহিকে কাজ করলেও স্টার জলসার এই ধারাবাহিকের হাত ধরেই মিলেছে জনপ্রিয়তা। এরপর ধীরে ধীরে টেলিভিশন ইন্ডাস্ট্রিতে নিজের শিকড় খুঁজে পান। কাজ করেছেন ‘গাঁটছড়া’, ‘ফুলকি’র মতো জনপ্রিয় ধারাবাহিকে। বর্তমানে ‘কোন গোপনে মন ভেসেছে’ ধারাবাহিকে খলচরিত্রে দর্শকের প্রশংসা পাচ্ছেন।
শুধু সিরিয়াল নয়, ‘নির্ভয়া’র মতো ছবিতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকায় অভিনয়ও করেছেন। তবে অদিতির জীবনের এই পথটা অতটা সহজ ছিল না। অভিনেত্রী জানান, “আমার বাড়ি দুর্গাপুর, তাই সেখান থেকে কলকাতায় অডিশন দিতে আসতে প্রচুর কষ্ট হত, কারণ কলকাতা থেকে আমায় দুর্গাপরে ফিরে যেত হত। কলকাতায় প্রচুর আত্মীয় স্বজন রয়েছেন কিন্তু সেই সময় কেউ আমাকে সাপোর্ট করেনি। এমনকি তাদের বাড়িতে থাকাতে বারণ করে দেওয়া হয়। অনেক কথা শুনতে হয়েছিল আমাকে এবং আমার মাকে। এমনকি অভিনয়ের জগত আসার জন্য আমাকে খারাপ মেয়ে বলা হয়। কারণ তাদের ধারণা অভিনয় জগতটা খারাপ, তাই যেহেতু আমি এই পেশায় রয়েছি তাই আমিও খারাপ। আমাদের অবস্থা খুব একটা সচ্ছল ছিল না। নিম্নবিত্ত পরিবারের মেয়ে আমি, তাই মায়ের সঙ্গে কলকাতায় অডিশন দিতে আসতে খুব কষ্ট করতে হয়েছিল আমাকে আর মাকে।”
অভিনেত্রী আরও বলেন, “দুর্গাপুর থেকে কলকাতায় প্রচুর অডিশন দিই। এমনকি অডিশনে সিলেক্ট হয়েও লুক সেটে বাদ দেওয়া হত, তবে হাল ছেড়ে দিইনি। প্রচুর অডিশন দেওয়ার পর অভিনয়ের সুযোগ পাই। আজ সেই স্ট্রাগলটা একটু কমেছে তবে ইন্ডাস্ট্রিতে এখনও টিকে থাকার লড়াই চালিয়ে যাচ্ছি।”