‘কনক কাঁকন’ ধারাবাহিকে একসাথে কাজ করেছিলেন অভিনেত্রী শ্বেতা ভট্টাচার্য এবং মৌমিতা চক্রবর্তী। কিছুদিন আগে সেই ধারাবাহিক নিয়েই শ্বেতার বিরুদ্ধে সত্যি সামনে আনেন মৌমিতা। ছোট পোশাক পড়া মন্তব্য নিয়ে শ্বেতার বিপক্ষে যখন ইন্ডাস্ট্রির সকলে মন্তব্য করছিলেন ঠিক সেই সময় শ্বেতার এক সময় সহ-অভিনেত্রীর পোস্ট ঘিরে হৈ চৈ।
মৌমিতা একটি দীর্ঘ পোস্ট করে জানিয়েছিলেন ‘কনক কাঁকন’ ধারাবাহিক করার সময় তার সহ-অভিনেত্রী (শ্বেতা ভট্টাচার্য নাম না করেই ইঙ্গিত) সকলের সামনে তার রুপ, অভিনয় নিয়ে তাকে চরম অপমান করেন, এমনকি শ্বেতার জন্য সেই ধারাবাহিক থেকে তাকে বাদ দেওয়া হয়। মৌমিতা করা পোস্ট ঘিরে শুরু হয় চাঞ্চল্য।
অনেকেই মৌমিতাকে প্রশ্ন করেন তিনি এত কিছু আগে কেন সামনে আনেনি। এবার নেটিজেনদের প্রশ্নের উত্তর দিয়ে আবারও একটি পোস্ট করলেন অভিনেত্রী মৌমিতা।
মৌমিতা লেখেন, “কনক কাঁকন নিয়ে আমার অভিজ্ঞতা শেয়ার করার পর প্রশ্নটা বারবার শুনছি, কেন এতদিন পর মুখ খুললাম? কেন তখনই বলিনি? সত্যিটা হলো, সেই অপমানের দিন আমি পুরোপুরি চুপ করিনি। ঘটনাটা আমি চ্যানেলকে জানিয়েছিলাম। চাইলে আর্টিস্ট ফোরামের কাছেও আশ্রয় নিতে পারতাম। কিন্তু তখন মনে হয়েছিল শিল্পীর সম্মান যদি নালিশের পাটাতনে দাঁড় করিয়ে রক্ষা করতে হয়, তবে সেটাই আমার আত্মসম্মানকে ছোট করে দেয়। তাছাড়া কাজ হারানোর ভয় সত্যিই ছিল। কারণ তখন আমি আরও কয়েকটি ভালো কাজ করছিলাম, যেগুলো হারাতে চাইনি। মুখ খুললে কাজ হারানোর ট্রেন্ডটা এই ইন্ডাস্ট্রিতে বহু পুরনো।
কিন্তু সময়ের সঙ্গে বুঝলাম, আমার নীরবতা হয়তো আমাকে ভদ্রতা দিয়েছিল, সহনশীলতার পরিচয় দিয়েছিল, কিন্তু একই সঙ্গে অন্যায়কারীদের হাতে তুলে দিয়েছিল এক অদৃশ্য ছাড়পত্র। আমি ভেবেছিলাম চুপ থাকলেই ঝড় থেমে যাবে, মানুষের অহংকার কমে যাবে এবং ঔদ্ধত্য মুছে যাবে। অথচ চুপ থাকার আড়ালে ঝড় আরও প্রবল হয়েছে, আরও অনেক স্বপ্ন ভেঙে গিয়েছে। আজ কেন বলছি? কারণ আজ আমার বাংলা ইন্ডাস্ট্রিতে আর কাজ হারানোর ভয় নেই। আমি বর্তমানে বাংলা ইন্ডাস্ট্রিতে কোনো কাজ করছি না। আমার কাছে আজ কেবল একটা দায়বদ্ধতা। যারা নীরবে সহ্য করেছে, যাদের স্বপ্ন ভেঙে দেওয়া হয়েছে অথচ তারা মুখ খুলতে পারেনি, আমার কণ্ঠ আজ তাদেরও কণ্ঠ।
অনেকে আবার ভাবছেন, আমি হয়তো বিখ্যাত হওয়ার জন্য এসব বলছি। এখানে স্পষ্ট করে বলি, আমি এমন কোনো বিশাল ব্যক্তিত্ব নই যে আমাকে চিনতেই হবে। আর বিখ্যাত হওয়ার প্রতিযোগিতায় আমি কোনোদিনই ছিলাম না, থাকার ইচ্ছেও নেই। বর্তমানে বোম্বেতে যেটুকু যা কাজের সুযোগ পাচ্ছি এবং আমাদের দেশ ও রাজ্যের জন্য বিভিন্ন সংবাদমাধ্যমে কথা বলার যে সুযোগ পাই, সেই অল্পতেই আমি খুশি। এটাই আমার কাছে বড় প্রাপ্তি। আর যদি কেউ ভাবেন, আমি কারও নাম টেনে রাতারাতি আলোয় আসতে চাই, তবে বলব, প্রথমত আমি কারও নাম নিয়ে কিছু লিখিনি। তাই বোঝাই যাচ্ছে নাম নিয়ে বিখ্যাত হওয়ার কোনো ইচ্ছাই আমার নেই। দ্বিতীয়ত, আলো কখনো ধার করা যায় না। আলো আসে নিজস্ব দীপ্তি থেকে।