আজকাল নাকি বাংলা সিরিয়ালে শুধু পরকীয়া বা কূটকাচালি দেখানো হয়। আর এমনটাই দাবি করেন অধিকাংশ দর্শক। কিন্তু দিনের শেষে দেখা যায় সেই সমস্ত ধারাবাহিকেই মজে থাকেন তারাই। দর্শক এই ধরণের কনসেপ্ট দেখতে পছন্দ করছেন বলেই গল্পে পরকীয়া বা কূটকাচালি ভরে উঠেছে। অন্যদিকে কম সময়ের কোনঠাসা হয়ে পড়ছে পরকীয়া বা কূটকাচালি বিহীন ধারাবাহিকগুলি। যেমন ধরুন, স্টার জলসার ‘গোধূলি আলাপ’ অথবা জি-বাংলার ‘লালকুঠি’।
প্রসঙ্গত, যেকোনো ধারাবাহিক টিভির পর্দায় টিকে থাকবে কিনা সেটা নির্ধারণ করে একমাত্র টিআরপি। আপনি যতই সোশ্যাল মিডিয়ায় ধারাবাহিকের প্রশংসা করুন অথবা ফেসবুকে ধারাবাহিক দেখুন, তাতে কিন্তু কোনও লাভ হবে না। কারণ টিআরপি না থাকলে চ্যানেল বন্ধ করতে বাধ্য।
গোধূলি আলাপঃ
স্টার জলসার ‘গোধূলি আলাপ’ ধারাবাহিকটি অসমবয়সী প্রেমের গল্প ঘিরে। যেটা আমাদের সমাজে কিন্তু প্রায়ই চোখে পড়ে। ধারাবাহিকে স্বামীর অন্যায়ের প্রতিশোধ নিতে লড়াই করছে স্ত্রী। আবার কখনো স্ত্রী’র বিপদে পাশে এসে দাঁড়াচ্ছে তাঁর স্বামী। আবার বাড়ির শাশুড়ি আর বৌমার মধ্যে মিষ্টি সম্পর্ক দেখানো হচ্ছে। যেকোনো ধারাবাহিক এগোতে গেলে ভিলেন প্রয়োজন। সেক্ষেত্রে এই ধারাবাহিকে ভিলেন রয়েছে। তবে সর্বশেষে খেলায় হার হচ্ছে নেগেটিভ মানুষগুলোর। নেই কোনও পরকীয়া বরং রয়েছে সুন্দর গল্প। কোনও চরিত্রের মধ্যে মাত্রাতিরিক্ত ন্যাকামি নেই, তবুও আজও টিআরপি লিস্টে এক থেকে দশের মধ্যে জায়গা পেল না ‘গোধূলি আলাপ’। এরকম চলতে থাকলে নতুনের আগমনে যে-কোনও সময় হয়তো চ্যানেল বাধ্য হয়েই বন্ধ করে দেবে এত সুন্দর একটি ধারাবাহিক।
লালকুঠিঃ-
একে বারে অন্য স্বাদের গল্প নিয়ে টিভির পর্দায় হাজির হয়েছিল রাহুল-রুকমা অভিনীত ‘লালকুঠি’। এই ধারাবাহিকটি আর পাঁচটা কুটকাচালি অথবা পরকীয়ায় ভরা নয় বরং রহস্য রোমাঞ্চে ভরপুর এক গল্প। যেখানে প্রতিনিয়ত একের পর এক জোট খোলা হচ্ছে রহস্যের। কিন্তু কি লাভ? এত ভালো গল্প হওয়া সত্ত্বেও টিভির পর্দায় মার খেতে হচ্ছে এই ধারাবাহিকটিকে। কে বলতে পারে কোনও নতুনের আগমনে এই ধারাবাহিক খুব তাড়াতাড়ি শেষ করে দেওয়া হবে না?
তাহলে বিচার করলে দেখা যাচ্ছে, একমাত্র সাংসারিক কুটকাচালি-পরকীয়া মতোই গল্প দর্শক আপন করে নিচ্ছে। এই ছকের বাইরে গেলেই টিআরপি তালিকাতে নিজেকে ধরে রাখতে ব্যর্থ হচ্ছে ধারাবাহিকগুলি।