‘পথভোলা’ ছবিতে প্রথম অভিনয়। দেবশ্রী রায়ের বিপরীতে হিন্দি ধারাবাহিকে নায়কের ভূমিকাতেও অভিনয় করেছেন। বিনোদন দুনিয়ায় আরও এক অভিনেতার দুঃখের কাহিনী উঠে আসল। নাম অভিনেতা তুহিন বন্দ্যোপাধ্যায়। গত ১১ বছর ধরে তিনি কর্মহীন।
এদিকে ৬৫ বছর বয়সে শরীরে বাসা বেধেছে একাধিক রোগ। উচ্চ রক্তচাপ, হৃদরোগ, রক্তে চিনির মাত্রা এবং মস্তিষ্কে রক্তক্ষরণের মতো সমস্যা শারীরিকভাবে দুর্বল করে তুলেছে অভিনেতাকে। রক্ত চলাচল ব্যাহত হওয়ায় তাঁর দুই পায়ে গ্যাংগ্রিন দেখা দেয়। যার কারণে হাঁটু থেকে দুটো পা-ই বাদ চলে যাওয়ার আশঙ্কা তৈরি হয়েছিল। চিকিৎসকেরা সদ্য অস্ত্রোপচার করে বাঁচিয়েছেন তাঁর দুটো পা।
স্ত্রী ও এক ছেলে নিয়ে তুহিনবাবু এখন বর্ধমানের বাড়িতে। ছেলে ছোটখাটো ব্যবসা করেন তাতে কোনওমতে দিন কাটে তাঁদের। তবে এই সীমিত আয় দিয়ে কিভাবে চিকিৎসা করছেন তুহিনবাবু?
আনন্দবাজার ডট কমকে আক্ষেপ জানিয়ে তুহিনবাবু বলেন, “প্রত্যেক মাসে ওষুধের খরচ ২০ হাজার টাকা। আমার কোনও আয় নেই। গত দু’বছর ধরে তাই ওষুধ খেতে পারছি না। চিকিৎসকেরা বকাবকি করছেন। কিন্তু কী করব!”
“১৯৮৬-র কথা খুব মনে পড়ছে। ‘পথভোলা’তে আমরা পাঁচ বন্ধু প্রসেনজিৎ চট্টোপাধ্যায়, তাপস পাল, অভিষেক চট্টোপাধ্যায়, শক্তি ঠাকুর আর আমি। এঁদের মধ্যে তাপস, অভিষেক, শক্তিদা চিরবিদায় নিয়েছেন। বুম্বা ১০০ বছর বাঁচবে। এ বার হয়তো আমার পালা।”
“নিজেও জানি না, কেন আর কেউ ডাকেন না। আমার সময়ে বিনোদন দুনিয়ায় পরিচালকেরাই সব ছিলেন। তাঁরাই অভিনেতা বাছতেন। এখন সেই রীতি বদলে গিয়েছে। ইদানীং পরিচালকদের অন্যের কথা শুনে চলতে হয়।”
সম্প্রতি ভাস্বর চট্টোপাধ্যায় সমাজমাধ্যমে তুহিনবাবুর হয়ে সহযোগিতা প্রার্থনা করেছেন। কিন্তু তাতে কি কোন সাড়া পেয়েছেন প্রবীণ অভিনেতা? তুহিনবাবু জানান, “ভাস্বর চট্টোপাধ্যায় অনেক উপকার করেছেন। সাড়া পাচ্ছি অনেকের থেকে। তবে এখনও পর্যন্ত যা আর্থিক সহায়তা পেয়েছি তাতে আমার চিকিৎসার খরচ চলবে না।”
বিনোদন দুনিয়ার প্রতি তুহিনবাবুর আকুতি, “দৌড়ঝাঁপ করতে পারব না। বসে বা অল্প হাঁটাচলা করে তো অভিনয় করতেই পারব! আমায় দয়া করে কাজের দুনিয়া ফিরিয়ে দিন।”