বাংলা ইন্ডাস্ট্রিতে দুঁদে খলনায়ক হিসাবে এক সময় টলিপাড়ায় পরিচিত ছিলেন অভিনেতা সুরজিৎ সেন। বর্তমানে বেশ কয়েকবছর পর্দায় দেখা মেলেনা তার। কাজের অভাবেই অভিনয় ছেড়ে এই মুহুর্তে একটি মুদি দোকান চালান অভিনেতা।
সম্প্রতি অভিনেতার বিরুদ্ধে আঙুল তোলেন তাঁর স্ত্রী রীত মন্ডল। ২০২৩ সালের ১৫ ডিসেম্বর সুরজিৎ বিয়ে করেন রীত কে। অভিনেতার স্ত্রী পেশায় একজন মডেল ও ভ্লগার। রীতের বাড়ি মুম্বইয়ে, অন্যদিকে ব্যারাকপুরের বাসিন্দা সুরজিৎ।
২০১৬ সালে সোশ্যাল মিডিয়ায় আলাপের সূত্রপাত, সেখান থেকে প্রেম। ২০১৭ সালে তাদের বিয়ে ঠিক হলেও নানা মতবিরোধের কারনে ভেঙ্গে যায় বিয়ে। রীতের দাবি, সুরজিৎ তাঁর মাকে শুরু থেকেই সন্দেহ করতেন। এমনকি ভবিষ্যতে মেয়ের সংসারে মা হস্তক্ষেপ করবেন বলেই নাকি তিনি বিয়ে ভেঙে দেন।
তাদের সম্পর্কের ওঠাপড়া এখানেই শেষ হয়নি। রীতের দাবি, ‘আমাকে বলেছিল বিয়ের পর আমার পরিবারকে নিয়ে একসঙ্গে বড় ফ্ল্যাটে থাকবে, পরে নিজেই মত বদলায়। মুম্বাইতে যে জায়গায় থাকবে বলে সুরজিৎ ঠিক করে সেটা কাজের জায়গা থেকে অনেকটাই দূরে বলে আমি আপত্তি জানাই।’
‘আসলে সুরজিৎ চেয়েছিল যাতে আমি আমার পরিবার থেকে আলাদা হয়ে যাই। এমনকি আর্থিকভাবে বাবা-মাকে যাতে সাহায্য করতে না পারি। বিয়ে ঠিক হবার আগেই রীতের উপর শর্ত চাপাতে থাকে সুরজিৎ। আর সেই কারনেই প্রথম বিয়ে হওয়ার কথা ভেঙ্গে যায় আমাদের।’
পরবর্তীতে দূরত্ব কাটিয়ে আবার তাদের যোগাযোগ হয় ২০২১ সালে। ততদিনে আরও এক মহিলার সঙ্গে নাকি বিয়ের রেজিস্ট্রি করেছিলেন সুরজিৎ। নানা কারনে সেই বিয়েও টেকেনি।
২০২৩ সালে অবশেষে রীতের সঙ্গে বিয়ে হওয়ার পরেও সেই সম্পর্ক বেশিদিন টিকল না। রীতের অভিযোগ, বিয়ের কিছুদিন পর থেকেই সুরজিতের আচরণ একেবারে পাল্টে যায়। তাঁর শ্বশুরবাড়ির সদস্যরাও নাকি অস্বাভাবিক ব্যবহার করতেন। এমনকি রীতকে তার বাপের বাড়ির সাথে কোনও যোগাযোগ রাখতে দিতেন না অভিনেতা।
রীতের কথায়, ধীরে ধীরে মানসিক চাপে ভুগতে থাকেন তিনি। সুরজিৎ নাকি তাঁকে স্ত্রী হিসেবেও স্বীকার করতেন না। সম্পর্কের মধ্যে সন্দেহ, অবিশ্বাস আর অপমানের ঘটনাই ছিল নিয়মিত, স্ত্রীকে রেখে সুরজিৎ মা বাবার সঙ্গে এক ঘরে ঘুমাতেন।
একসময় পরিস্থিতি এতটাই খারাপ হয় যে রীত বাড়ি ছেড়ে বেরিয়ে আসেন। তিনি অভিযোগ করেছেন, বাড়ি থেকে বেরিয়ে যাওয়ার সময় সুরজিৎ তাঁকে ‘ভিখারী’ বলে অপমান করেন। রীতের কথায়, “যে স্ত্রীকে ভিখারী বলে, তার কাজের জন্য ভিক্ষা চাইতেই হবে!”
রীত আরও বলেন, বাইরে সুরজিৎ যেভাবে নিজেকে ভালো মানুষ হিসেবে দেখায় বাস্তবে ও একটা দানব, মানুষ নয়। পরবর্তীতে রীত সুরজিৎ এর বিরুদ্ধে থানায় অভিযোগ করেন। পরে সুরজিৎ নিজেই নাকি রীত ও তার পরিবারের সঙ্গে সমস্ত যোগাযোগ বন্ধ করে দেন। সোশ্যাল মিডিয়াতেও ব্লক করেন রীতকে।
স্বামীর বিপক্ষে কথা বললেও সবশেষে রীত জানান, সুরজিৎ যদি কখন ভবিষ্যতে বিপদেও পরে তবুও সে তার পাশে এসে দাড়াবে।

