জন্মের পরেই বাবা-মাকে হারিয়ে আর্থিক কষ্টে কেটেছে জীবন! সংসার চালাতে স্ত্রীর গয়না বন্দক রেখেছেন, অভিনেতা পরাণ বন্দ্যোপাধ্যায়ের জীবন কাহানী চোখে জল আনবে আপনারও

পরাণ বন্দ্যোপাধ্যায়

বাংলা সিনেমার আইকনিক অভিনেতা পরাণ বন্দ্যোপাধ্যায়। বয়স আশি পেরালেও আজও পর্দায় অভিনেতা এভারগ্রীন এই বয়সেও সমানতালে দর্শদের মনোরঞ্জন করে চলেছেন বর্ষীয়ান অভিনেতা। অভিনয় জীবনে তিনি যতটা সফলতা পেয়েছেন, ব্যাক্তিগত জীবন ঠিক ততটাই কষ্টে কেটেছে অভিনেতার। দরিদ্র পরিবার থেকে উঠে আসা পরাণের গল্পটা খানিক রূপকথার মতো।

জন্মের ৫ মাসের মাথাতেই মাতৃহারা হন এই অভিনেতা। তখন সেই ছোট্ট ছেলেকে বুকে আগলে মানুষ করেন অভিনেতার পিসিমা কমলা দেবী। অভিনেতার কাছে তার পিসিই ছিলেন তার মা। পিসতুতো দাদা জয়দেব বন্দ্যোপাধ্যায়কেই নিজের বাবা মনে করতেন। বাবার সঙ্গে সেই অর্থে টান না থাকায় নিজের বাবাকে কখনও বাবা বলে সম্বোধন করেননি অভিনেতা। ডাকতেন কাকা বলে।

মাঝেমধ্যে গ্রাম থেকে এসে পরাণের সঙ্গে দেখা করে যেতেন তার বাবা। বাবার সম্পর্কে এতটাই নিরুত্তাপ ছিলেন অভিনেতা যে বাবার মৃত্যু সংবাদ পেয়েও গ্রামে না গিয়ে কলকাতাতেই পারলৌকিক ক্রিয়া সম্পন্ন করেছিলেন তিনি।

ছোট থেকেই আর্থিক কষ্ট দেখে এসেছেন তিনি। তাই অল্প বয়স থেকেই রোজগারের টানে বেরিয়ে পড়েছিলেন। থিয়েটারে যখনই যা কাজ পেতেন সেটাই করতেন। সেইখান থেকে প্রাপ্ত টাকাই ছিল অভিনেতার সম্বল।

পরবর্তীতে নিজের ভালোবাসার মানুষকে বিয়ে করার পর পরিবার থেকে দূরত্ব বারে। স্ত্রী একটি জুনিয়ার স্কুলে চাকরি করে যেটুকু আয় করত তাদিয়ে টেনেটুনে সংসার চলত। মাঝে পরিস্থিতি এতটাই খারাপ হয়েছিল যে স্ত্রীর গয়নাও বেচে দিতে হয় অভিনেতাকে।

একটু বয়স কালে পরিচালক সন্দীপ রায়ের ছবিতে প্রথম অভিনয় ব্যপক সাফল্য এনে দেয় তাকে। তারপর থেকে আর পিছন ফিরে তাকাতে হয়নি তাকে। আজ একাধিক সিরিয়াল সিনেমায় সফলভাবে অভিনয় করেছেন পরাণ বন্দ্যোপাধ্যায়।