একসময় শিয়ালদহ স্টেশনে রাত কাটানো সেই মেয়েটি আজ এক জনপ্রিয় কোম্পানির মালিক, কঠোর পরিশ্রমে সফল ব্যবসায়ী অভিনেত্রী সুস্মিতা রায়

অভিনেত্রী সুস্মিতা রায়

একদিকে রুপোলি পর্দার অভিনেত্রী তিনি। অন্যদিকে একজন সফল ব্যবসায়ী। সুন্দরবনের গোসাবার মেয়ে সুস্মিতা রায়ের সাফল্যের পথটা অতটা মসৃণ ছিল না। একসময় যেই মেয়ে শিয়ালদহ স্টেশনে ত্রিপলের নিচে রাত কাটাতেন, আজ সেই দুটো কোম্পানির মালিক। শত শত ছেলেমেয়েদের কর্মসংস্থান গড়ে  দিয়েছেন তিনি।

একজন মেয়ে হয়ে প্রমাণ করে দেন, সফল ব্যবসায়ী হতে হলে মনের ইচ্ছে আর কঠোর পরিশ্রমটাই আসল। অতীতে ফিরে তাকালে অভিনেত্রীর জীবনে অনেক উত্থান-পতনের মধ্যে সাফল্যের সিঁড়ি খুঁজে পেয়েছন।

সুন্দরবন থেকে কলকাতা শহরে উঠে এসেছিলেন অভিনেত্রী হওয়ার স্বপ্ন নিয়ে। কলকাতা শহরে ছিল না কোনও গদদাফাদার, ছিল না মাথা গোঁজার আশ্রয়। সেই সময় সুস্মিতােকে বাড়ি থেকে টাকা পাঠানো বন্ধ করে দেওয়া হয়। কিন্তু এত সহজে হেরে যাওয়ার মেয়ে নয় সুস্মিতা।

একটা সময়, শিয়ালদহ স্টেশনে ত্রিপলের নিচে জায়গা খুঁজে নেন সুস্মিতা। পাশাপাশি অডিশন দেন। সোনারপুর থেকে সল্টলেক হেঁটে অডিশন দিতেন অভিনেত্রী। রাতে শিয়ালদহ স্টেশনে ফিরে ত্রিপলের নিচে বেঁচে থাকা মানুষগুলোর সঙ্গে থাকতেন। ওঁরা চাল-সব্জি-ডাল-নুন-মশলা-হলুদে ফোটানো খাবার খায়, সেটাই খেতেন। এইভাবেই তাঁর লড়াই শুরু হয়।

প্রথম যখন অডিশনে সুযোগ পেয়ে অভিনয়ে পা রাখেন তখন একটি ভাড়া বাড়িতে থাকতে শুরু করেন। তবে কলকাতার এই শহরে অভিনেত্রী মিস করতেন পুষ্টিকর খাবার। ছোট থেকে বিশুদ্ধ খাবার খেয়ে বড় হয়েছেন। স্বাভাবিক ভাবে এই শহরে এসে খাঁটি স্বাদ পাওয়া দুর্লভ। তিনি যখন আশা প্রায় ছেড়েই দিয়েছিলেন, তখন খোঁজ পান মিডোকার্ট- এর। গ্রাহক হিসেবে শুরু হয় তার যাত্রা। সেখান থেকে তিনি হয়ে ওঠেন মিডোকার্টের ব্র্যান্ড অ্যাম্বাসাডর এবং বর্তমানে  কো-ফাউন্ডার।

এই মুহূর্তে অভিনয়ের পাশাপাশি সমান তালে দুটো কোম্পানি চালাচ্ছেন অভিনেত্রী। এমনকি তাঁর প্রতিষ্ঠানে নামী-দামি তারকাদের স্পেশাল গেস্ট হিসাবে ডাকা হয়ে থাকে। সুন্দরবন থেকে উঠে আশা এই মেয়েটি আজ একজন প্রতিষ্ঠিত নারী।